তাঁদের জীবন থেকে ঈদের আনন্দ হারিয়ে গেছে
Published: 23rd, March 2025 GMT
আড়াই মাসের বাচ্চা ছিল ২০ বছর বয়সী সুমাইয়া আক্তারের। গণ–অভ্যুত্থানের সময় ২০ জুলাই রাজধানীর চিটাগং রোডে শহীদ হন সুমাইয়া। এরপর থেকে আড়াই মাসের শিশুটির আর খোঁজ রাখছেন না সুমাইয়ার স্বামী। মা হারা সেই শিশুটি এখন তার নানির কাছে বড় হচ্ছে।
আজ রোববার সুমাইয়া আক্তারের মা আসমা বেগম বলেন, ‘বাচ্চারা কত যত্নে বড় হয়। আমার আড়াই মাসের নাতিটা মায়ের বুকের দুধও পেল না। আমার জীবনে রোজা, ইফতার ও ঈদ কোনোটাই নেই। আমি চাই, সরকার আমার নাতিটার দায়িত্ব নিক।’
সুমাইয়া আক্তারের শিশুসন্তানের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, ‘আড়াই মাসের বাচ্চাকে রেখে মা শহীদ হয়েছেন। আমি শুধু ভাবছি, এই বাচ্চাটা বড় হলে কী করবে, কী বলবে? মায়ের কথা শুনে সে কীভাবে থাকবে?’
সুমাইয়া আক্তারের পরিবারের মতো একই অবস্থা শহীদ মেহেরুন নেছা তানহার পরিবারের। ১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর মিরপুর মাজার রোড এলাকায় আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তানহার মামাতো ভাই রাব্বী। এই ঘটনার পর থেকে তানহা নিয়মিত তাঁর ভাই তারিফকে নিয়ে আন্দোলনে যোগ দেন।
৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হলে আনন্দমিছিলেও যোগ দিয়েছিলেন মেহেরুন নেছা তানহা। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বাসায় ফেরেন। তখনো মিরপুর–১৩ নম্বরের দিকে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র–জনতার সংঘর্ষ চলছিল। এ জন্য ভাইকে দ্রুত বাসায় ফিরতে মুঠোফোনে কল করেন। এর মধ্যে জানালার সামনে দাঁড়াতেই তাঁর শরীরে একটি গুলি লাগে। মুহূর্তেই মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন মেহেরুন নেছা তানহা।
তানহার মা আছমা আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়ে ইফতার পছন্দ করত। এ জন্য বেশি করে ইফতারি বানাতাম। ঈদের আগের দিন রাতেই সেমাই রান্না করে রাখত। মেয়ে পোলাও, রোস্ট পছন্দ করত। ঈদে তার পছন্দের খাবার রান্না করে রাখতাম। এখন আর এসবের কিছুই নেই। মেয়ে ছাড়া আমার ঘর অন্ধকার।’
আছমা আক্তার বলেন, ‘আমার রাজপুত্রের মতো ভাইয়ের ছেলেটাকে পুলিশ পেটে গুলি করে মেরে ফেলে। লাশটিও আমাদের দেওয়া হয়নি। তিন দিন পর লাশ পচে গেলে তখন আমাদের কাছে দেওয়া হয়। যে পরিবারের দুই সন্তান মারা যায়, সেখানে রোজা আর ঈদ বলে কিছু থাকে না।’
আজ রোববার জুলাই অভ্যুত্থানের নারী শহীদদের পরিবারের সদস্যের নিয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল দ্য ডেইলি স্টার। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
‘কেমন আছে গণ–অভ্যুত্থানে নারী শহীদ পরিবার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা তাঁদের জীবনের দুঃসহ স্মৃতি ও অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তাঁরা স্বজন হত্যার বিচার দাবি করেন। আওয়ামী লীগের ফিরে আসার পথ বন্ধ করা এবং নতুন করে কেউ যেন আর ফ্যাসিস্ট বা স্বৈরাচার না হয়ে ওঠে, সেই দাবিও ছিল তাঁদের বক্তব্যে।
অভ্যুত্থানে শহীদ দশম শ্রেণির ছাত্রী নাঈমা সুলতানার মা আইনুন নাহার বলেন, ‘আমি এই হত্যার বিচার চাই। মেয়ে শহীদ হওয়ার পর আমাদের সংসারটা এলোমেলো হয়ে গেছে। আমরা ভালো নেই। আমাদের ঈদ বলে কিছু নেই।’
অনুষ্ঠানে কথা বলেন শান্তিনগরের একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করা মোসাম্মৎ লিজার বাবা মো.
যাত্রাবাড়ীতে মাছের আড়তে কাজ করে পাঁচ ছেলেমেয়েকে বড় করেছেন শহীদ শাহীনুর বেগম। তাঁর মেয়ে মোছাম্মৎ হাফেজা বলেন, ‘মা ছাড়া আমাদের কেউ নাই। মাছ বিক্রি করে মা সংসার চালাত। কাজলা দিয়ে আসার সময় আমার মায়ের শরীরে গুলি লাগে। মাকে যখন স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়, তখন তারা তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলে। ঢাকা মেডিকেলে নিলেও আমার মা ঠিকমতো চিকিৎসা পায় নাই। তাকে আইসিইউ দেওয়া হয়নি। পরে আমার মা মারা যায়।’
মোছাম্মৎ হাফেজা বলেন, ‘চিকিৎসকের কাছে চিৎকার করে বলেছি, আমাদের পাঁচ ভাইবোনকে মা হারা কইরেন না। কিন্তু আমরা ঠিকভাবে চিকিৎসা পাই নাই। মা মারা যাওয়ার পর আমরা ঢাকা ছেড়ে কুমিল্লা চলে গেছি। যার মা নাই, তার কেউ নাই।’
শহীদ রিতা আক্তারের মা রেহানা বিবি যখন কথা বলছিলেন, তখন তার গলা আটকে আসছিল। তিনি বলেন, ‘আমি যখন কাজে গিয়েছি, তখন লুকিয়ে মেয়ে আন্দোলনে গেছে। আমার মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে মেরেছে। আমার মেয়ে দেশের জন্য জীবন দিয়েছে।’
শহীদ নাফিসা হোসেন মারওয়ার বাবা চা-দোকানি আবুল হোসেনও এসেছিলেন অনুষ্ঠানে। জীবিকার তাগিদে তাঁর স্ত্রী প্রবাসে পাড়ি জমিয়েছেন। তিনি মেয়েকে নিয়ে টঙ্গীতে থাকতেন। আবুল হোসেন বলেন, ‘মেয়ে ১৮ জুলাই থেকে আন্দোলনে গেছে। তবে আমি তা জানতাম না। নানাবাড়ি যাওয়ার কথা বলে লুকিয়ে লুকিয়ে আন্দোলনে গিয়েছিল। নাফিসার শেষ কথা ছিল, বাবা আমি মারা যাব, লাশটা তুমি নিয়ে যেয়ো।’
আবুল হোসেন অভিযোগ করেন, শুরুতে পুলিশ তার মেয়ে হত্যার মামলা নিতে চায়নি। পরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার নাম বাদ দেওয়ার পর মামলা নেয়। যাদের নামে মামলা হয়েছে, তারা এখন হুমকি দেয়। তাঁর একটাই চাওয়া, এই খুনিদের যেন বিচার হয়।
শহীদ নাসিমা আক্তারের ভাই মো. সোলাইমান বলেন, ধানমন্ডির বাসার ছাদে হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে শহীদ হন নাসিমা। তাঁর দুই ছেলেকে নিয়ে বোন ছাদে গিয়েছিলেন। বড় ছেলেকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে সেটি ছেলের বুক ভেদ করে বোনের শরীরে লাগে। হাসাপাতালে নিলে শহীদ হন নাসিমা। তিনি বলেন, একটি ছেলের সঙ্গে তাঁর বোনের সম্পর্ক ছিল। কিছুদিনের মধ্যেই বিয়ে হওয়ার কথা। তার আগেই বোন শহীদ হলো।
শহীদ মায়া ইসলামের স্বামী মাহবুব ইসলাম বলেন, নাতি আইসক্রিম খেতে চেয়েছিল। নাতিকে নিয়ে বের হলে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়। মায়া ইসলাম মারা যান। আর নাতি এখন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন। ছেলেও নাতির কাছে। তিনি এখন একা।
অনুষ্ঠানে প্রতিটি শহীদ পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সম্মাননা ও তাঁদের স্বজনদের একটি করে দেয়ালে টাঙানো স্কেচ (প্রতিকৃতি) ফ্রেম উপহার দেওয়া হয়। শহীদদের প্রতিকৃতি ও ঈদ উপহার স্বজনদের হাতে তুলে দেন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ও দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম।
শহীদদের প্রসঙ্গে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদা আখতার বলেন, গত ঈদে এরা সবাই ফুটন্ত জ্বলজ্বলে মানুষ ছিল, অথচ এবারের ঈদে কী পরিস্থিতি তৈরি হলো। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো মূল্য থাকবে না, যদি এই ব্যক্তিদের কোনো মূল্য না থাকে। আর যদি আহত ও শহীদ পরিবারকে যথাযথ মূল্যায়ন করা না হয়, তাহলে তাদের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। শহীদদের রক্তের সঙ্গে তাঁরা কখনোই বেইমানি করতে পারবেন না।
ফরিদা আখতার বলেন, ‘বিশ্বের বেশির ভাগ ফ্যাসিস্টের চেহারা পুরুষ হলেও বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য যে এই দেশে ফ্যাসিস্ট একজন নারী। এই একজনের ইচ্ছায় ও নির্দেশে কত মানুষ এখানে খুন হয়েছে! শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার লোভে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সে চেয়েছিল আরও গুলি করে মানুষ হত্যা করতে। এই খুনির বিচার হতেই হবে। বিচারের কাজটা আমরা করব।’
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস বলেন, শহীদ পরিবারের কেউ কেউ মামলা করতে পারছে না, কেউ প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছে, এটা তো কোনোভাবেই হতে পারে না।
অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস বলেন, ‘এত কিছুর পর এখন কী হচ্ছে? এই সরকারের সময় বসুন্ধরার লোন রিশিডিউল (ঋণ পুনঃ তফসিল) হয়। তাদের লুফে নেওয়ার জন্য কাড়াকাড়ি হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কাড়াকাড়ি চলছে কে কার আগে ক্ষমতায় যাবে তা নিয়ে। এর জন্য এত মানুষ জীবন দিয়েছে?’
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আরিফ খান বলেন, আন্দোলনের সময় যারা গুলিবিদ্ধ হয়, তাদের অনেকে হয়তো চিকিৎসা দিলে বেঁচে যেত। কিন্তু মারা না যাওয়ার পরেও তাদেরকে মর্গে লুকিয়ে রাখা হয়। এভাবে অনেকের মৃত্যু হয়। আহত–নিহত সবার নামও হাসপাতালের রেজিস্ট্রারের রাখা হয়নি।
আরিফ খান বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট কখনো ন্যায়–অন্যায় বিচার করে না। কিন্তু আমরা যারা সভ্য তাদের সীমাবদ্ধতা হলো, আমরা খুনের বিচার খুন দিয়ে করতে পারি না। খুনি হয়তো চোখের পলকে একটা প্রাণ নিয়ে নেয়। কিন্তু তার বিচারের জন্য অনেকগুলো ধাপ পার হতে হয়।’ তিনি বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের তথ্য সংগ্রহ ও অনুসন্ধান কার্যক্রম চলছে। এটি শেষ হলেই মূল বিচারকাজ শুরু হবে।
ডেইলি স্টারের সাংবাদিক ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষার্থী ফরিদ উদ্দিন রনি, সিরাজুম মুনিরা ও শ্যামলী সুলতানা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থান নিয়ে স্বরচিত গান পরিবেশন করেন আমিরুল মোমেনিন মানিক।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র বল ন আম র ম য় পর ব র র অন ষ ঠ ন আম দ র ন বল ন র জন য র সময় র একট সরক র আখত র
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।