রিজওয়ান-বাবর নেই টি-টোয়েন্টিতে, ওয়ানডে থেকে বাদ আফ্রিদি
Published: 5th, March 2025 GMT
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ব্যর্থতার পর পাকিস্তান ক্রিকেট দলে পরিবর্তন আসবে তা অনুমেয় ছিল। সামনে তাদের নিউ জিল্যান্ড সফর। এই সিরিজের জন্য অধিনায়কও পরিবর্তন করেছে পিসিবি।
অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানকে টি-টোয়েন্টি দলে রাখেনি তারা। বাদ পড়েছেন অন্যতম সেরা বাবর আজমও। এছাড়া, ওয়ানডে দলে জায়গা হারিয়েছেন পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদি।
নিউ জিল্যান্ড সফরে পাকিস্তান পাঁচ টি-টোয়েন্টি ও তিন ওয়ানডে খেলবে। দুই দলের জন্য আলাদা আলাদা দল দিয়েছে পিসিবি।
রিজওয়ানের জায়গায় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দেবেন সালমান আলী আগা। রিজওয়ান অধিনায়ক হওয়ার পর পাঁচ টি-টোয়েন্টিতে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। দল জিততে পারেনি একটিতেও। তার অনুপস্থিতিতে সালমানের অধিনায়কত্বে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন টি-টোয়েন্টির সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা। এবার তার ওপর নিউ জিল্যান্ড সিরিজে ভরসা রাখল পিসিবি।
টি-টোয়েন্টি দলে বেশ পরিবর্তন এনেছে। মোহাম্মদ হারিস ফিরেছেন। নেওয়া হয়েছে ২২ বছর বয়সী হাসান নাওয়াজকে। এছাড়া, প্রতিশ্রুতিশীল আব্দুল সামাদের ওপর আস্থা রেখেছেন নির্বাচকরা। ফেরানো হয়েছে খুশদিল শাহকে।
টি-টোয়েন্টির মতো ওয়ানডে দলে তেমন পরিবর্তন আসেনি। জায়গা ধরে রেখেছেন রিজওয়ান ও বাবর। দলে ফিরেছেন আবদুল্লাহ শাফিক। প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে ডাক পেয়েছেন পেসার আকিফ জাভেদ। বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে দারুণ করেছিলেন বাঁহাতি এই পেসার।
পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচ আকিব জাভেদ বাবর ও রিজওয়ানকে নিয়ে বলেছেন, ‘‘আমাদের নতুন ও তরুণ খেলোয়াড়দের আনা এবং আমরা যে ক্রিকেট খেলছি, তার ধরনে পরিবর্তন দরকার। অনেক দল তাদের টি-টোয়েন্টি দলগুলোকে অন্য সংস্করণ থেকে আলাদা করেছে, ৮০-৯০ শতাংশ পর্যন্ত আলাদা।”
তাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার পরামর্শ দিয়েছেন আকিব, ‘‘বাবর, শাহিন (আফ্রিদি), রিজের (রিজওয়ান) মতো শীর্ষ খেলোয়াড়রা এত বেশি সফর করে যে, তাদের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সময় থাকে না। এখন তাদের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সময় আছে। যতক্ষণ না চার দিনের ম্যাচ খেলবেন, ততক্ষণ টেস্ট বা ওয়ানডেতে উন্নতি করতে পারবেন না।’’
পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি দল: হাসান নাওয়াজ, ওমাইর ইউসুফ, মোহাম্মদ হারিস, আব্দুল সামাদ, সালমান আলী আগা (অধিনায়ক), ইরফান নিয়াজি, খুশদিল শাহ, শাদাব খান, আব্বাস আফ্রিদি, জাহানদাদ খান, মোহাম্মদ আলী, শাহীন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ, সুফিয়ান মুকিম, আবরার আহমেদ ও উসমান খান।
পাকিস্তানের ওয়ানডে দল: মোহাম্মদ রিজওয়ান (অধিনায়ক), সালমান আলী আগা, আবদুল্লাহ শাফিক, আবরার আহমেদ, আকিফ জাভেদ, বাবর আজম, ফাহিম আশরাফ, ইমাম-উল-হাক, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ আলি, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, ইরফান নিয়াজি, নাসিম শাহ, সুফিয়ান মুকিম ও তৈয়ব তাহির।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হ ম মদ র জওয় ন
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।