ডুয়েটে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পর সভাপতিসহ ১৫ নেতার পদত্যাগ
Published: 2nd, March 2025 GMT
গাজীপুরে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করে সভাপতি, সহসভাপতি, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ১৫ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগী নেতাদের অভিযোগ, নতুন কমিটিতে বিবাহিত, অছাত্র, ছাত্রলীগকে স্থান দেওয়া, অনুপ্রবেশকারী এবং শিবিরের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি অনুমোদন দেন।
এতে আশরাফুল হককে সভাপতি, রুকন আলীকে সিনিয়র সহসভাপতি, জামিরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক এবং আক্তার হোসেন সিকদারকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করে ২৮ সদস্যের কমিটি অনুমোদন ঘোষণা করা হয়। আগামী এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। কমিটি প্রকাশ হওয়ার পর রাতেই ওই কমিটির সভাপতি, কয়েকজন সহসভাপতি, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ১৫ জন নেতা পদত্যাগ করেন।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর পাঠানো পদত্যাগপত্রে তাঁরা উল্লেখ করেছেন, ডুয়েটের নবগঠিত কমিটিতে শিবিরের স্বার্থ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। শিবিরের অনুপ্রবেশকারীকে পদায়ন করায় ডুয়েট ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতি করা সম্ভব নয়। কমিটিতে শিবিরের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ দিলেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তা আমলে নেয়নি। তা ছাড়া গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠনের দাবি জানালেও তা মানা হয়নি। পদত্যাগ করা ছাত্রদল নেতারা অভিযোগ তদন্ত করার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।
নবগঠিত কমিটির সভাপতি আশরাফুল হক তিনিসহ ১৫ জনের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নবগঠিত কমিটিতে শিবিরের স্বার্থ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। শিবিরের অনুপ্রবেশকারীকে পদায়ন করায় ডুয়েট ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতি করা সম্ভব নয়। কমিটিতে শিবিরের সংশ্লিষষ্টতার প্রমাণ দিলেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তা আমলে নেয়নি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র ক পদত য গ ত কম ট র র জন কম ট ত
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’