ঈদ উপলক্ষে মুখরিত রাঙামাটির তাঁত পল্লী
Published: 25th, March 2025 GMT
আর মাত্র ছয়দিন পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে রাঙামাটির তাঁত কারখানাগুলোতে। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কারখানায় পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতীরা। রাঙামাটি শহরে ছোট-বড় প্রায় ২০টি তাঁত কারখানা রয়েছে।
রাঙামাটির তাঁত কারখানাগুলোর ব্যস্ততা মূলত একটু ভিন্ন হয়ে থাকে। ঈদের ছুটিতে পার্বত্য এই জেলাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে তাঁতীরা পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এই জেলায় তাঁতের তৈরি পাঞ্জাবির চাহিদা রয়েছে স্থানীয়দের কাছে।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশি পর্যটক নেই, কলকাতায় পরিবহনের অফিস এখন কাপড়ের দোকান
সাজেকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে তদন্ত কমিটি
রাঙামাটি শহরের আসামবস্তি, স্বর্ণটিলা ঘুরে দেখা যায়, তাঁতীরা পোশাক তৈরির কাজ করছেন। তাদের দম ফেলার ফুসরত নেই। চাহিদা বেশি থাকায় পোশাক তৈরির তাগিদও বেশি। এখানকার ঐতিহ্যবাহী পিনন-হাদি, তাঁতের পাঞ্জাবি, ফতুয়া, জামা ও রুমালসহ আরো বিভিন্ন রকমের তাঁত পণ্যের চাহিদা থাকে পর্যটকদের কাছে। একশো ভাগ কটনের তৈরি এসব কাপড় পরিধানে যেমন আরাম তেমনি এর দাম অন্যান্য তাঁত পণ্যের তুলনায় অনেক বেশি।
তাঁতী রিতা মারমা বলেন, “সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করছি। ওভারটাইম কাজ চলছে। ঈদে পর্যটকদের জন্য বাড়তি পণ্যের চাহিদা থাকে। সেটা যোগান দিতে রাতদিন কাজ চলছে। আমাদের ভালোই ইনকাম হচ্ছে।”
ফরিদা আখতার নামে অপর তাঁতী বলেন, “আমাদের মজুরি হয় কাজ অনুযায়ী, অর্থাৎ যতটা কাজ বুঝিয়ে দিতে পারি সেই অনুযায়ী মজুরি পাই। বর্তমানে কাজের চাপ বেশি, তাই মজুরিও ভালো পাচ্ছি।”
আরএস টেক্সটাইলের মাস্টার রনি মারমা বলেন, “ঈদে ব্যস্ততা খুব বেশি। চাহিদা অনুযায়ী পণ্য তৈরি করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পাঞ্জাবি, ফতুয়া, থ্রি-পিস এসব পণ্যের চাহিদা বেশি। কারখানায় উৎপাদিত পণ্য চলে যাচ্ছে তাঁতের শো-রুমগুলোতে। শহরের তবলছড়ি টেক্সটাইল মার্কেট, রিজার্ভ বাজার, কাঁঠালতলী ও পর্যটনে টেক্সটাইল দোকানগুলো ভরে উঠেছে নিত্য নতুন পণ্যে। রমজান মাসে পর্যটক নেই, যে কারণে বিক্রিও নেই। তবে ঈদকে সামনে রেখে দোকানগুলোতে এখন সাজসাজ রব। প্রতিদিনই দোকানে আসছে নতুন নতুন কালেকশন। শো-রুমের কর্মীরা নতুন পণ্যে দোকান সাজাতে ব্যস্ত।”
তাঁতের পোশাকের দোকানের বিক্রয়কর্মী সবিতা চাকমা বলেন, “রমজান মাসে পর্যটক না থাকায় বেচাকেনা থাকে না। ঈদে ছুটিতে পর্যটক আসলে তখন বেচাবিক্রি ভালো হয়। এবছর যেহেতু টানা ৯দিন ছুটি রয়েছে, তাই প্রচুর পর্যটক আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এবারও বিক্রি ভালো হবে বলে আশা করছি।”
রাঙামাটি টেক্সটাইল মালিক সমিতির সভাপতি বাবলা মিত্র বলেন, “চাহিদা থাকায় পর্যটকদের জন্য নিত্যনতুন ডিজাইনের পোশাক তৈরি হচ্ছে। পর্যটকরা ঈদের ছুটিতে আসলে আত্মীয় ও প্রিয়জনদের জন্য উপহার হিসেবে এখানকার তাঁত পণ্য নিয়ে যান। এজন্য এসময় তাঁতের পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে।”
তিনি আরো বলেন, “চাহিদা অনুযায়ী কারখানাগুলোতে উৎপাদনের চাপ বেশি। রং, সুতার দাম বৃদ্ধির কারণে এই খাতে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যগুলো ১০০ ভাগ কটনের তৈরি, তাই দামও বেশি পড়ে। অনেক শো-রুমে বর্তমানে অন্য জেলার কম দামের পণ্য বিক্রি করছে, যা নিন্মমানের। দাম কম হওয়ার কারণে অনেকেই ওই সব পণ্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন, যা জেলার পণ্য হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করে না।”
বাবলা মিত্র বলেন, “যেসব পর্যটক পণ্যের কদর বোঝেন তারা স্থানীয় তাঁতের তৈরি পণ্য দাম বেশি হলেও কিনছেন। পর্যটকদের স্থানীয় তাঁত পণ্য দেখে মানসম্মত পণ্য কেনার অনুরোধ করছি।”
ঢাকা/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ উৎসব ঈদ অন য য়
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওজোনস্তর ক্ষয়ে স্বাস্থ্য, কৃষি ও প্রাণিজগৎ ঝুঁকির মুখে’
ওজোনস্তর ক্ষয়ের ফলে মানবস্বাস্থ্য, কৃষি উৎপাদন ও প্রাণিজগৎ ঝুঁকির মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেছেন, “ওজোনস্তর রক্ষায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য।”
বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকার আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, “মন্ট্রিয়ল প্রটোকলের মতো কার্যকর আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কারণে পৃথিবী আজ ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। এটি একটি দৃষ্টান্ত যে, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে আন্তর্জাতিক আইনও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা যায়।”
উন্নত দেশগুলো অর্থ ও প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করায় ওজোনস্তর রক্ষায় বৈশ্বিক সাফল্য এসেছে মন্তব্য করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায়ও একইভাবে উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি ও সহযোগিতা অপরিহার্য। আমরা চাই, সমালোচনাকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপে রূপান্তরিত করা হোক। ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক আচরণে পরিবর্তন আনলেই টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন মানিক।
এতে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. জিয়াউল হক এবং ইউএনডিপির প্রতিনিধি।
অনুষ্ঠানে বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা