ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি তাণ্ডবে নিহতের সংখ্যা ৩৪০ ছাড়িয়েছে। নিহতদের অনেকেই নারী ও শিশু। ইসরায়েলের এই তাণ্ডব থেকে রক্ষা পায়নি নিজ বাড়িতে অবস্থান করা ফিলিস্তিনি অন্তঃসত্ত্বা নারীও। খবর আল জাজিরার।

গাজায় যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটিয়েছে ইসরায়েল এবং এরপর অবরুদ্ধ এই উপত্যকা জুড়ে বিমান হামলা শুরু করেছে। বর্বর এই হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৪২ জন ফিলিস্তিনির নিহত এবং অন্যান্য আরও অনেকের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসা সূত্র। এছাড়া এখন পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে গাজার উত্তরাঞ্চলেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৫৪ জন।

এদিকে গাজার অবরুদ্ধ এবং অরক্ষিত বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করছে হামাস। গোষ্ঠীটি বলছে, গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল করার জন্য ইসরায়েল অবরুদ্ধ ও অরক্ষিত বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ‘বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ’ আক্রমণ চালিয়েছে।

এছাড়া আরেক ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী প্যালেস্টানিয়ান ইসলামিক জিহাদও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ’ করার অভিযোগ করেছে। এই যুদ্ধবিরতি চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর ছিল।

আল জাজিরা বলছে, গাজার মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় এক গর্ভবতী নারী নিহত হয়েছেন। গাজা থেকে আল জাজিরার মারাম হুমাইদ বলেছেন, আজ ভোরে নিহত তিন শতাধিক ফিলিস্তিনির মধ্যে একজন গর্ভবতী নারী এবং তার শিশুও রয়েছেন।

এদিকে ইসরায়েলি এক সামরিক কর্মকর্তা গাজায় স্থল আক্রমণের হুমকি দিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করা ওই ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ইসরায়েলের আক্রমণ যতদিন প্রয়োজন ততদিন অব্যাহত থাকবে এবং বিমান হামলার বাইরেও বিস্তৃত হবে। যা গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাদের সম্ভাব্য স্থল অভিযানে প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।

এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলকে জবাবদিহি করার জন্য হামাস যুদ্ধবিরতি মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এবং আরব লীগ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থাকে (ওআইসি) গাজা উপত্যকায় আরোপিত অন্যায্য অবরোধ ভাঙতে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছে।

একইসঙ্গে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে জরুরি বৈঠক করে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস, যাতে ইসরায়েলকে তার আগ্রাসন বন্ধ করতে বাধ্য করা যায়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল অবর দ ধ ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ