সেই নারীর মাথা উদ্ধার, পালিয়েছে স্বামী
Published: 8th, March 2025 GMT
লালমনিরহাটে ভুট্টা ক্ষেত থেকে এক নারীর মাথাবিহীন লাশ উদ্ধারের পর খণ্ডিত মাথাও উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার আদিতমারী উপজেলার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর ইউনিয়নের কুটিবাড়ী কাউয়ার চরে একটি তামাক ক্ষেত থেকে খণ্ডিত মাথাটি উদ্ধার করা হয়। স্থানটি ভারতীয় সীমান্ত থেকে বাংলাদেশের প্রায় ১৫০ গজ ভেতরে।
নিহত হাসিনা বেগম উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের চর কুঠিরপাড় গ্রামের ভ্যানচালক আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার তার প্রথম স্ত্রী মেহেরুন নেছার তথ্যমতে হাসিনার খণ্ডিত মাথা উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার মেহেরুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এর আগে বুধবার সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ভাড়ালদা এলাকার একটি ভুট্টা ক্ষেতে হাসিনা বেগমের মাথাবিহীন লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়ে পুলিশ তা উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ক্ষেতের মালিক শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেন।
পুলিশ জানায়, শনিবার দুপুরে পুলিশের একটি বিশেষ দল দুর্গাপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রাম কুঠিবাড়ীর একটি তামাক ক্ষেত থেকে হাসিনার মাথা উদ্ধার করে। সেটি ক্ষেতে পোঁতা ছিল। বৃহস্পতিবার নারীর পরিচয় শনাক্ত হয়। এদিন আশরাফুলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে রক্তমাখা জ্যাকেট, শার্ট ও একটি বড় দা উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আশরাফুল ইসলামের দুই স্ত্রী। পার্শ্ববর্তী দীঘলটারী গ্রামের কাশেম আলীর মেয়ে হাসিনা বেগমকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলে আশরাফুল। এ সংসারে তাদের তিন কন্যাসন্তান রয়েছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নূরনবী বলেন, মেহেরুন নেছাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যমতে হাসিনা বেগমের মাথা উদ্ধার করে পুলিশ। আশরাফুলকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।