মাঝে কিছুটা বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় দফায় আবারও অস্বাভাবিক হারে দর বাড়ছে তালিকাভুক্ত এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের। গতকাল বৃহস্পতিবারসহ সর্বশেষ চার দিনই দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ হারে বাড়ছে শেয়ারটির দর। এ সময়ে শেয়ারটির দর বেড়েছে ৪৯ শতাংশ। নতুন করে একই পথে হাঁটছে শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ার। গত চার দিনে এ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে ২২ শতাংশ হারে।

শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানা অনিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়িক গ্রুপ এস আলম এবং বেক্সিমকোভুক্ত কোম্পানিগুলো সংকটাবস্থার মধ্যে চলছে। এ অবস্থায় এদের কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি স্বাভাবিক ঘটনা নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, এ দুই কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির ঘটনা পরিকল্পিত। কারসাজি চক্রের সম্পৃক্ততা আছে এমন তথ্য তারা নানা সূত্রে পেয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারির প্রথম দফার রাতারাতি দর বৃদ্ধির সময় কোম্পানি দুটির উদ্যোক্তা-সংশ্লিষ্টরা বেনামে শেয়ার বিক্রি করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। 
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২ মার্চের মধ্যে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের শেয়ারদর ৯ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ২৫ টাকা ৪০ পয়সায় ওঠে। মাত্র তিন সপ্তাহে শেয়ারটির দর বাড়ে ১৬১ শতাংশ। প্রায় একই সময়ে শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ারদর ৬৪ শতাংশ বেড়ে ১৯ টাকা ছাড়ায়।
গতকাল ঢাকার শেয়ারবাজার ডিএসইতে মোট পাঁচ কোম্পানির শেয়ার দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছে। বাকি তিন কোম্পানি হলো– শ্যামপুর সুগার মিলস, জিল বাংলা সুগার মিলস এবং প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স।

এই পাঁচ কোম্পানির উল্লেখযোগ্য শেয়ারদর বৃদ্ধি ছিল সার্বিক বাজারচিত্র বিবেচনায় ব্যতিক্রম। সার্বিক হিসাবে তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে ১৫০টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৪৬টির। অপরিবর্তিত ছিল ৬০টির দর। বাকি চারটির কেনাবেচা হয়নি। 
খাতওয়ারি লেনদেন চিত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ব্যাংক ও বীমা খাতের বেশির ভাগ শেয়ারের দর বাড়লেও অধিকাংশ খাতের বেশির ভাগ শেয়ার দর হারিয়েছে। ব্যাংকিং খাতের তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির মধ্যে ১৫টির দর বেড়েছে, কমেছে আটটির। বীমা খাতের তালিকাভুক্ত ৫৮ কোম্পানির মধ্যে ৪৫টির দর বেড়েছে, কমেছে ১১টির।
সার্বিক হিসাবে মিশ্রধারার মধ্যেও প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯ পয়েন্ট বেড়ে ৫২২৫ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। এ নিয়ে টানা চার দিনে সূচকটি বেড়েছে ৫১ পয়েন্ট। গতকালের সূচকের এ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ব্যাংকিং খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধির প্রভাব ছিল সবচেয়ে বেশি।
গতকাল ডিএসইতে ৪১৪ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় ৩৮ কোটি টাকা কম। একক কোম্পানি হিসেবে ২৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার লেনদেন নিয়ে শীর্ষে ছিল লাভেলো। ১৩ কোটি করে লেনদেনে পরের অবস্থানে ওরিয়ন ইনফিউশনস ও শাইনপুকুর সিরামিকস।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র শ য় রদর ব দ ধ র শ য় রদর ব র দর ব ড় ছ দর ব দ ধ এস আলম গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজারে মূলধন কমেছে ১১ হাজার ১০ কোটি টাকা

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (২৬ থেকে ৩০ অক্টোবর) সূচকের পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এ সময়ে ডিএসই ও সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। তবে বিদায়ী সপ্তাহে উভয় পুঁজিবাজারে বাজার মূলধন বেশ কমেছে  ১১ হাজার ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা।

শনিবার (১ নভেম্বর) ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য মতে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭.৬৭ পয়েন্ট বা ০.৫৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১২২ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১০.৩৪ পয়েন্ট বা ০.৫২ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৮৭ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫.৯২ পয়েন্ট বা ০.৫৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ৮২ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক (এসএমই ইনডেক্স) ৩৩.৭২ পয়েন্ট বা ৩.৩৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯৭৬ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৪৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৫ হাজার ৩৪৩ কোটি ৩ লাখ কোটি টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ৭৯৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ২৮৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ১৩৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১৪৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৭টির, দর কমেছে ১৭৯টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির। তবে লেনদেন হয়নি ২১টির।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২৭.৩৩ পয়েন্ট বা ০.৮৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ২৮৬ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক ০.৫৯ শতাংশ কমে ১২ হাজার ৬৫১ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স সূচক ০.৭৭ শতাংশ কমে ৮ হাজার ৮১৩ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক ০.৯৮ শতাংশ কমে ৮৯৮ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স (এসএমই ইনডেক্স) ২.৮০ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৭০৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৩ হাজার ৯১৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ২১৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৯৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৬৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৩০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩০৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৫টির, দর কমেছে ১৭০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির শেয়ার ও ইউনিট দর।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম বাড়ার শীর্ষে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং
  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম কমার শীর্ষে প্রিমিয়ার লিজিং
  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে সিভিও ওরিয়ন ইনফিউশন
  • পুঁজিবাজারে মূলধন কমেছে ১১ হাজার ১০ কোটি টাকা
  • শেষ কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান, কমেছে লেনদেন