২ হাজার ৮৪১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ছাত্রীদের জন্য চারটি ও ছাত্রদের জন্য পাঁচটি হলসহ বিভিন্ন ভবন নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রায় ৩ হাজার ছাত্রী এবং ৫ হাজার ১০০ ছাত্রের আবাসনের ব্যবস্থা হবে।

এছাড়া চীন সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় ২৪৪ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী হল নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ছাত্রীদের জন্য একটি হল নির্মাণ করা হবে। সেখানে ১ হাজার ৫০০ ছাত্রীর আবাসনের ব্যবস্থা হবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মি.

ইয়াও ওয়েন ছাত্রী হল নির্মাণে সহযোগিতার ব্যাপারে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

একইসঙ্গে ১৫১ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনসমূহের সংস্কার, সংরক্ষণ ও সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আওতায় অতি পুরাতন জরাজীর্ণ ১৬৮টি ভবনের সংস্কার করা হবে।

আরো পড়ুন:

১০ রমজানের মধ্যে ঢাবিতে সশরীরে ক্লাস শেষ করার দাবি

নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে যা ভাবছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) পরিকল্পনা ও উন্নয়ন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে বৈঠককালে এসব প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন উপাচার্য। এ সময় উপদেষ্টা এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন।

এছাড়া উপাচার্য এসব প্রকল্পের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী ও পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সচিবের সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা করেন।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসন সংকট নিরসনসহ তিনটি মেগা প্রকল্প শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ