গৌরনদীতে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৯
Published: 10th, March 2025 GMT
বরিশালের গৌরনদীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৯জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (১০ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার মাহিলাড়া বাজারে সংঘর্ষটি হয়। গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আহতরা হলেন- যুবদল কর্মী ফারুক সরদার, রাসেল হাওলাদার, সুজন মুন্সী, রাসেল খন্দকার, হাসান, ছাত্রদল কর্মী কাইউম হাওলাদার, ছাত্রদল কর্মী হৃদয় সরদার, যুবদল কর্মী বেল্লাল হোসেন ও আরমান।
আরো পড়ুন:
জামালপুরে শিক্ষার্থী-আইনজীবী সংঘর্ষ, আহত ৮
সুনামগঞ্জে ২ পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ২৫
হামলায় আহত যুবদল নেতা রাসেল হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, “আজ সকালে আমাদের একটি বালুর ট্রাক মাহিলাড়া থেকে নলচিড়ার দিকে যাচ্ছিল। মাহিলাড়া লালপুল নামক এলাকায় ট্রাক থামিয়ে চাঁদা দাবি করা হয়। একই সঙ্গে ট্রাকের চাবি নিয়ে যান হৃদয় সরদার ও তার সহযোগীরা। খবর পেয়ে যুবদল কর্মী রাসেল খন্দকার ও সুজন মুন্সীকে নিয়ে সেখানে গেলে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়।”
তিনি আরো বলেন, “পরে অন্যান্য যুবদল-ছাত্রদল কর্মীদের নিয়ে মাহিলাড়া বাজারে যাই। এসময় যুবদল নেতা সবুজ সিকদার ও তার সহযোগীরা হামলা চালিয়ে আমাদের ছয়জনকে আহত করে। এরমধ্যে ফারুক ও আমি শের-ই-বাংলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।”
অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা যুবদল নেতা সবুজ সিকদার বলেন, “সকালে মাহিলাড়া-নলচিড়া সড়কে বালু বোঝাই ট্রাক প্রবেশ করছিল। ছাত্রদল কর্মী হৃদয় সরদারের মোটরসাইকেলের সঙ্গে ট্রাকটির ধাক্কা লাগে। এ ঘটনায় হৃদয় আহত হন। ভারী ট্রাক রাস্তায় কেন ঢোকানো হয়েছে জানতে চাইলে হৃদয়ের ওপর ক্ষিপ্ত হন ট্রাক ড্রাইভার। এনিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে যুবদল নেতা মনির, রাসেল, সুজন, মোয়াজ্জেম, কবির চোকদারসহ ১০-১৫ জন ঘটনাস্থলে এসে হৃদয়, যুবদল কর্মী বেল্লাল ও আরমানকে মারধর করে।”
তিনি আরো বলেন, “দ্বিতীয় দফায় মাহিলাড়া বাজারে হৃদয় সরদারের ভ্যারাইটিজ দোকান ও বিএনপি কর্মী মুজাহার সন্যামতের দোকানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।”
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো.
ঢাকা/পলাশ/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ব এনপ আহত য বদল ন ত স ঘর ষ গ রনদ
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।