দক্ষিণ কোরিয়ায় ভয়াবহ দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৮
Published: 26th, March 2025 GMT
দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ জনে এবং আহত হয়েছে অন্তত ১৯ জন। দেশটির স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু এই পরিস্থিতিকে "ভয়ংকর" আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এটি আমাদের দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল।
এখন পর্যন্ত ২৩,০০০ এরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দাবানলে বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১,৩০০ বছরের পুরনো গউনসা বৌদ্ধ মন্দির সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।
বুধবার দুপুরের দিকে উইসিয়ং কাউন্টির পাহাড়ে একটি অগ্নিনির্বাপক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
প্রায় ৫,০০০ সামরিক সদস্যসহ হাজার হাজার দমকলকর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারও আগুন নেভাতে সহায়তা করছে।
মঙ্গলবার জাতীয় অগ্নি সংস্থা চলতি বছরের প্রথম সর্বোচ্চ অগ্নি সঙ্কট সতর্কতা জারি করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় সাধারণত দাবানল বিরল এবং এ ধরনের প্রাণহানি খুব কম দেখা যায়। তবে চলমান আগুন ইতোমধ্যে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী দাবানল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
এ পর্যন্ত প্রায় ১৭,০০০ হেক্টর বনভূমি ধ্বংস হয়েছে, যা আয়তনের দিক থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম দাবানল।
উইসিয়ং শহরের আগুনে ৬১৮ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত গউনসা মন্দির সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া জোসন রাজবংশের (১৩৯২-১৯১০) সময়ের একটি জাতীয় সম্পদ হিসেবে ঘোষিত স্থাপত্যও দাবানলে পুড়ে গেছে।
প্রেসিডেন্ট হান জানিয়েছেন, সব ধরনের মানবসম্পদ ও যন্ত্রপাতি মোতায়েন করা হয়েছে, তবে প্রবল বাতাস দমকলকর্মীদের প্রচেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করছে।
তিনি আরও জানান, আমরা মরিয়া হয়ে বৃষ্টির অপেক্ষা করছি, যা আগুন নেভাতে সহায়ক হতে পারে।
কিন্তু কোরিয়া আবহাওয়া প্রশাসন জানিয়েছে, বুধবার কোনো বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই এবং বৃহস্পতিবার মাত্র ৫ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে।
সংকট কাটিয়ে উঠার পর, দাবানল মোকাবেলায় যে সকল ঘাটতি দেখা দিয়েছে, সেগুলো পুনর্মূল্যায়ন করার ঘোষণা দিয়েছেন হান।
তিনি বলেন, একবার দাবানল শুরু হলে তা নিয়ন্ত্রণ করতে বিপুল সম্পদ ও মানবশক্তি লাগে এবং এতে মূল্যবান প্রাণহানি ঘটে।
দক্ষিণ কোরিয়া বর্তমানে স্বাভাবিকের চেয়ে শুষ্ক আবহাওয়ার মধ্যে রয়েছে, যেখানে বৃষ্টিপাতও গড়ের তুলনায় কম হয়েছে। চলতি বছরে ইতোমধ্যে ২৪৪টি দাবানল রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.
শুক্রবার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সানচিয়ং কাউন্টিতে প্রথম দাবানল ছড়িয়ে পড়ে, যা দ্রুতই পার্শ্ববর্তী শহর উইসিয়ং, আন্দং, চেওংসং, ইয়ংইয়াং এবং ইয়ংডক পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঘাস খেতে খেতে সীমান্তের ওপারে ১০ গরু, ফেরত দিল বিএসএফ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়া ১০টি গরু আটক করেছিল বিএসএফ। পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে গরুগুলো বাংলাদেশে ফেরত দেওয়া হয়। রবিবার (১৫ জুন) দুপুর ১টার দিকে গরুগুলো বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৯টার দিকে আখাউড়ার কালিকাপুর এলাকায় কাঁটাতারের কাছাকাছি ঘাস খাওয়ানোর জন্য স্থানীয়রা গরু চড়ান। এসময় কয়েকটি গরু ঘাস খেতে খেতে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের অংশে ঢুকে পড়ে। পরে বিএসএফ সদস্যরা ১০টি গরু ধরে নিয়ে গিয়ে কাঁটাতারের কাছে বেঁধে রাখেন। স্থানীয়রা বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করলে গরুগুলো ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘‘শূন্য রেখার কাছে গরু চড়ানোর কারণে সম্প্রতি প্রায়ই গরু ভারতের অংশে ঢুকে পড়ছে। বিষয়টি নিয়ে বিএসএফের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছিল। আজ কিছু গরু ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ায় বিএসএফ তা আটক করেছিল। পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে গরুগুলো ফেরত আনা হয়েছে।’’
আরো পড়ুন:
ঠাকুরগাঁও সীমান্ত দিয়ে আরো ২৩ জনেকে ঠেলে দিল বিএসএফ
চার ভারতীয়সহ ১৬ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ
ঢাকা/পলাশ/রাজীব