পুলিশের কাজ পুলিশকেই করতে দিতে হবে, আইন হাতে তুলে নেওয়া যাবে না: নাহিদ ইসলাম
Published: 6th, March 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, পুলিশকে পুলিশের কাজ করতে দিতে হবে। নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া যাবে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সমাজে এখন আমরা নানা রকম অস্থিরতা দেখতে পাচ্ছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও উন্নয়ন ঘটেনি আমাদের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী। পুলিশকে অবশ্যই সক্রিয় হতে হবে। পুলিশের কাজটা পুলিশকেই করতে দিতে হবে। আমরা নিজেরা কেউ আইন হাতে তুলে নেব না।’
আজ বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন রোডে নিম্নবিত্তদের জন্য মাসব্যাপী ‘গণমানুষের ইফতার’ আয়োজন শুরু করেছে এনসিপি। আজ আয়োজন শুরুর আগে নাহিদ সেখানে এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে আমাদের সুখ-দুঃখ সবকিছুই আমরা এই দেশের জনগণের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেব। আমরা একসঙ্গে রাজপথে ছিলাম। সামনে আমাদের ভবিষ্যৎও একসঙ্গেই হবে। আমরা একসঙ্গেই ভালো থাকব, না হলে একসঙ্গেই খারাপ থাকব। একসঙ্গে লড়াই করেই আমরা বাংলাদেশকে একটা জায়গায় নিয়ে যাব।’
সমাজে এখন নানা রকম অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে উল্লেখ করে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘শান্তি, সম্প্রীতি ও সহনশীলতার চর্চা আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ জায়গা থেকে করতে হবে এবং সবাই মিলেই আমরা এই সময়টা কাজে লাগাব, যাতে আমাদের দেশের সমৃদ্ধি হয়। রমজান মাসজুড়েই যাতে দ্রব্যমূল্য আরও নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং মানুষ স্বস্তিতে ঈদের বাজার করতে পারেন, নিরাপদে বাসায় ফিরতে পারেন, সড়কে নিরাপদ থাকেন—সেই বিষয়গুলো সরকার নিশ্চিত করবে, এটা আমাদের প্রত্যাশা।’
এ সময় এনসিপির কার্যক্রম প্রসঙ্গেও কথা বলেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সাংগঠনিক জায়গা থেকে তো আমরা এনসিপির মাত্র কার্যক্রম শুরু করেছি। রমজান মাসে আমাদের খুব বেশি বড় কোনো কর্মসূচি থাকবে না। আমরা মূলত আমাদের গঠনতন্ত্র, পরবর্তী পরিকল্পনা এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম গোছাব। হয়তো রমজান মাসের পরে আমাদের দেশব্যাপী কার্যক্রম শুরু হবে।’
নাহিদের আগে বক্তব্য দেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। তিনি প্রতিটি জেলায় দলের প্রতিনিধিদের ছাত্র-জনতা, খেটে খাওয়া মানুষ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ইফতার করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘নিজেদের সামর্থ্যের মধ্যে যেন আমরা ভাগাভাগি করে খাই। সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করতেই আজকের এই উদ্যোগ।’
বক্তব্য পর্ব সঞ্চালনা করেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব মশিউর রহমান। সেখানে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম এনস প র একসঙ গ আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) নবম ব্যাচের (নবনীতক ৯) শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সমাপনী-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের বিদায় বেলায় এক মঞ্চে আসীন হন দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান সাত উপাচার্য।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টায় একাডেমিক ভবন প্রাঙ্গণে আনন্দঘন পরিবেশে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর ছাড়াও অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী, খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুল আওয়াল, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন তারেক।
আরো পড়ুন:
নতুনবাজারের সেই রনির বুলেটের যন্ত্রণা আজো থামেনি
শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
এক মঞ্চে একইসঙ্গে এতজন উপাচার্যকে পেয়ে সমাপনী ব্যাচসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “এভাবে একসঙ্গে পুরো সেশনের শিক্ষা সমাপনী আয়োজনের আইডিয়াটি অত্যন্ত চমৎকার। এতে করে একটি ব্যাচের একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশ ঘটে। যেখানে সবার একসঙ্গে পরীক্ষা হয়, রেজাল্ট প্রকাশ হয় এবং কোনো সেশন জট থাকে না। আমি এই আইডিয়াটি আমার নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।”
খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান বলেন, “আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ এখানে এসেছি সংহতি জানানোর জন্য। আমি নবম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জীবনে সফলতা কামনা করছি।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীদের বিসিএস দেওয়া, বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করা বা ব্যবসা করার লক্ষ্য থাকে। তবে জীবনে কোনো না কোনো কিছু করতেই হবে। এক্ষেত্রে অবসর বলে কোনো শব্দ থাকা উচিত নয়।”
পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “আমি যখন দেশের বাইরে পড়াশোনা করতাম, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আমি কখনোই দেখিনি। আর বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে কখনো একসঙ্গে সাতজন উপাচার্যকেও বসতে দেখিনি, এটা অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর করে দেখিয়েছেন।”
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, “আমরা যদি আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করি, আমাদের চাকরি খোঁজার পাশাপাশি এমন কিছু করার মানসিকতা রাখতে হবে, যা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।”
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আতিয়ার রহমান বলেন, “শিক্ষা সমাপনী মানেই সব সম্পর্ক ছিন্ন করা নয়। বিশ্বে এমন অনেক নজির আছে, যেখানে অ্যালামনাই থেকে উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাই নিজেকে বিস্তৃত পরিসরে মেলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করার দায়িত্ব নিতে হবে।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “নিজেকে চেনাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা। আর শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনই বলে দেবে, তারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কতটা জ্ঞান অর্জন করেছে।”
প্রধান অতিথিরি বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর আগত উপাচার্যদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্যই আমাদের এই প্রয়াস। একইসঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি তুলে ধরাও আমাদের লক্ষ্য। আমরা জানিয়ে দিতে চাই, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায় এবং অচিরে দাঁড়াবেই।”
তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ইউজিসির দুইটি হিট প্রকল্প পেয়েছি এবং ভবিষ্যতে আরো পাব। আমরা আশা করছি, বি ক্যাটাগরি থেকে আগামী অর্থবছরের আগেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি এ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হবে।”
গোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসানের সভাপতিত্বে এতে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল আহসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক, সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি ও প্রাধ্যক্ষগণ, দপ্তর প্রধানগণ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়।
শিক্ষা সমাপনী উপলক্ষে বুধবার ছাত্রদের কালার ফেস্ট ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী