তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী কামেল মাদৌরিকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ।

শুক্রবার (২১ মার্চ) বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাতে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশটির ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক স্থবিরতার প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত বছর আগস্ট মাসে মন্ত্রিসভার বড় ধরনের রদবদল করার সময় নিযুক্ত টেকনোক্র্যাট মাদৌরির স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আগের গণপূর্তমন্ত্রী সারা জাফরানি জেনজরি।

আরো পড়ুন:

সরকারের প্রথম ইনিংস শেষ, শুরু হলো দ্বিতীয় অধ্যায়: প্রধান উপদেষ্টা

৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, শনিবার শেষকৃত্য মনমোহনের

দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজলা বাউদেনের পর ৬২ বছর বয়সী জাফরানি তিউনিসিয়ার দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।

উচ্চ বেকারত্ব, ধীর প্রবৃদ্ধির কারণে ঋণগ্রস্ত তিউনিসিয়া গুরুতর অর্থনৈতিক ও আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত। এমন অবস্থায় প্রেসিডেন্ট সাঈদ সাম্প্রতিক সময়ে তার দেশের মন্ত্রীদের কর্মক্ষমতা নিয়ে গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট ২০২৪ সালের আগস্টে মাদৌরিকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন। সেই সময় তিনি আরো ১৯ জন মন্ত্রীকে রদবদল করেন। ‘রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ স্বার্থ’ এবং ‘জাতীয় নিরাপত্তার’ প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে তিনি অর্থমন্ত্রী সিহেম বোঘদিরি নেমসিয়াকে বরখাস্ত করেন। ম্যাজিস্ট্রেট মিচেট স্লামা খালদি তার স্থলাভিষিক্ত হন।

সাইদ ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি ২০২১ সালে এক বিশাল ক্ষমতা দখলের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। যার কারণে তার সমালোচকরা বলেছেন-তিনি গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা এবং অধিকার হরণ করেছিলেন।

তবে সাইদের সমর্থকরা বলেছেন, তিনি কয়েক দশক ধরে দুর্নীতিতে জর্জরিত দেশটির অদক্ষতার বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি পালন করেছেন।

২০২৪ সালের অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট সাইদ ৯০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়ে পুনঃনির্বাচিত হন।

ঢাকা/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন

যশোরের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুতের (রস সংগ্রহের উপযোগী করা) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে চৌগাছা উপজেলার হায়াতপুর গ্রামে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনুর আক্তার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, রস-গুড় সংগ্রহের জন্য গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি খেজুরগাছ প্রস্তুত করা হবে। এ বছর জেলায় অন্তত তিন লাখের বেশি গাছ প্রস্তুত করা হবে। যশোরে খেজুরের রস ও গুড়ের ১০০ কোটির বেশি টাকার বাজার রয়েছে। অন্তত ছয় হাজার কৃষক এই পেশায় যুক্ত।

যশোরের খেজুর গুড় জিআই পণ্য হলো যেভাবে

২০২২ সালে চৌগাছার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (বর্তমানে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট) ইরুফা সুলতানা খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য সংরক্ষণে খেজুর গুড়ের মেলা, গাছিদের প্রশিক্ষণ, গাছি সমাবেশ, গাছিদের সমবায় সমিতি গঠন, খেজুরগাছ রোপণ ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। একই বছর জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য যশোরের খেজুর গুড়ের আবেদন করেন তিনি। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সেটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পায়।

শতকোটি টাকার বাজার ধরতে ব্যস্ত গাছিরা

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোরের প্রায় ছয় হাজার গাছি খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে খেজুরগাছ প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। খেজুরগাছ সংরক্ষণ, রোপণ, গাছিদের প্রশিক্ষণ, প্রণোদনাসহ নানাভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে গুড় উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যশোর জেলায় খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫টি। এর মধ্যে রস আহরণের উপযোগী গাছের সংখ্যা ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি। গাছ থেকে ৩ কোটি ৭১ লাখ ৩ হাজার লিটার রস ও ২ হাজার ৭৪২ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারদর অনুযায়ী প্রতি লিটার রসের দাম ৩৫ টাকা ও গুড়ের কেজি ৩৪০ টাকা। সেই হিসাবে রস ও গুড়ের বাজার দর ৯৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রামের গাছি আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার দাদা খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দাদার সঙ্গে বাবাও যুক্ত ছিলেন। বাবার পেশায় আমিও যুক্ত হয়েছি। বাবা আর আমি এবার ৩০০টি খেজুরগাছ থেকে রস-গুড় তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। গতবছর ভালো দাম পেয়েছি। এবারও ভালো দাম পাব বলে আশা করি।’

গাছিরা জানান, কার্তিক মাস শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই খেজুরগাছ ছেঁটে রস ও গুড় তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেন তাঁরা। শীত মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষকদের অন্যতম আয়ের উৎস এটি। এখানকার কারিগরদের দানা পাটালি তৈরির সুনাম রয়েছে। পাটালি ও ঝোলা গুড় তৈরি ছাড়াও চাষিরা শীতের ভোরে ফেরি করে কাঁচা রস বিক্রি করেন। কাঁচা রস প্রতি মাটির ভাঁড় ১৫০-২০০ টাকা, দানা গুড় ৩৫০-৪০০ টাকা আর পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়।

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কেনারহাটের উদ্যোক্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর আমাদের কাছে ভোক্তার চাহিদা ছিল সাড়ে ছয় হাজার কেজি পাটালি গুড়। সরবরাহ করতে পেরেছিলাম দুই হাজার কেজি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিবৃষ্টি, শীত কম হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী পাটালি গুড় সরবরাহ করতে পারিনি। এ বছর ইতিমধ্যে অর্ডার আসতে শুরু করেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লরা উলভার্ট: হিমালয়ের চূড়ায় এক নিঃসঙ্গ শেরপা
  • বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নের মৃত্যু
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন