আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ঘিরে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।

রবিবার (১৬ মার্চ) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত প্রস্তুতিমূলক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন তি‌নি।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পুলিশ এখন শক্ত অবস্থানে রয়েছে জা‌নি‌য়ে সিনিয়র সচিব বলেন, “পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখী যাত্রীদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় রয়েছে এবং নিয়মিত টহল কার্যক্রম চলছে। শপিংমলগুলোতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

ধর্ষণের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র সচিব
কিশোর গ্যাংয়ের ছেলেরা দৌড়াচ্ছে, ভারী বুট পরা পুলিশ তার পিছনে দৌড়াতে পারে না

নাসিমুল গনি বলেন, “পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাতে কোনো শ্রম অসন্তোষের ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

তাছাড়া শ্রমিকদেরকে যাতে ঈদের আগে নির্ধারিত সময়ে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়, সেটি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ব‌লেও জানান তি‌নি।

২৬ মার্চ সামনে রেখে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে কি না, এ বিষয়ে সচিব বলেন, নিরাপত্তা ঝুঁকি তো দেখছি না আমি।

সিনিয়র সচিব বলেন, “স্বাধীনতা দিবসে এবারও কুচকাওয়াজ হচ্ছে না, উপদেষ্টা বলেছেন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আছি। আমরা আনন্দ করার মেজাজে নেই।”

ঈদের ছুটিতে চুরি-ডাকাতি রোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে-এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, “আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি থাকবে। আপনারা অল্প কিছুদিনের মধ্যে দেখেছেন পুলিশ শক্ত হয়েছে। কাজ চলছে, ইনশাআল্লাহ আমরা কোনো থ্রেট (হুমকি) দেখছি না। ঝুঁকি রয়েছে, তবে আমরা কোনো হুমকি দেখছি না।”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো.

খোদা বখস চৌধুরী, আইজিপি বাহারুল আলমসহ আইনশৃঙ্খলাবা‌হিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপ‌স্থিত ছি‌লেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট ঈদ স বর ষ ট র উপদ ষ ট ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

২২টি যুদ্ধের পর শত্রুমুক্ত হয় কুষ্টিয়া

আজ ১১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া মুক্তদিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রাম, ২২টি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আর অসংখ্য নীরব ত্যাগের মধ্যদিয়ে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের কুষ্টিয়া থেকে বিতাড়িত করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। কালেক্টরেট চত্বরে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা। 

মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্ন থেকেই কুষ্টিয়া ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধের এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের প্রথম দিকে এখানে ইপিআর, পুলিশ এবং সাধারণ মানুষ মিলে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

আরো পড়ুন:

টাঙ্গাইল শত্রুমুক্ত হয় ১১ ডিসেম্বর

৩৬ ঘণ্টার যুদ্ধে শত্রুমুক্ত হয় মাদারীপুর

কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, পেশাজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই প্রতিরোধে যোগ দেন, যা পরবর্তীতে সুসংগঠিত মুক্তিযোদ্ধা বাহিনীতে রূপ নেয়। মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাস জুড়ে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্থানে গেরিলা হামলা, সম্মুখযুদ্ধ ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয় চূড়ান্ত মুক্তির পথ।

ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, ১৬ এপ্রিল থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ২২টি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও সংঘর্ষ সংঘটিত হয়। মিরপুর, ভেড়ামারা, দৌলতপুর, খোকসা, কুমারখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুর সুসজ্জিত ঘাঁটির বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়াই চালান। পাকবাহিনীর ক্যাম্প, ব্রিজ, সড়ক ও রসদ সরবরাহ লাইনে ধারাবাহিক আক্রমণ চালিয়ে তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়া হয়। প্রতিটি যুদ্ধে বহু মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ শহীদ হন। পাকিস্তানি বাহিনীরও বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ঘটে। তারা কুষ্টিয়ায় অবস্থান টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়।

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া শহরের প্রবেশমুখ, গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনার আশপাশে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী পাক সেনাদের সঙ্গে চূড়ান্ত লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। ভোর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে গোলাগুলি, মর্টার শেল ও ভারী অস্ত্রের প্রচণ্ড গর্জনে পুরো শহর কেঁপে ওঠে। কৌশলগত স্থানে অবস্থান নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর প্রতিরক্ষা ভেঙে দেন। এক পর্যায়ে পাকিস্তানি বাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে পিছু হটতে ও আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। তাদের অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যায়। ১১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে কুষ্টিয়া শত্রুমুক্ত ঘোষণা করা হয় এবং দিনটিকেই ‘কুষ্টিয়া মুক্ত দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

১১ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত কুষ্টিয়া শহরের কালেক্টরেট চত্বরে তৎকালীন রাজনৈতিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় প্রাদেশিক পরিষদের জোনাল চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ চৌধুরীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত থেকে শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানান। এই পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়েই প্রতীকীভাবে স্বাধীন কুষ্টিয়ার জন্ম এবং মুক্তাঞ্চল হিসেবে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালুর সূচনা ঘটে। ।

প্রতি বছরের মতো এবারো কুষ্টিয়া মুক্তদিবস উপলক্ষে কালেক্টরেট চত্বরে কেন্দ্রীয় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাত, র‌্যালি পরবর্তী শহীদ স্মৃতিস্মম্ভ চত্বরে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দিবসটি উপলক্ষে পৃথক কর্মসূচি পালন করছে। শহীদ পরিবার ও জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের স্মৃতিচারণের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের সামনে যুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরছেন। 

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জবিতে ‘ই’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন, উপস্থিতি ৮১ শতাংশ
  • ‘আজ যে শিশু’ থেকে ‘ঘুম ভাঙা শহরে’: শহীদ মাহমুদ জঙ্গীর সাত দশকের গল্প
  • আজ শেষ হচ্ছে কম্পিউটার সিটির মেলা
  • ভেনেজুয়েলা ছাড়তে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করেছে: মাচাদো
  • ‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মরণ
  • মওলানা ভাসানী মজলুমদের পক্ষে ছিলেন, কখনো আপোষ করেননি: টুকু 
  • বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসে বিএনপির দুই দিনের কর্মসূচি
  • আজ মওলানা ভাসানীর ১৪৫তম জন্মবার্ষিকী
  • অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে যথাযথ প্রচারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
  • ২২টি যুদ্ধের পর শত্রুমুক্ত হয় কুষ্টিয়া