বাংলাদেশের হয়ে খেলবেন কি না এপ্রিলে জানাবেন সামিত সোম
Published: 30th, March 2025 GMT
হামজা চৌধুরীর বাংলাদেশ দলে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে দেশের ফুটবলে। এবার আরও কয়েকজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলারকে জাতীয় দলে যুক্ত করতে আগ্রহী বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তাদের অন্যতম হলেন কানাডা-ভিত্তিক ফুটবলার সামিত সোম। ইতোমধ্যে বাফুফে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছেন ২৭ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার।
বাফুফের সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘আমরা সামিত সোমের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং বাংলাদেশ দলে খেলার বিষয়ে তার আগ্রহ জানতে চেয়েছি। তিনি কোচ ও অন্যান্যদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে আমাদের জানাবেন।’
সামিত সোম কানাডার যুব দল ও জাতীয় দলে খেলেছেন। এর আগে বাংলাদেশ দলে খেলার বিষয়ে আগ্রহ দেখাননি তিনি। তবে হামজা চৌধুরীর বাংলাদেশে আসার পর তার মত পরিবর্তন হতে পারে বলে মনে করছে বাফুফে। সেই কারণেই আবারও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। অন্য দেশের সিনিয়র দলে খেলা ফুটবলারদের অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ হওয়ায় বাফুফে এখন তরুণ প্রতিভা খুঁজে বের করায় বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে, ভালো মানের লিগে খেলা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলারদের শনাক্ত করা।
এ প্রসঙ্গে ফাহাদ করিম বলেন, ‘আমরা স্থানীয় ও বিদেশি উভয় ক্ষেত্রেই প্রতিভাবান ফুটবলারদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। দেশীয় প্রতিভা খোঁজার কাজ সারা বছরই চলে, তবে এবার প্রথমবারের মতো আমরা প্রবাসী ফুটবলারদের দলে ভেড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি।’
তিনি আরও জানান, ‘জুনের শেষের দিকে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা থেকে আসা প্রায় ৩০ জন খেলোয়াড়ের জন্য চার থেকে পাঁচ দিনের ট্রায়াল আয়োজন করবে বাফুফে। এই খেলোয়াড়দের বয়স ১৬ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। তারা তাদের নিজ নিজ দেশের দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ স্তরের লিগে খেলেন। আমরা তাদের পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করব এবং টেকনিক্যাল কমিটি পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। এদের বেশিরভাগ ইউরোপ থেকে এলেও, উত্তর আমেরিকা থেকেও কয়েকজন খেলোয়াড় থাকবেন।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ল দ শ ফ টবল ফ টবল র
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।