আজ চাঁদ দেখা গেলে আগামীকাল পালিত হবে পবিত্র ইদুল ফিতর। পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ করতে শেষ মুহূর্তে অনেকেই ঢাকা ছাড়ছেন। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ ভিড় কম। যাত্রা অনেকটায় স্বস্থির। তবে এ যাত্রায় গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাড়তি ভাড়া। কোনো কোনো রুটে নেওয়া হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। আবার কেউ কেউ বেশি নিচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। 

রবিবার (৩০ মার্চ) ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এখান থেকে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের যাতায়াত সবচেয়ে বেশি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন কাউন্টার এবং নন কাউন্টারের বাসগুলো সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে। বাসের লোকজন যাত্রীর জন্য হাঁক ডাক দিচ্ছেন। কিছু সময় পর বাস ভর্তি হলে ছেড়ে যাচ্ছে।

পরিবহন শ্রমিক কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শরীয়তপুরের নড়িয়ার ২৫০ টাকার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা। খুলনা-গোপালগঞ্জ ৪৫০ এর ভাড়া ৮০০, কুষ্টিয়া-কুমারখালীর ৬৫০ এর ভাড়া ৮০০, বরিশালের ৪০০ এর ভাড়া ৮০০, মাওয়া শ্রীনগরের ১০০ টাকার ভাড়া ২০০, যশোরের ৬০০ এর ভাড়া ৮০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আসার সময় গাড়ি খালি আসবে। এ কারণে একটু বাড়তি ভাড়া নিতে হচ্ছে।


নড়াইল এক্সপ্রেসের কাউন্টার ম্যানেজার আলমগীর জানান, গাড়ি যাবে যশোর। আগের ভাড়া ছিলো ৬০০ টাকা। ঈদের সময় ২০০ টাকা বেশি নিচ্ছি। আসার সময় তো যাত্রী থাকে না। খালি গাড়ি নিয়ে আসতে হয়। টোল দিতে হয় কত টাকা। আমাদের বিষয়টাও একটু দেখতে হবে। 

ঢাকা-গোপালগঞ্জ-খুলনা রুটের বনফুল পরিবহনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর বলেন, “অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার যাত্রী কম। এক সময় যাত্রীরা দাঁড়িয়ে যেত। এখন যাত্রী কম। আর আসার সময় খালি আসে। এ কারণে ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে।”

পরিবারের সঙ্গে শরীয়তপুরের নড়িয়া যাচ্ছিলেন জোবায়ের আলম। তিনি বলেন,'আগের ভাড়া ছিলো ২৫০ টাকা। আজ নিচ্ছে ৫০০ টাকা। বাড়তি ভাড়া দিয়েই যেতে হবে।” জাতীয় ভোক্তা অধিকারকে নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।

এদিকে, যানজট এড়াতে তৎপর রয়েছে পুলিশ।

ঢাকা/মামুন/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এর ভ ড় র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ