শেষ কর্মদিবসে বিকেলে কমলাপুর স্টেশনে ভিড়, ট্রেন ছাড়ছে সময়মতো
Published: 27th, March 2025 GMT
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩১ মার্চ হতে পারে পবিত্র ঈদুল ফিতর। সম্ভাব্য এই তারিখ ধরে আজ বৃহস্পতিবারই ছিল ঈদের আগের শেষ কর্মদিবস। এদিন বিকেলে অফিস-আদালতের ছুটির সময়ের পর থেকেই কমলাপুর রেলস্টেশনে ভিড় বাড়তে শুরু করে। অফিস শেষ করে অনেকেই সরাসরি চলে আসেন রেলস্টেশনে।
ঈদযাত্রার তৃতীয় দিন আজ বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। এ সময় কমলাপুর থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের ট্রেন সময়মতো ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়ে কিংবা নির্ধারিত সময়ের তিন থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ছেড়ে যায়। তবে অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ে কমলাপুর পৌঁছাতে না পেরে গন্তব্যের ট্রেন ধরতে পারেননি।
আজ বিকেল চারটা থেকে পাঁচটার মধ্যে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে নির্ধারিত সময়ে মোট চারটি ট্রেন ছেড়ে যায়। ট্রেনগুলো হলো সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, যমুনা এক্সপ্রেস ও চিলাহাটি এক্সপ্রেস।
বিকেলে যাত্রীর ভিড় বাড়লেও ট্রেনের ভেতরে দাঁড়ানো যাত্রীর ভিড় খুব একটা দেখা যায়নি। ওই চারটি ট্রেনের মধ্যে শুধু যমুনা এক্সপ্রেসের ভেতরে দাঁড়ানো যাত্রীর ভিড় কিছুটা বেশি দেখা গেছে। তবে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার শ্রেণির বগিগুলোয় কমলাপুর স্টেশন থেকে আসন ফাঁকা নিয়ে ছেড়ে যেতে দেখা গেছে।
ট্রেন ধরতে পারেননি অনেকেই
এবারের ঈদযাত্রায় অতীতের বিভিন্ন সময়ের মতো ট্রেনের সূচি বিপর্যয় কিংবা ট্রেন ছাড়তে অনেক দেরি হয়েছে, এমন ঘটনা এখনো ঘটেনি। স্টেশন থেকে ট্রেন সময়মতো ছেড়ে যাচ্ছে। তবে যাত্রীদের কেউ কেউ নির্ধারিত সময়ের আগে স্টেশনে পৌঁছাতে না পেরে ট্রেন ধরতে পারেননি।
প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে ছুটছেন নগরবাসী.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ধ র ত সময় কমল প র সময় র
এছাড়াও পড়ুন:
এবারও কেন শিক্ষার্থীরা সময়মতো বই পাবে না
অতীতের ভুল থেকে আমাদের নীতিনির্ধারক, আমলাতন্ত্র ও প্রতিষ্ঠানগুলো যে কোনো শিক্ষা নেয় না—এটিই ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষা। বই ছাপাতে দেরি হওয়ায় চলতি বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছাতে তিন মাস দেরি হয়েছিল। এতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন যেমন চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে, সরকারকেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। আগামী বছরে একই পুনরাবৃত্তি দেখতে পাওয়াটা হবে যারপরনাই হতাশাজনক।
প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, আগামী বছরের শুরুতে প্রাথমিকের বই বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছাবে বলে আশা করা হলেও মাধ্যমিকের বই নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। নবম শ্রেণির বই ছাপানোর জন্য মুদ্রণকারীদের সঙ্গে কেবল চুক্তি হয়েছে। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশই দেওয়া হয়নি। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে বাকি যেখানে ৫০ দিনের মতো, সেখানে কবে কার্যাদেশ দেওয়া হবে, কবে বই ছাপা হবে আর কবেই বা বাঁধাই হয়ে সেগুলো শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাবে?
শঙ্কার বিষয় হচ্ছে নভেম্বর–ডিসেম্বর মাসে মুদ্রণকারীরা সাধারণত গাইড বই ছাপার কাজে ব্যস্ত থাকে। ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে পোস্টার, লিফলেট ছাপানোর কাজও বাড়বে। এ বাস্তবতায় মাধ্যমিকের সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছাতে যে দেরি হবে, সেটা বোঝাই যাচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, দেরিতে বই পৌঁছানোর কারণে যে শিখনঘাটতি তৈরি হবে, তার দায় কে নেবে? ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ ও এনসিটিবির কারণে শিক্ষার্থীরা কেন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
করোনা মহামারির কারণে শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ এমনিতেই শিখনঘাটতিতে ভুগছে। এরপরও যদি ফি বছর পাঠ্যবই ছাপাতে দেরি হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের ভুগতে হয়, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। এ বছরের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এনসিটিবি আগভাগেই দরপত্রপ্রক্রিয়া শেষ করে মূল্যায়নের কাজও শেষ করেছিল। কিন্তু ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সেপ্টেম্বর মাসে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপার দরপত্র বাতিল করা হয়। নতুন দরপত্র আহ্বানের পর যাচাই–বাছাই শেষ হলেও তিন শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি।
দরপত্রের নিয়ম অনুযায়ী চুক্তির পর ৪৫ দিনের মধ্যে তিন শ্রেণির বই ছাপিয়ে সরবরাহের কথা রয়েছে। কিন্তু খোদ এনসিটিবির কর্মকর্তারা সময়মতো বই ছাপানো হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন। বছরের শুরুতেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের সব শিক্ষার্থীর হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়াটা যে সরকার ও এনসিটিবির দায়িত্ব, সেই বোঝাপড়ায় ঘাটতি থাকায় বারবার একই সংকট সৃষ্টি হচ্ছে বলে আমরা মনে করি। এ ক্ষেত্রে সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর জোরালো অঙ্গীকার প্রয়োজন।
মাধ্যমিকের তিন শ্রেণির বই ছাপানো নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে, এনসিটিবিকে দ্রুত তা নিরসন করতে হবে। শুধু কার্যাদেশ দিয়ে বসে থাকলেই চলবে না, সময়মতো বইগুলো ছাপা হচ্ছে কি না, নিয়মিত তার তদারক করতে হবে। পাঠ্যবই ছাপাতে দেরি হওয়ায় প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের ভুগতে হচ্ছে, তাদের শিক্ষাজীবনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যেকোনো মূল্যেই এই দুষ্টচক্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।