পাটুরিয়া-আরিচা ঘাটে ঈদে ঘরমুখী যাত্রীর চাপ
Published: 25th, March 2025 GMT
পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ স্বজনের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি ফিরছে। বাস ও কোচের চেয়ে লঞ্চ পারাপারে যাত্রীদের চাপ বেশি দেখা গেছে।
পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, যাত্রীবাহী যানবাহনের চাপ অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি ছিল। পাটুরিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, অনেক গার্মেন্টের কর্মী মঙ্গলবার ঈদের ছুটি পাওয়ায় ঘাট এলাকায় যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। আজ বুধবার সকাল থেকে ঘাট এলাকায় যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে বলে ধারণা করছে ঘাট কর্তৃপক্ষ।
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ১৭টি ও আরিচা-নগরবাড়ী নৌরুটে ছয়টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ২৩টি ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ১০টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার হচ্ছে।
গতকাল ঢাকার গাবতলী থেকে ছেড়ে আসা রাজাবাড়ীগামী রয়েল বাসের চালক আতিয়ার রহমান জানান, গাবতলী থেকে দুপুর ২টার দিকে বাস ছেড়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পাটুরিয়া ঘাটে আসেন। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেশি থাকায় প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সময় বেশি লেগেছে।
কুষ্টিয়াগামী সাভারের রাজিং গার্মেন্টের কর্মী সাদিয়া আক্তার, লিপি বেগম ও ময়না আক্তার জানান, গতকাল বেলা ১টার দিকে তাদের গার্মেন্ট ছুটি দিয়েছে। ঈদের ছুটি পেয়ে ঘাটে যানজটের আশঙ্কায় তারা আগেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
আরিচা অফিসের বিআইডব্লিউটিসির ডিজিএম নাছির উদ্দিন বলেন, গতকাল দুপুরের পর থেকে ঘাট এলাকায় যাত্রীদের চাপ অনেক বেড়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদ য ত র ঘ ট এল ক ও আর চ গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।