ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে সিরিজ হেরে যাওয়ায় সরাসরি ওয়ানডে বিশ্বকাপে উন্নীত হয়নি বাংলাদেশ। নিগার সুলতানা জ্যোতিদের কোয়ালিফাইং রাউন্ড খেলে যেতে হবে বিশ্বকাপে। তিনি সতীর্থদের আহ্বান জানালেন, পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ বাছাই টুর্নামেন্টে সেরাটা উজাড় করে খেলতে। জাতীয় দলের উত্থান-পতন, বিসিবির সুযোগ-সুবিধা, ছেলেমেয়ে বৈষম্য নিয়ে মন খুলে বিশ্লেষণ করেছেন নিগার সুলতানা জ্যোতি। তাঁর কথা শুনেছেন সেকান্দার আলী

সমকাল: সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার প্রত্যাশা থাকলেও তা পূরণ হয়নি। কোয়ালিফায়ার খেলে বিশ্বকাপে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?
জ্যোতি:
খেলোয়াড়, ম্যানেজমেন্ট, বিসিবি সবারই প্রত্যাশা ছিল সরাসরি বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করা। ওয়েস্ট ইন্ডিজে একটি ম্যাচ জেতার পর আমাদের ভেতরে আত্মবিশ্বাসও এসেছিল। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সেটা করতে পারিনি। আমাদের কারণেই বড় একটি সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে। এখন কোয়ালিফায়ার খেলে বিশ্বকাপে যেতে হবে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের মধ্য দিয়ে আমরা সে প্রস্তুতি নিয়েছি। বিসিবি কোয়ালিফায়ারের জন্য দলও ঘোষণা করেছে। এতে যেটা ভালো হয়েছে, সবাই নিজের মতো করে প্রস্তুতি নিতে পারবে। এখন দল হিসেবে ভালো ক্রিকেট খেলা গেলে ভালো কিছু করার সম্ভাবনা থাকবে।

সমকাল: বিশ্বকাপের চেয়ে কোয়ালিফায়ার খেলা কি বেশি চাপের?
জ্যোতি:
কোয়ালিফাইং রাউন্ড সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং। কারণ, এখানে ভুল করলে বড় সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা থাকে। প্রতিটি দলই চায় বিশ্বকাপ খেলতে। অথচ বিশ্বকাপে উন্নীত হবে মাত্র দুটি দল। সেদিক থেকে বিশ্বকাপ বাছাই টুর্নামেন্ট খুবই চ্যালেঞ্জিং। আমরা কতটা দক্ষতার সঙ্গে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারব, সেটা গুরুত্বপূর্ণ।

সমকাল: অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পর থেকে লম্বা সময় ভালো খেলছেন না। কারণ কী?
জ্যোতি:
ছেলেমেয়ে সব জায়গায় একটা বিষয় থাকে আমাদের। আমরা ওভারকাম করতে পারি না। মেয়েদের ভেতরে জিনিসটা বেশি দেখছি। একটা সিরিজ খারাপ যেতে পারে, পরের সিরিজে তো ফিরে আসবে। অথচ সেখান থেকে আমরা গুছিয়ে ফিরতে পারি না। নারী ক্রিকেটে এটা সবচেয়ে বড় দোষ বলতে পারেন। আমরা ব্যক্তিগতভাবে ভালো করলে দলের কাজে লাগবে। আমাদের পারফরমার বেরিয়ে আসা উচিত। ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে পারে এ রকম কিছু খেলোয়াড় তৈরি হয়েছে। সামগ্রিকভাবে যদি পারফর্ম করতে পারি, তাহলে উন্নতি দেখতে পাবেন। তবে এ মুহূর্তে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করা। না পারলে নারী ক্রিকেট নিচে নেমে যাবে। আর বিশ্বকাপ খেলতে পারলে দেশের ক্রিকেট ফোকাসে থাকবে। চাপমুক্ত থেকে আমরা স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলে ভালো হবে ইনশাআল্লাহ।

সমকাল: ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন ছিল। বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের ফিটনেস এখন কোন পর্যায়ে?
জ্যোতি:
আমরা যেটা মনে করি, মেয়েরা আগের চেয়ে অনেক বেশি মনোযোগী। আমি মনে করি, ব্যক্তিগতভাবে ভালো করতে হলে নিজের ফিটনেসে উন্নতি করতে হবে। কারণ, বিশ্ব ক্রিকেট যেভাবে এগোচ্ছে, সেখানে নিজেকে ধরে রাখতে হলে সবদিক থেকে উন্নতি করতে হবে।

সমকাল: টপঅর্ডার ব্যাটিং নিয়ে কি বেশি দুশ্চিন্তা?
জ্যোতি:
বিগত দিনে যে টিম ম্যানেজমেন্ট ছিল, তারা খেলোয়াড়দের ফ্রিডম দেওয়ার চেষ্টা করেছে। বিশেষ করে ব্যাটাররা অনেক স্বাধীনতা ভোগ করেছে। টপঅর্ডার ব্যাটাররা অনেক স্বাধীনতা পেয়েছে। কোনো কোচিং স্টাফকে এতটা স্বাধীনতা দিতে দেখিনি। তাদের রোল দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে, রান না করতে পারলেও বাদ পড়বে না। এই স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, যাতে ধারাবাহিক ভালো খেলতে পারে। যাতে ভয় না করে খারাপ খেললে পরের ম্যাচে থাকবে কিনা। এর পরও ভালো করতে না পারার অর্থ হলো, খেলোয়াড়দের মানসিকতায় ঘাটতি। দু-একজন খেলোয়াড় আবার সব ম্যাচ ভালো খেলে। স্বর্ণা খুব দ্রুত রান তোলে। এ রকম কয়েকজন ক্রিকেটার আরও দরকার। সমস্যা হচ্ছে, টপঅর্ডার ফেল করলে মিডল অর্ডারে চাপ পড়ে। সুপ্তা আপা যোগ হওয়ায় ওপরে কিছুটা ভারসাম্য এসেছে। ইসমাকে নতুনভাবে নেওয়া হয়েছে। সে খুব ভালো স্ট্রাইক রোটেট করতে পারে। টপঅর্ডার ব্যাটারদের স্ট্রাইক রেট ভালো থাকলে আমরা যারা মিডল অর্ডারে খেলি, দেখা যাবে কাজটা সহজ হয়ে যাবে। ২৫০ রান করতে পারলে আমাদের যে বোলিং অ্যাটাক, তাতে যে কোনো দলকে ধরে রাখা সম্ভব।

সমকাল: এখন তো সুযোগ-সুবিধা ভালো, মেয়েরা কি নিজেদের উন্নতির জন্য চেষ্টা করে?
জ্যোতি:
আমার কাছে মনে হয়, আগের চেয়ে অনেক বেশি করে। আগে একটা বিষয় ছিল, আমার পরে কেউ নেই। ভালো খেললেও সমস্যা নেই, খারাপ খেললেও সমস্যা না। কারণ, আমার পেছনে কেউ নেই। এখন কিন্তু সে রকম না। বিকল্প খেলোয়াড় ঘাড়ের ওপর কড়া নাড়ছে। এই চিন্তার কারণে স্বাস্থ্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। এতে করে উন্নতি করার একটা চ্যালেঞ্জ কাজ করে খেলোয়াড়দের মধ্যে। ওই দিক থেকে বলব, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মানসিকতা আগের চেয়ে বেড়েছে। সিনিয়র ক্রিকেটার বাদ পড়েছে, লিগে ভালো করে আবার দলে ফিরেছে। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা যতদিন থাকবে, ততদিন উন্নতির ধারাবাহিকতা থাকবে। 

সমকাল: ছেলে ও মেয়েদের ক্রিকেটে আর্থিক দিক দিয়ে বড় পার্থক্য.

..
জ্যোতি:
এই তুলনায় গেলে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা হবে না। আকাশ-পাতাল পার্থক্য। ক্রিকেট বোর্ড চেষ্টা করছে ব্যবধান কমিয়ে আনার। শুধু বোর্ড একা এই বৈষম্য কমাতে পারবে না। ছেলেদের ক্রিকেটে যেভাবে স্পন্সর আসে, মেয়েদের ক্রিকেটে আসে না। কিন্তু জাতীয় দলের সুযোগ-সুবিধাগুলো ছেলেদের মতোই পাচ্ছি। আর্থিক সুবিধা বেড়েছে, টুর্নামেন্টের সংখ্যা বেড়েছে, জাতীয় দলের সিরিজ বেড়েছে। এটা ভালো দিক। ২০২২ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের পরে এফটিপিতে ঢোকার পর অনেক সিরিজ খেলার সুযোগ হয়েছে। যেটা দেশে এবং বিশ্বের কাছে মেয়েদের ক্রিকেটকে পরিচিতি দিয়েছে। বিপিএলটা আয়োজন করা গেলে হয়তো আরও লাভবান হতো খেলোয়াড়রা। 

সমকাল: জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু– বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এবারের ঈদের খুশি নিশ্চয়ই বেশি হবে?
জ্যোতি:
হাসি ...। এখনও বিয়ের অনুষ্ঠান হয়নি। আকদ হয়েছে। খেলা নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। আর এবার পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার সুযোগ থাকছে না। কারণ, ৩ এপ্রিল পাকিস্তান যেতে হবে বিশ্বকাপ কোয়ালিফাইং টুর্নামেন্ট খেলতে। এই ঈদ ঢাকায় টিমমেটদের সঙ্গে করব।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: টপঅর ড র ব শ বক প স ব ধ নত আম দ র সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

পশ্চিমবঙ্গের চার শ্রমিককে বিদেশি বলে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা ভারতের

আসাম রাজ্যের পর গোটা ভারত থেকেই বাংলাদেশি বলে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো (পুশইন) হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তা–ই নয়, প্রমাণের অভাবে আবার তাঁদের অনেককে ফিরিয়েও আনতে হচ্ছে বলে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত অঞ্চল থেকে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গেরই সংবাদমাধ্যম।

দক্ষিণ ও মধ্য বাংলার দুই জেলা বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের চার পরিযায়ী শ্রমিক মহারাষ্ট্রে কাজ করতে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে মহারাষ্ট্র পুলিশ তাঁদের ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে তুলে দেয়। এরপর বিএসএফ তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। এ চারজনই আবার মুসলমান।

মুম্বাইয়ে কাজ করতে যাওয়া মুর্শিদাবাদ ও বর্ধমানের এই চার পরিযায়ী শ্রমিককে মহারাষ্ট্র পুলিশ বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। কোনো রকম যাচাই না করেই তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজ্য পুলিশের উদ্যোগে গতকাল রোববার বিকেলে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) কাছ থেকে ওই তিন নাগরিককে ফেরত নিয়ে বিএসএফ তাঁদের কোচবিহার জেলার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বলে জানা গেছে।

চারজনের মধ্যে তিনজনই মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন হরিহরপাড়ার তরতিপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন মণ্ডল, ভগবানগোলার মহিষাস্থলি গ্রামপঞ্চায়েতের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা মেহবুব শেখ ও বেলডাঙার কাজিশাহার বাসিন্দা মিনারুল শেখ। অন্যজন পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার কুলুট গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফা কামাল। তাঁরা প্রত্যেকেই পরিযায়ী শ্রমিক। মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে তাঁরা রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। হেফাজতে নেওয়ার পাঁচ দিন পর তাঁদের উদ্ধার করা হলো বলে জানানো হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের সংবাদপত্র ‘পুবের কলম’ আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তাঁদের কাছে বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে দুই প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকের সঙ্গে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

পশ্চিমবঙ্গের সংবাদপত্র ‘পুবের কলম’ আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তাঁদের কাছে বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে দুই প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকের সঙ্গে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। দুই দিন ধরে তাঁরা কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থেকে কিছুটা দূরে জিরো পয়েন্টে ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় মুঠোফোন থেকে ভিডিও বার্তায় ওই চার শ্রমিক তাঁদের দুর্দশার কথা জানান। তারপরেই তাঁদের ফেরানোর তৎপরতা শুরু করেন পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভার সংসদ সদস্য সামিরুল ইসলামসহ অন্য জনপ্রতিনিধিরা। পুলিশও বিষয়টি বিএসএএফকে জানায়।

হরিহরপাড়ার বাসিন্দা শামীম রহমান গণমাধ্যমে বলেন, ‘স্থানীয় তৃণমূলের রাজনৈতিক নেতাদের বিষয়টি জানানো হয়। তারপর তাঁদের ফেরানোর তৎপরতা শুরু হয়। তাঁরা উদ্ধার হয়ে ঘরে ফিরছেন ভেবে ভালো লাগছে।’

সূত্রের খবর, বাংলাদেশি সন্দেহে চারজনকে আটক করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে ১০ জুন বিএসএফের হাতে তুলে দেয় মহারাষ্ট্র পুলিশ। তাঁদের মুম্বাই থেকে আগরতলা ও পরে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে পাঠানো হয়। ওই শ্রমিকদের টাকা, মুঠোফোনও কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হরিহরপাড়ার তরতিপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন দুই বছর ধরে মুম্বাইয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। গতকাল সকালে তাঁর স্ত্রী পিংকি বিবি হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখের সঙ্গে দেখা করেন। বিধায়কের মাধ্যমে বৈধ নথি সংসদ সদস্য সামিরুল ইসলাম ও প্রশাসনের কর্তাদের কাছে পাঠানো হয়। তারপরই তাঁদের ঘরে ফেরানোর তৎপরতা শুরু হয়।

হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখ বলেন, নাজিমুদ্দিন এ দেশেরই নাগরিক। তাঁর বৈধ নথি ও নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র রয়েছে।

বিধায়ক নিয়ামত শেখ আরও বলেন, ‘তাঁর মতো আরও তিনজনকে বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় কেন্দ্রের বিএসএফ। গতকাল বিকেলে তাঁরা বিএসএফের হেফাজতে আসেন। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি তাঁরা ঘরে ফিরবেন।’

এ বিষয়ে মুর্শিদাবাদ পুলিশের তরফে গতকাল জানানো হয়, আটক ব্যক্তিদের কাগজপত্র রোববার বিএসএফের হাতে তুলে দেয় রাজ্য পুলিশ। এরপরে বিএসএফ যাবতীয় কাগজপত্র রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে যাচাইয়ের পরে তা বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) হাতে তুলে দেয়।

এরপর বিএসএফ সবাইকে ফেরানোর ব্যবস্থা করে এবং কোচবিহার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। মুর্শিদাবাদ ও বর্তমানের জেলা পুলিশের একটি দল ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে ইতিমধ্যে কোচবিহারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। আজ সোমবার তাঁদের নিজে নিজে জেলায় ফেরানো হবে বলে জানা গেছে।

চারজনের মধ্যে তিনজনই মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন হরিহরপাড়ার তরতিপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন মণ্ডল, ভগবানগোলার মহিষাস্থলি গ্রামপঞ্চায়েতের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা মেহবুব শেখ ও বেলডাঙার কাজিশাহার বাসিন্দা মিনারুল শেখ। অন্যজন পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার কুলুট গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফা কামাল।

বাঙালি বলে হেনস্তা পশ্চিমবঙ্গে

তবে শুধু দরিদ্র পরিযায়ী শ্রমিকই নন, পশ্চিমবঙ্গে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত অনেকেই সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন, তাঁদের অন্যভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে।

দিল্লির এক অধ্যাপিকা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, গত কয়েক মাসে চারবার দক্ষিণ কলকাতার প্রধান পাসপোর্ট অফিসে গিয়েও তিনি তাঁর ২০০৭ সালের পুরোনো পাসপোর্ট নবায়ন করতে পারেননি।

এই অধ্যাপিকা বলেন, ‘আমাকে পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, এখানে প্রচুর বাংলাদেশি ঢুকেছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সে কারণে আমাদের যাঁদের প্রায় ২০ বছর ধরে বৈধ ভারতীয় পাসপোর্ট রয়েছে, তাঁদেরও সহজে পাসপোর্ট নবায়ন করা হচ্ছে না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ