‘১০ হাজার টাকায় ভক্ত ভাড়া করে মাঠে ঢোকালেন রিয়ান’
Published: 27th, March 2025 GMT
আইপিএলের এবারের আসরে রাজস্থান রয়্যালসের শুরুটা মোটেও সুখকর হয়নি। দলীয় অধিনায়কত্বে পরিবর্তন এনে প্রথম তিনটি ম্যাচে নেতৃত্বের ভার দেওয়া হয় রিয়ান পরাগকে। কিন্তু তার অধীনে টানা দুটি পরাজয় দলের উপর চাপ বাড়িয়েছে। ঠিক এই সময়েই এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। মাঠে ঢুকে এক ভক্ত রিয়ান পরাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
অবশ্য ক্রিকেট বিশ্বে তারকাদের কাছ থেকে আশীর্বাদ নিতে মাঠে ঢুকে পড়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সেই একবার বিরাট কোহলির এক ভক্ত মাঠে ছুটে গিয়ে তাকে প্রণাম করেছিলেন। এরপর অবশ্য পুলিশ সেই ভক্তকে আটক করেছিল। এবার ঠিক তেমনই এক দৃশ্য দেখা গেল বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে। তবে এবার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন রিয়ান পরাগ। গতকাল কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচ চলাকালিন এক ভক্ত নিয়ম ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন এবং রিয়ানের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় ওঠে।
নেটিজেনদের একাংশ এই ঘটনাকে স্বাভাবিকভাবে নিলেও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, রিয়ানের মতো তুলনামূলক কম জনপ্রিয় খেলোয়াড়ের জন্য কেউ কেন মাঠে ঢুকবে? এমনকি কিছুজন দাবি করছেন, এটি পরিকল্পিত! এক ব্যক্তি রসিকতা করে লিখেছেন, “১০ হাজার টাকা দিয়ে ভক্ত ভাড়া করে মাঠে ঢোকালেন রিয়ান! তিনি চিরকাল লাইমলাইটে থাকতে ভালোবাসেন।”
আরো পড়ুন:
কিউদের বদলি অধিনায়ক ল্যাথামও চোটে
‘সতর্কতার সঙ্গে লাইফ স্টাইল পরিবর্তন করতে হবে তামিমকে’
এই বিতর্কের সূত্র ধরেই রিয়ানকে ট্রোল করা শুরু হয়।
উল্লেখ্য, কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাট হাতে ১৫ বলে ২৫ রান করেন রিয়ান। তবে বল হাতে ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। তার পারফরম্যান্সের চেয়ে এখন বেশি আলোচনায় সেই বিতর্কিত ঘটনাই!
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।