নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একদল প্রতারক কখনো ডিবি পরিচয়ে আবার কখনো কথিত পত্রিকার সাংবাদিক দাবী করে চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া পড়েছে। 

এবিষয়ে স্থানীয় এক গণমাধ্যম কর্মী প্রতিবাদ করায় হত্যা উদ্দেশ্যে হামলা করার অভিযোগ উঠেছে। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঐ প্রতাচক্রকে গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়েছেন নেটিজেনরা। 

ভুক্তভোগী সাংবাদিক মাজেদ ভূইয়া (৩৫) জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই এ প্রতারক চক্রের প্রধান জান্নাত জাহা ও জীবনসহ  ৫/৭ জনের একটি সক্রিয় দল উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে চাঁদাবাজি ও কথিত পত্রিকার সাংবাদিক দাবী করে নানা ধরনের অপকর্ম করে আসছে৷ ইতোমধ্যেই তাদের অপকর্মের অভিযোগ এনে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।

তবে গত ৫ আগষ্টের পর থেকে এ প্রতারক চক্রটি পুরো উপজেলায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে তাদের অপরাধ জগতের মূল হোতা ভান্ডারী টিন দেলোয়ার ও কথিত আইনজীবী ও সাংবাদিক দাবী করা ব্যাটারি মুক্তাদির ছত্রছায়ায় এ ধরনের ঘৃণিত কাজ করে থাকে৷

তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ শে মার্চ, বুধবার পেশাদারিত্ব কাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় সন্ধ্যায় মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় হাবিবপুর ঈদগাঁয়ের সামনে তারা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

আমাকে রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে৷ পরে আমার চিৎকারের শব্দ শুনে স্থানীয়রা আমাকে সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই ও ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবী জানাই৷ 

এ বিষয়ে সোনারগাঁয়ের স্থানীয় সুনামধন্য পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক নেতৃবৃন্দরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই প্রতারকের কেউ স্থানীয় না তারা এখানে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে৷ তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট পুরো সোনারগাঁবাসী৷ একাধিকবার তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার হলেও অদৃশ্য শক্তির বলে থাকে ধরা-ছোয়ার বাহিরে৷ কেনো প্রশাসন তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসে না এমন প্রশ্ন ছূড়ে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দরা বলেন, অতিদ্রুত এ উচ্ছৃঙ্খল ও প্রতারক চক্রকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে৷অন্যথায় আমরা স্থানীয় সাংবাদিকরা কঠিন আন্দোলনে যাবো৷  

এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন, সাংবাদিককে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করার একটি অভিযোগ পেয়েছি৷ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ স ন রগ

এছাড়াও পড়ুন:

আরও বাড়বে সোনার দাম, ২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে উঠতে পারে ৪,৯০০ ডলার

এক বছর ধরে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ছেই। চলতি বছর সোনার দাম আউন্সপ্রতি চার হাজার ডলার ছাড়িয়ে গিয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে। বিভিন্ন পূর্বাভাসে জানা গেছে, ২০২৬ সালেও সেই ধারা বজায় থাকবে।

সোনার দাম যখন আউন্সপ্রতি চার হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেল, তখনই অনেক সংস্থা পূর্বাভাস দেয়, সোনার দাম আরও বাড়তে পারে। সর্বশেষ গোল্ডম্যান স্যাকসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের শেষ ভাগে বিশ্ববাজারে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৯০০ ডলারে উঠে যেতে পারে।

গত দুই মাসে বিভিন্ন বৈশ্বিক সংস্থা সোনার দাম নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে। এসব পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছর সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৫০০ ডলার থেকে ৪ হাজার ৯০০ ডলারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।

গোল্ডম্যান স্যাকস বাজার বিশ্লেষণ করেছে। তাদের ভাষ্যমতে, বর্তমানে সোনায় যে পরিমাণ বিনিয়োগ হওয়ার কথা, সে পরিমাণ হচ্ছে না। সে কারণে বিনিয়োগকারীরা সোনায় আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছেন। বিষয়টি হলো এখন বিনিয়োগকারীদের সোনা ধরে ধরে রাখার প্রবণতা কম বলে ভবিষ্যতে হঠাৎ যদি বিনিয়োগ বেড়ে যায়, তাহলে সোনার দাম হুট করে অনেকটা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

গোল্ডম্যান স্যাকস মনে করছে, পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে গেছে যে সোনার দাম আরও বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যে চাহিদা অনেকটা বাড়তে হবে তা নয়; বরং বিনিয়োগকারীরা স্টকে বিনিয়োগের পাশাপাশি কিছু পরিমাণে সোনা কিনলেই এর দাম অনেকটা বেড়ে যাবে। ফলে বিনিয়োগ যত বেশি বাড়বে, সোনার দাম তার চেয়েও বেশি হারে বাড়বে।

চলতি বছর ইতিমধ্যে সোনার দাম ৬০ শতাংশ বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে গোল্ডম্যান স্যাকস মনে করছে, চলতি বছর সোনার দাম অতটা বাড়বে না। তবে যে দুটি কারণে এ বছর সোনার দাম বেড়েছে, সেই কারণ দূর হবে না।

প্রথমত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনা কেনার ধারা অব্যাহত থাকবে। ২০২২ সালে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ পশ্চিমারা জব্দ করার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুঝে যায়, এখন সোনায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলও মাস খানিক আগে সে কথা বলেছে।

ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের (ডব্লিউজিসি) সেন্ট্রাল ব্যাংক গোল্ড রিজার্ভ সার্ভে ২০২৫-এ বলা হয়েছে, ৪৩ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোনার ভান্ডার বৃদ্ধি করতে আগ্রহী।

দ্বিতীয়ত, ফেডারেল রিজার্ভ এখন নীতি সুদ কমাচ্ছে। ডিসেম্বর মাসেও নীতি সুদহার কমানো হয়েছে। বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, ২০২৬ সালে আরও ৭৫ ভিত্তি পয়েন্ট হারে নীতি সুদহার কমানো হতে পারে। বিনিয়োগকারীদের সোনার দিকে ঝুঁকে পড়ার যেসব কারণ অতীতে ছিল, সেগুলো এখনো আছে।

ভূরাজনীতিতে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম খুঁজছেন। সেই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে বাণিজ্যকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে, তাতে বিনিয়োগকারীরা ডলারভিত্তিক বন্ডের চেয়ে সোনায় বিনিয়োগ করা নিরাপদ মনে করছেন।

সোনার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর দাম সাধারণত কমে না। গোল্ড প্রাইস ডট অর্গের তথ্যানুসারে, গত ২০ বছরে সোনার দাম বেড়েছে ৭১৮ শতাংশ। গত পাঁচ বছরে বেড়েছে ১৩৪ শতাংশ; এক বছরে ৬১ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ