স্ত্রী-সন্ত্রানসহ নাঈমুল ইসলাম খানের ১৬৩ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ
Published: 18th, March 2025 GMT
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টি এবং তাদের তিন সন্তান লাবিবা নাঈম খান, আদিভা নাঈম খান ও যূলিকা নাঈম খানের ১৬৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব ব্যাংক হিসাবে ৬ কোটি ২৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯৪৪ টাকা জমা রয়েছে।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.
আবেদনে বলা হয়েছে, নাঈমুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে অর্থ অর্জনপূর্বক ওই অর্থের উৎস আড়াল করার জন্য তার, তার স্ত্রী ও তার তিন মেয়ের নামীয় ১৬৩টি ব্যাংক হিসাবে ৩৮৬ কোটি টাকা জমা, ৩৭৯ কোটি টাকা উত্তোলন করাসহ অবৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে আনয়ন করে মানিলন্ডারিং করারসহ নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য টিম গঠন করা হয়। অনুসন্ধানকালে পাওয়া তথ্য ও রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নাঈমুল ইসলাম খান, তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টি, তাদের তিন সন্তান লাবিবা নাঈম খান, আদিভা নাঈম খান, যূলিকা নাঈম খান এবং তার নামীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ১৬টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সর্বমোট ১৬৩টি হিসাবে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য রয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বাক্তিগণ একাউন্টে রক্ষিত অর্থ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধান নিষ্পত্তির পূর্বে ব্যাংক হিসাব সমূহে রক্ষিত অর্থ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে অনুসন্ধানের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টি এবং তাদের তিন সন্তান লাবিবা নাঈম খান, আদিভা নাঈম খান, যূলিকা নাঈম খানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’
স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’
আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।