সাতক্ষীরায় শেখ মুজিবের ম্যুরাল গুঁড়িয়ে দিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা
Published: 19th, March 2025 GMT
সাতক্ষীরায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের অবশিষ্ট অংশ বুলডোজার দিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। বুধবার (১৯ মার্চ) ভোররাত আনুমানিক ৪টার দিকে এটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
২০২১ সালে সাতক্ষীরা শহরের খুলনা রোড মোড়স্থ সদর হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় জেলা পরিষদের উদ্যোগে শেখ মুজিবর রহমানের ম্যুরাল তৈরি করা হয়। পরে মোড়টির নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু স্কয়ার মোড়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মোড়টির নামকরণ করা হয় শহীদ আসিফ চত্বর। ওই দিন সন্ধ্যায় প্রথমবারের মতো শেখ মুজিবর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে ফেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
পরবর্তীতে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো ম্যুরালটি ভাংচুর করা হয়। সর্বশেষ আজ বুধবার (১৯ মার্চ) ভোর রাতে বুলডোজার দিয়ে ম্যুরালের শেষ চিহ্নটুকু ভেঙে ফেলা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাতক্ষীরার আহ্বায়ক আরাফাত হোসাইন, সদস্য সচিব সুহাইল মাহদীন, মুখ্য সংগঠক আল শাহরিয়ার, যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর তাসনিম রাহাত এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন। এ সময় ‘আওয়ামীলীগের আস্তানা, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ এ ধরনের নানা স্লোগানে শহরের খুলনা রোড মোড় মুখরিত করে তোলে ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরার আহ্বায়ক আরাফাত হোসাইন বলেন, ‘‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের শেষ চিহ্নটুকু আমরা সাতক্ষীরার মাটি থেকে মুছে ফেলতে চাই। যতদিন ছাত্র জনতার সৈনিকরা আছে, ততদিন বাংলাদেশের মাটিতে ফ্যাসিস্ট শক্তি আর ফিরে আসতে পারবে না।’’
ঢাকা/শাহীন/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।