দ্য হান্ড্রেডে দল পাননি বাংলাদেশের কেউ
Published: 13th, March 2025 GMT
ইংল্যান্ডের জনপ্রিয় ১০০ বলের ফরম্যাটের টুর্নামেন্ট ‘দ্য হান্ড্রেড’-এর আরেকটি মৌসুম শুরু হতে যাচ্ছে। তবে আগের মতো এবারও হতাশাই সঙ্গী হলো বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য। এবারের প্লেয়ার্স ড্রাফটে নাম নিবন্ধন করেছিলেন বাংলাদেশের ২৮ জন পুরুষ ক্রিকেটার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেউই কোনো দলে সুযোগ পাননি।
অতীত মৌসুমগুলোতেও একাধিক বাংলাদেশি ক্রিকেটার নাম নিবন্ধন করলেও কেউ দলে জায়গা করে নিতে পারেননি। এবার প্রত্যাশা ছিল, সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের আলোকে কিছু ক্রিকেটার দৃষ্টি কাড়বেন। কিন্তু ড্রাফটের পর ঘোষিত স্কোয়াডে কোনো বাংলাদেশি ক্রিকেটারের নাম দেখা যায়নি।
সবচেয়ে বেশি ভিত্তিমূল্য ১ লাখ ২০ হাজার পাউন্ডে ড্রাফটে ছিলেন সাকিব আল হাসান। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন ছিলেন ৬৩ হাজার পাউন্ড ভিত্তিমূল্যে। সম্প্রতি পিএসএলে লাহোর কালান্দার্সের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন রিশাদ।
৫২ হাজার পাউন্ড ভিত্তিমূল্যে ছিলেন লিটন দাস, তাওহিদ হৃদয় ও শেখ মেহেদী হাসান। অন্যদিকে ৪১ হাজার ৫০০ পাউন্ড ভিত্তিমূল্যে তালিকাভুক্ত ছিলেন তানজিদ হাসান তামিম, নাহিদ রানা, তানজিম হাসান সাকিব ও শরিফুল ইসলাম। উল্লেখযোগ্যভাবে, নাহিদ রানা তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে পিএসএলের পেশাওয়ার জালমির স্কোয়াডে জায়গা করে নিয়েছেন। এছাড়া আরও ২০ জন বাংলাদেশি ক্রিকেটার নির্দিষ্ট ভিত্তিমূল্য ছাড়াই ক্যাটাগরিতে নাম লিখিয়েছিলেন। কিন্তু তারাও থেকে গেছেন অবিক্রীত।
গতকাল অনুষ্ঠিত হয় ‘দ্য হান্ড্রেড’ এর প্লেয়ার্স ড্রাফট। ড্রাফটে সবচেয়ে চাহিদায় ছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার, মাইকেল ব্রেসওয়েল ও রাচিন রবীন্দ্র। এছাড়া কেইন উইলিয়ামসন, মিচেল স্যান্টনার, ডেভিড মিলার ও মার্কাস স্টয়নিসদের মতো তারকারাও জায়গা পেয়েছেন বিভিন্ন দলে।
বাংলাদেশের মতো পাকিস্তানের অবস্থাও হতাশাজনক। দেশটির ৪৫ জন ক্রিকেটার ড্রাফটে নাম লিখিয়েও দলে সুযোগ পাননি। তালিকায় ছিলেন নাসিম শাহ, শাদাব খান, ইমাদ ওয়াসিম, সাইম আইয়ুবরাও।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ক ব আল হ স ন
এছাড়াও পড়ুন:
খেলার নামে আদম পাচার ঠেকাতে তৎপর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ
বিদেশে খেলোয়াড় পাঠানোর নামে মানব পাচারের ঝুঁকি রোধ এবং যোগ্য খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া নিশ্চিত করতে নতুন নিয়ম চালু করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। ৯ অক্টোবর এনএসসি এক চিঠিতে ফেডারেশনগুলোকে জানিয়েছে, এখন থেকে বিদেশে ক্রীড়া দল পাঠানোর আগে ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে ফ্লাইটের কমপক্ষে ১০ দিন আগে জিওর (সরকারি আদেশ) জন্য প্রস্তাব পাঠাতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচিত খেলোয়াড়দের ফিটনেস ও পারফরম্যান্স–সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্রও এনএসসিকে দিতে হবে।
অভিযোগ আছে, কিছু ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন অনেক বছর ধরেই দলের সঙ্গে ভুয়া খেলোয়াড়-কর্মকর্তা পাঠিয়ে আদম পাচার করে আসছে। দুই একটা ঘটনা সামনে এলেও এসবের বেশির ভাগই থেকে যায় আড়ালে। ছোট খেলাগুলো থেকেই এ ধরনের অভিযোগ বেশি আসে। এনএসসির একটি সূত্র জানিয়েছে, মূলত এ ধরনের অপকর্ম ঠেকাতেই বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে ফ্লাইটের অন্তত ১০ দিন আগে জিওর প্রস্তাব পাঠানোর নিয়ম করা হয়েছে। এনএসসির পরিচালক (ক্রীড়া) আমিনুল এহসান সরাসরি তা না বললেও তাঁর কথায়ও সে আভাস আছে, ‘আমি বলব না শুধু আদম পাচার রোধ করতে এই নিয়ম করেছি। তবে কোথাও কোথাও এসব খেলার নামে মানব পাচারের প্রশ্ন চলে আসে।’
অনেক সময় শুনি, কোনো কোনো ফেডারেশন ভুয়া খেলোয়াড় নিয়ে যায়। এনএসসির উদ্যোগটাকে তাই ভালোই বলব। এটা জবাবদিহির মধ্যে পড়ে।ফারহাদ জেসমিন, সাবেক অ্যাথলেট ও বিএও অ্যাথলেটস কমিশনের চেয়ারম্যানএনএসসির কাছে ফেডারেশন বা অ্যাসোসিয়েশন এত দিন জিওর জন্য খেলোয়াড়দের নামই শুধু পাঠাত। যাঁর নাম দেওয়া হতো, তিনি আসলেই খেলোয়াড় কি না বা খেলোয়াড় হলে তাঁর যোগ্যতা কী বা যোগ্য কাউকে বাদ দিয়ে অযোগ্য কাউকে নেওয়া হচ্ছে কি না, এসব যাচাই–বাছাই করা হতো না। এনএসসি তাই জানত না কিসের ভিত্তিতে একজন খেলোয়াড়কে দলে নির্বাচিত করা হয়েছে। নতুন নিয়মে এনএসসিকে এসব দিতে হবে।
জিওর জন্য আবেদনকারীদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে সময় লাগে বলে ১০ দিন আগে তালিকা চাওয়ার যুক্তি আছে। কিন্তু পারফরম্যান্স আর ফিটনেসের তথ্যপ্রমাণও পাঠানোর নিয়মটা একটু অভিনবই, যা নিয়ে অবশ্যই নানা রকম প্রশ্ন তোলা যায়। তবে জিওর জন্য ফ্লাইটের ১০ দিন আগে নাম চাওয়ার নিয়মটাকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাথলেটস কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক অ্যাথলেট ফারহাদ জেসমিন লিটি বলেছেন, ‘অনেক সময় শুনি, কোনো কোনো ফেডারেশন ভুয়া খেলোয়াড় নিয়ে যায়। এনএসসির উদ্যোগটাকে তাই ভালোই বলব। এটা জবাবদিহির মধ্যে পড়ে।’
আরও পড়ুনবিশ্বকাপের আগে সৌদি লিগে খেলতে চেয়েছিলেন মেসি, সৌদি সরকারের ‘না’১১ ঘণ্টা আগেআদম পাচার যেহেতু সব ফেডারেশন করে না, ক্রিকেট-ফুটবলসহ অনেক ফেডারেশনের জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের তথ্য এনএসসিকে দেওয়াটা বিব্রতকর হতে পারে। কারণ, এই ফেডারেশনগুলো একটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দল গড়ে। তাদের সব তথ্য চাওয়া ফেডারেশনের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ কি না, এমন প্রশ্ন আসেই।ক্রীড়াঙ্গনে স্বজনপ্রীতি ঠেকাতেও এ নিয়ম ভূমিকা রাখবে বলে ফারহাদ জেসমিনের আশা, ‘অনেক ফেডারেশন অনেক সময় যোগ্যতার বিচার না করে নিজেদের পছন্দের খেলোয়াড় নিয়ে যায়। দেখে মনে হয়, বিদেশভ্রমণই মুখ্য, পারফরম্যান্স মুখ্য নয়।’ বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, ‘এটা ভালো উদ্যোগ। কারণ, এনএসসির জানার অধিকার আছে, বিদেশে টুর্নামেন্টে আমরা কাদের নিয়ে যাচ্ছি।’ সম্প্রতি হকি তারকা রাসেল মাহমুদকে বয়সের অজুহাতে বাদ দেয় হকি ফেডারেশন। এ নিয়ে সমালোচনা হলে এনএসসিকে বিষয়টি তদন্তও করতে হয়।
এনএসসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্রিকেট-ফুটবলসহ সব খেলাতেই বিদেশে দল পাঠানোর জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। কিন্তু আদম পাচার যেহেতু সব ফেডারেশন করে না, ক্রিকেট-ফুটবলসহ অনেক ফেডারেশনের জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের তথ্য এনএসসিকে দেওয়াটা বিব্রতকর হতে পারে। কারণ, এই ফেডারেশনগুলো একটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দল গড়ে। তাদের সব তথ্য চাওয়া ফেডারেশনের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ কি না, এমন প্রশ্ন আসেই।
আরও পড়ুনআগে চা পরে লাঞ্চ—বদলে যাচ্ছে ক্রিকেটের শতবর্ষ পুরোনো এক রীতি১৫ ঘণ্টা আগেএনএসসির পরিচালক আমিনুল এহসান অবশ্য তা মনে করেন না, ‘প্রায় প্রতিদিনই এনএসসির কাছে অনেক খেলোয়াড় অভিযোগ করেন, কোনো না কোনো কর্মকর্তার অপছন্দের কারণে নাকি তিনি দল থেকে বাদ পড়েছেন। এ কারণেই খেলোয়াড় নির্বাচনের তথ্যগুলো এনএসসির জানা থাকলে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়কে একটা উত্তর দেওয়া যায়। এটা ফেডারেশনের কাজে হস্তক্ষেপ নয়। স্বচ্ছতার স্বার্থে এনএসসি তা জানতে চাইতে পারে।’