ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি যুদ্ধের অবসান চান না বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। পাশাপাশি ইউরোপের সঙ্গে জেলেনস্কির সাম্প্রতিক ঘনিষ্ঠতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। খবর বিবিসির।
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার পর রোববার (২ মার্চ) এপিকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জেলেনস্কি। সেখানে তিনি বলেন, আপাতত নিকট ভবিষ্যতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
তিনি আরো বলেন, ‘যুদ্ধ থামানোর জন্য একটি যথাযথ চুক্তি এখনো অনেক অনেক দূরে। কোনো পক্ষই এখন পর্যন্ত এ ইস্যুতে পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করেনি। তবে যে চুক্তিই হোক না কেন, সেটিকে অবশ্যই ন্যায্য হতে হবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো— (সেটিকে) টেকসই হতে হবে। ’
আরো পড়ুন:
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার অভিযান স্থগিত
ইউক্রেনে সব ধরনের সামরিক সহায়তা স্থগিত করলেন ট্রাম্প
জেলেনস্কির এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, ‘জেলেনস্কি এ পর্যন্ত যত বিবৃতি দিয়েছেন, তার মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে জঘন্য এবং যুক্তরাষ্ট্র আর এসব সহ্য করবে না। ’
তিনি লেখেন, ‘যতদিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন থাকবে, ততদিন পর্যন্ত এই লোক ইউক্রেনে শান্তি চাইবে না। ’
ট্রুথ সোশ্যালের পোস্টে জেলেনস্কির সঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বৈঠককে কটাক্ষ করে ট্রাম্প বলেন, “জেলেনস্কির সঙ্গে তাদের বৈঠকে ইউরোপ স্পষ্টভাবে বলেছে যে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া কাজটি করতে পারবে না। রাশিয়ার বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে এটি দুর্দান্ত কোনো বিবৃতি নয়। তারা কী ভাবছে?”
এদিকে, ইউক্রেনে সব ধরনের মার্কিন সামরিক সহযোগিতা সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসন।
সোমবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, তিনি শান্তির ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন। আমাদের অংশীদারদেরও সেই লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া দরকার। আমরা আমাদের সাহায্য স্থগিত করছি এবং পর্যালোচনা করছি যাতে নিশ্চিত করা যায় যে, এটি একটি সমাধানে অবদান রাখছে।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।