দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় যশোর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রনজিত কুমার রায়, তার স্ত্রী নিয়তি রানী রায়, দুই ছেলে রাজীব কুমার রায় এবং সজিব কুমার রায়ের চারটি ফ্ল্যাট, দুটি বাড়ি, ৬০টি দোকানসহ ৭৯ দশমিক ৬২ বিঘা জমি জব্দ ও ১৩৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব হিসাবে ৩ কোটি ৭৯ লাখ ৬৩ হাজার ৯৭২ টাকা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। 

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

জব্দ হওয়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে, যশোর সদরে ১৩৫৬ বর্গফুটের ২টি ফ্ল্যাট ও নিউমার্কেটের পাশে ১২২৪ বর্গফুটের ২টি ফ্ল্যাট, চার ও তিন তলা ভবনের দুটি বাড়ি। যশোরের অভয়নগর উপজেলায় ৬ হাজার ৬ বর্গফুটের নির্মাণাধীন ৬০টি দোকানসহ ৭৯ দশমিক ৬২ বিঘা জমি। এসব জমির মধ্যে রনজিত কুমারের রয়েছে ৩১ দশমিক ৪৮ বিঘা, স্ত্রীর ১ দশমিক ৭৫ বিঘা ও তাদের সন্তানদের রয়েছে ৪৬ দশমিক ৩৯ বিঘা জমি। এসব মোট দলিল মূল্য ১৭ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার ১৫০ টাকা। 

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রণজিত কুমারের ২৫ হিসাবে আছে ৭১ লাখ ৪১ হাজার ৩৭৮ টাকা,  স্ত্রীর ২১ হিসাবে ৬৫ লাখ ৮৫ হাজার ৮৬ টাকা, তাদের সন্তান রাজীব কুমারের ৪৪ হিসাবের ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৬০২ টাকা, রাজীবের নিয়তি প্রোপাইটরের ৬ হিসাবে আছে ৯০ হাজার ৩০৫ টাকা, নিয়তি ট্রেডে আছে ১৪ হাজার ৩০১ টাকা, রাজীবের স্ত্রী রিশিতা সাহার ২০টি হিসাবে আছে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৯৮৪ টাকা, রণজিতের ছেলে সজীব কুমারের ১২ হিসাবে আছে ৫ লাখ ৬০ হাজার ৬৪ টাকা, সজীবের স্ত্রী অনিন্দিতা মালাকার পিউর অ্যাকাউন্টে আছে ২৭ লাখ ৫৭ হাজার ২৫২ টাকা। 

দুদকের পক্ষে সংস্থার সহকারী পরিচালক মো.

সাজিদ-উর-রোমান এসব স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন। 

আবেদনে বলা হয়, রনজিত কুমার রায়, মিসেস নিয়তি রায়, তাদের সন্তান রাজীব কুমার রায় ও সজিব কুমার রায়ের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে সম্পৃক্ত ধারায় অপরাধ করাসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ  করার প্রয়োজন। তাদের স্থাবর সম্পদসমূহ ক্রোক করা না হলে বিচারকালে তা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না। এতে রাষ্ট্রের অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর দ ধ রনজ ত দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ