দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে শূন্য হাতে বাড়ি ফিরলো ইংল্যান্ড
Published: 1st, March 2025 GMT
ম্যাচের ফলে কিছু যায়-আসে না ইংল্যান্ডের। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস ট্রফি তো বটেই, অধিনায়ক জশ বাটলারের জন্যও এটিই ছিল শেষ ম্যাচ। এমন ম্যাচে আরও একবার কি না বেহাল চিত্রই ফুটে উঠল ইংল্যান্ডের। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৭ উইকেটে হেরেছে তারা। ইংল্যান্ডের দেওয়া ১৮০ রানের লক্ষ্য ২৯.১ ওভারেই পেরিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
অসম্ভব এক সমীকরণ মেলাতে এই ম্যাচে চোখ ছিল আফগানিস্তানেরও। দক্ষিণ আফ্রিকা ২০৭ রানে হারলে সেমিফাইনালে যেত তারাই। কিন্তু আফগানদেন সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ড আগে ব্যাটিং করে ১৭৯ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পরই।
তাতে অবদান ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার সব বোলারেরই। ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন দুই পেসার মার্কো ইয়ানসেন ও উইয়ান মুল্ডার, তারাই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজ ২টি ও দুই ফাস্ট বোলার লুঙ্গি এনগিডি ও কাগিসো রাবাদা নেন ১টি করে উইকেট।
আরও পড়ুনআফগানিস্তান ছিটকে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিংয়ে নামার আগেই২ ঘণ্টা আগেনিজের প্রথম ৪ ওভারে ৩ উইকেট নিয়ে ইংলিশ ইনিংসে ধসের সূচনা করেন ইয়ানসেন। ৩৭ রানে ৩ উইকেট হারানো ইংল্যান্ডের রানটাকে ৯৯ রানে নিয়ে যান জো রুট ও হ্যারি ব্রুক। মহারাজ ১৯ রান করা ব্রুককে ফিরিয়ে জুটি ভাঙার পর আবার ধস শুরু ইংল্যান্ড ইনিংসে। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেন রুট।
একটু নির্ভার থেকেই রান তাড়ায় নামার কথা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। কিন্তু তাদের জন্যও ছিল একটু অস্বস্তি। অসুস্থতার কারণে নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা খেলেননি ম্যাচে। নেতৃত্বের ভার পাওয়া এইডেন মার্করামও চোট নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। শেষ পর্যন্ত মার্করাম ব্যাটিংয়ে না নামলেও জিততে তেমন অসুবিধা হয়নি প্রোটিয়াদের।
অবশ্য শুরুতে একটা ধাক্কা খেয়েছিল তারা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ৫ বলে শূন্য রান করে আউট হয়ে যান ওপেনার ক্রিস্টিয়ান স্টাবস। ২৫ বলে ২৭ রান করে ফেরেন আরেক ওপেনার রায়ান রিকেলটনও।
তবে রেসি ফন ডার ডুসেনের সঙ্গে মিলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন হাইনরিখ ক্লাসেন। জয় থেকে ৬ রান দূরে থাকতে ক্লাসেন আউট হন আদিল রশিদের বলে ক্যাচ দিয়ে। ৮৭ বলে ৭২ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন ডুসেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।