কুষ্টিয়ায় এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, আহত ১৫
Published: 17th, March 2025 GMT
কুষ্টিয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। রবিবার (১৬ মার্চ) রাত ৮টার দিকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে হামলা করা হয়। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে।
আহতরা হলেন, এনসিপির সুলতান মারুফ তালহা, মুজাহিদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম জহির, সদস্য সচিব রেদোয়ান আফ্রিদি, কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের আহ্বায়ক জুবায়ের, ইব্রাহীম, নয়ন হোসেন প্রমুখ। তারা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রাতে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে এনসিপি ও কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আহতদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির নেতাকর্মীরা বলেন, ‘‘রাত ৮টার দিকে আয়াস, আকাশ, রাসেলসহ তাদের লোকজন এ হামলা করেছে। এতে ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়েছে। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।’’ এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান, সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক সায়াদ ইসলাম শ্রেষ্ঠ, হুমাইরা কবির সাদিয়া, মুখ্য সংগঠক এম ডি বেলাল হোসেন বাঁধনসহ নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বরত চিকিৎসক হাফিজুর রহমান বলেন, আহতরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের চিকিৎসা সেবা চলছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান জানান, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন ত কর ম র রহম ন এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।