ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায়ীর থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করায় গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া অপুর সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব জাহিদ আহসান সমকালকে বলেছেন, প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

গোলাম কিবরিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান হলের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের ছাত্র।

শনিবার জাহিদ আহসান প্রেরিত বিজ্ঞপ্তিতে সদস্যপদ স্থগিত এবং এক কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাংগঠনিক আচরণবিধি ভঙ্গ ও নৈতিক স্খলনজনিত কারণে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া অপুর বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ এর সদস্য পদ স্থগিত করা হলো এবং তাকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না এজন্য এক কার্যদিবসের মধ্যে আহ্বায়ক বরাবর সদুত্তর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।  

জানতে চাইলে জাহিদ আহসান বলেন, ‘প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় সদস্যপদ স্থগিত করেছি। আমরা ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছি, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার সঙ্গে কথা বলেছি। ভিক্টিমের সঙ্গে কথা বলে এবং তার পাঠানো অডিও রেকর্ড বিশ্লেষণ করে মনে হয়েছে, ঘটনা সত্য হতে পারে। তবুও আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আমরা তাকে একদিন সময় দিয়েছি- কারণ দর্শানোর। এখন সদস্যপদ স্থগিত আছে, কারণ দর্শাতে না পারলে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে।’

এর আগে ঘটনাটি জানাজানি হয় গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের মাধ্যমে। তিনি শুক্রবার রাতে একটি ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, তার এলাকার এক ব্রডব্র্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রথমে পঞ্চাশ হাজার এবং আলোচনার ভিত্তিতে কমিয়ে ত্রিশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছেন গোলাম কিবরিয়া। পরে রাশেদ খানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ব্যবসায়ীর সঙ্গে গোলাম কিবরিয়ার হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের দুইটি রেকর্ড পাঠান।

একটিতে ব্যবসায়ীকে বলতে শোনা যায়, ‘বিগত সময়ে ব্যবসা করছি.

..অ্যামাউন্টের কথা বলতে বলছে’। তখন গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘তাহলে সবকিছু বাদ দেন, পঞ্চাশের কথা বলেন’। তখন ব্যবসায়ী বলেন, ‘এটা তো অনেক বেশি হয়ে যায়।’ কিবরিয়া জবাবে বলেন, ‘দেখেন আপনারা বিবেচনা করে দেখেন’।

আরেকটি ক্লিপে ব্যবসায়ীকে বলতে শোনা যায়, ‘এটা আসলে বেশি হয়ে যায়, ব্যবসা এরকম না, দেখেন কী করা যায়?’ তখন কিবরিয়া জানতে চান, ‘আপনার কাছে স্বাভাবিক মনে হয় কত?’, ব্যবসায়ী জবাবে বলেন, ‘আমারে তো অফিস থেকে বিশের কথা বলছিল।’ কিবরিয়া বলেন, ‘অর্ধেকও না, আচ্ছা আপনি ত্রিশের কথা বলেন যদি হয় তাহলে আজকে রাতে..’।  

এ বিষয়ে জানতে ভুক্তভোগীর যোগাযোগ নাম্বার চাইলে নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় রাশেদ খান নম্বর দেননি। এ ব্যাপারে তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গোলাম কিবরিয়া সমকালকে বলেন, ‘ঘটনাটা এমন না। আমি বিস্তারিত কিছুক্ষণের মধ্যেই জানাবো।’ এরপর আর তিনি কিছু জানাননি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ ল ম ক বর য় ব যবস য় সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ