টুঙ্গিপাড়ার সাবেক চেয়ারম্যানের বাড়িতে দুদকের অভিযান
Published: 18th, March 2025 GMT
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গাজী গোলাম মোস্তফার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য তিনি সরকারি ৩১ লাখ টাকায় নিজ বাড়িতে লবণাক্ত দূরীকরণ প্লান্ট, দুই লাখ টাকার স্ট্রিট লাইট ও লাখ টাকা ব্যয়ে ঘাটলা নির্মাণ করেছেন।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (ডিডি) মো.
ডিডি মো. মশিউর রহমান জানান, সোমবার (১৭ মার্চ) গিমাডাঙ্গার মধ্যপাড়ায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গাজী গোলাম মোস্তফা বাড়িতে অভিযান চালায় দুদকের একটি টিম। সেখানে সরকারি চারটি স্ট্রিট লাইট, পল্লী অঞ্চলে পানি সরবরাহ প্রকল্পের রিভার্স অসমোসিস (অরও) প্ল্যান্ট ও একটি ঘাটলার সন্ধান পান টিমের সদস্যরা।
আরো পড়ুন:
অবৈধ সম্পদ
সাবেক এমপি শাহীন চাকলাদার ও ফারহানার বিরুদ্ধে মামলা
স্বপন ভট্টাচার্য ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
তিনি আরো জানান, ২০১৭ সালের ২৯ নভেম্বর গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তৎকালিন নির্বাহী প্রকৌশলী পল্লী জনগণকে বঞ্চিত করে গাজী গোলাম মোস্তফার গিমাডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে ৩১ লাখ ১০ হাজার ৫১৯ টাকা ব্যয়ে রিভার্স অফমোসিস (আরও) প্লান্ট নির্মাণ করে দেন। এছাড়াও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ২ লাখ টাকা মূল্যের চারটি স্ট্রিট লাইট স্থাপন ও লক্ষাধিক টাকার একটি ঘাটলা ওই বাড়িতে করে দেয়।
দুদকের এই কর্মকর্তা জানান, সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত বাড়িতে ৩ প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে গাজী গোলাম মোস্তফা, নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা পিআইও অফিসের প্রকৌশলীরা জড়িত থাকার সত্যতা মিলেছে। জনগণের ক্ষতি সাধন করে ব্যক্তিগত বাড়িতে এগুলো স্থাপন করে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে। যা দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষটি দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত আকারে পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া
হবে।
তিনি আরো জানান, গিমাডাঙ্গার মধ্যপাড়ায় গাজী বাড়ি জামে মসজিদের বরাদ্দকৃত সরকারি ৫ লাখ টাকাসহ এসি, সোলার প্যানেল ও অন্যান্য সরাঞ্জামাদি আত্মসাতের অভিযোগ বিষয়েও দুদক এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে। এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনাকালে অভিযোগসমূহের সত্যতা পায়নি।
ঢাকা/বাদল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ উপজ ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।