অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্যে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় আলফ্রেডের আঘাতে ৩ লাখ ১৬ হাজার বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গোল্ড কোস্ট শহর, সেখানে ১ লাখ ১২ হাজারেও বেশি গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। খবর রয়টার্সের

কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্রিসাফুলি বলেছেন, কুইন্সল্যান্ডের ইতিহাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ বিভ্রাট।

 

আরো পড়ুন:

সেমি ফাইনাল থেকে ছিটকে গেলেন শর্ট

অস্ট্রেলিয়ায় রোজা শুরু শনিবার

ঘূর্ণিঝড় আলফ্রেড কুইন্সল্যান্ড উপকূলে স্থানীয় সময় শনিবার (৮ মার্চ) আছড়ে পড়ে। অতিক্রান্তীয় এই ঘূর্ণিঝড় এখন গ্রীষ্মমন্ডলীয় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আলফ্রেডের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়া বইছে। সেই সঙ্গে গাছপালা উপড়ে পড়েছে, বিদ্যুতের লাইন ভেঙে গেছে ও ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যের রাজধানী ব্রিসবেন ঝড়ের আঘাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। তবে প্রতিবেশি রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলসেও প্রভাব পড়েছে।

রবিবার (৯ মার্চ) অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, “আকস্মিক বন্যা এবং ভারী বাতাসের কারণে কুইন্সল্যান্ড এবং উত্তর নিউ সাউথ ওয়েলসের পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর।”

অস্ট্রেলিয়ার ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের টেলিভিশনে সম্প্রচারিত মন্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, “আগামী দিনগুলোতে ভারী বৃষ্টিপাত, ঝড়ো বাতাস এবং উপকূলীয় ঢেউয়ের প্রভাব অব্যাহত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।”

দেশটির আবহাওয়া ব্যুরো জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ব্রিসবেনের পাশাপাশি কুইন্সল্যান্ডের আঞ্চলিক কেন্দ্র ইপসউইচ, সানশাইন কোস্ট এবং জিম্পিতেও বন্যা দেখা দিতে পারে।

আবহাওয়া ব্যুরোর সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, রাজ্যে প্রায় ৯০ কিলোমিটার (৬০ মাইল প্রতি ঘণ্টা) বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার উত্তর নিউ সাউথ ওয়েলসে বন্যার পানিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে লিসমোর শহরের বাসিন্দাদের সাহায্য করতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর দুটি গাড়ির সংঘর্ষে ঘটনায় বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঘ র ণ ঝড় আলফ র ড

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ