বরগুনায় স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করার সপ্তাহখানেক পর এক বাবার (৩৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে বসতবাড়ির পেছনের ঝোপ থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্বজনরা বলছেন, মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে গত ৫ মার্চ মামলা করেছিলেন ওই ব্যক্তি। একমাত্র আসামি শ্রীজিৎ জেলহাজতে। 

গতকাল বুধবার মামলার শুনানির দিন ছিল। এর আগেই আসামির বন্ধু ও তাঁর স্বজনরা বাদীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে।

নিহত ব্যক্তি বরগুনা পৌর বাজারের একটি মুরগির দোকানে কাজ করতেন। পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ৪ মার্চ রাতে অপহরণ ও ধর্ষণের শিকার হন তাঁর সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে। পরদিন সকালে বরগুনা ডিসি পার্ক এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই শ্রীজিৎকে আসামি করে মামলা করেন ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা।

পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, তিনি মঙ্গলবার রাতে স্ত্রীকে মোবাইল ফোনে জানান, বিক্রির জন্য গাড়িতে আসা মুরগি দোকানে নামিয়ে তাঁর বাড়ি ফিরতে দেরি হবে। এর পর নির্ধারিত সময়ে না ফিরলে তাঁর ফোনে কল করেন স্ত্রী। এ সময় তিনি কল রিসিভ করেননি। এক পর্যায়ে রাত ১টার দিকে মোবাইল ফোনের আওয়াজ শুনে তাঁর স্ত্রী বাড়ির পেছনে যান। এ সময় ঝোপের ভেতর কাদামাখা অবস্থায় মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে তিনি স্বজনদের জানান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহতের বোন জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই নারী তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছিলেন। এ সময় মামলার আসামির লোকজন একজোট হয়েছে বলে জানান বাদী। তখন ভাইকে সাবধানে থাকতে বলেন বোন। এর পর রাতে মরদেহ পাওয়ার খবর আসে।
বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হালিম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি হত্যাকাণ্ড। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

স্বামীর সহায়তায় নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ

বান্দরবানের লামা উপজেলায় স্বামীর সহায়তায় এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবারের এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামীসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের মিরিঞ্জা পর্যটন এলাকার একটি রিসোর্টের এক নৈশপ্রহরী তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে যান। সেখান থেকে আরেক রিসোর্টে নিয়ে ওই নারীকে ভয় দেখিয়ে চার দিন রেখে চারজন মিলে ধর্ষণ করে। এতে সহায়তা করে ভুক্তভোগীর স্বামী। মঙ্গলবার দুপুরে ওই নারী রিসোর্ট থেকে পালিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেওয়ার পর স্বামীসহ পাঁচজনের নামে মামলা করেন। পরে অভিযান চালিয়ে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার একজনের নাম সাগর। লামা থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন জানান, মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

তরুণী ও শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ

সিলেটের হজরত শাহপরাণের (রহ.

) মাজার এলাকা থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলো– লেগুনাচালক আবদুর রহিম ও তার সহকারী মোহাম্মদ রাকিব মিয়া। গত মঙ্গলবারের এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বুধবার মহানগরের বিমানবন্দর থানায় মামলা করেছেন। মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি সৈয়দ আনিসুর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে বিশ্বনাথ উপজেলায় ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মোবাশ্বির আলী নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত সোমবারের এ ঘটনায় তাকে বুধবার গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সাতক্ষীরায় প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় শারীরিক ও বাকপ্রতিবন্ধী শিশুকে (১২) ধর্ষণের অভিযোগে ইব্রাহিম গাজী নামে এক যুবককে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। পুলিশ জানায়, গতকাল সকাল ১০টার দিকে বাড়িতে কেউ না থাকায় শিশুটিকে কৌশলে ডেকে ধর্ষণ করে ইব্রাহিম। ভুক্তভোগীর নানিসহ আশপাশের লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে ইব্রাহিমকে ধরে পুলিশে দেন। কলারোয়া থানার ওসি সামসুল আরেফিন জানান, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

পটুয়াখালীতে ঘরে ঢুকে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় মঙ্গলবার রাতে ঘরে ঢুকে দশম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে নুর আলম নামে এক কলেজছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কলাপাড়া থানার ওসি জুয়েল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা গতকাল কলাপাড়া থানায় মামলা করেছেন।

মানিকগঞ্জে কিশোর গ্রেপ্তার

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় বিয়ের অনুষ্ঠানে তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ৭ মার্চ বিকেলে তাকে চকলেট দেওয়ার কথা বলে ডেকে ধর্ষণ করে ওই কিশোর। পরে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ভুক্তভোগীর বাবা সদর থানায় মামলা করেন। থানার ওসি এস এম আমান উল্লাহ বলেন, মামলার পর রাতে টাঙ্গাইল এলাকা থেকে অভিযুক্ত কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। 
এদিকে পাবনার চাটমোহর উপজেলায় ছাত্রদল নেতাসহ দু’জনের বিরুদ্ধে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাতের এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রীর বাবা চাটমোহর থানায় মামলা করেছেন। আসামিরা হলো– উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রতন হোসেন এবং তার সহযোগী মামুন হোসেন। উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ফুলচাঁদ হোসেন বলেন, ঘটনার সঙ্গে রতনের সম্পৃক্ততা থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাটমোহর থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মো. অয়ন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গত মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে গ্রেপ্তারের পর সোনারগাঁ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে র‍্যাব-১১। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। 

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে আব্দুর রহমান নামে এক যুবককে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সুজন দাস নামে এক বৃদ্ধকে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় দশম শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলো– মিজান মিয়া ও অটোচালক নাজমুল। হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় মঙ্গলবার ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সুজিত দাশ নামে একজনকে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। 

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় ফুল সংগ্রহে যাওয়া শিশুকে ধর্ষণের ঘটনার ১৮ দিনেও ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। এদিকে মামলা তুলে নিতে ভুক্তভোগীর পরিবারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, আসামি রুহুল আমিন নামে এক ভূমি কর্মকর্তা (সার্ভেয়ার) প্রভাব খাটিয়ে নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। মিঠাপুকুর থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, আসামিকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ফিরোজ মিয়া নামে একজনকে পালাতে সহায়তা করায় এবং গ্রাম্য সালিশে প্রভাব বিস্তার করায় তার ছেলে সাব্বির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল পিরোজপুরে ধর্ষণবিরোধী মিছিলে ছাত্রীদের উত্ত্যক্তের অভিযোগে মো. ফরহাদ নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যুরো, অফিস, প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা)

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ছ বছর র শ শ ক র এ ঘটন য় র উপজ ল য় বরগ ন গতক ল মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

কালিয়াকৈরে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। রবিবার (১৫ জুন) সকালে উপজেলার সাহেববাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, গত ১৪ জুন কালিয়াকৈর উপজেলা, পৌরসভাসহ জেলার আটটি ইউনিটের কমিটি বাতিল করে গাজীপুর জেলা বিএনপি। তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। পরে শনিবার (১৪) সন্ধ্যায় কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভার কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদার, সদস্য সচিব করা হয়েছে এম আনোয়ার হোসেনকে। কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মামুদ সরকার ও সদস্য সচিব করা হয়েছে মহসিন উজ্জামানকে। 

উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ গ্রুপ কমিটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন । আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে শনিবার (১৪ জুন) রাতেই বিক্ষোভ মিছিল করে নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীর অনুসারীদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পারভেজ গ্রুপের কর্মীরা।

একই দাবিতে রবিবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী পারভেজ আহমেদের পক্ষ নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। এ সময়ে নতুন কমিটির পক্ষ থেকে আরেকটি মিছিল বের হলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়। 

পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে এখনো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, সকাল থেকে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া হলেও এখনো পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। 
 

ঢাকা/রেজাউল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ