বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বৃহস্পতিবার সকালে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট আজ সকাল ৯টার দিকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলনের ফাঁকে আগামীকাল শুক্রবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। দুই প্রতিবেশী দেশের নেতাদের মধ্যে বৈঠক আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঢাকা ও দিল্লির কর্মকর্তারা। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এটাই হবে ইউনূস–মোদির প্রথম সাক্ষাৎ।

ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো দুই নেতার বৈঠকের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে। জানতে চাইলে ব্যাংকক থেকে পররাষ্ট্রসচিব মো.

জসীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠক যে হতে চলেছে, সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিতভাবে আশাবাদী।’

রোহিঙ্গা সঙ্কট ও সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান গতকাল বুধবার সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, বিমসটেক সম্মেলন ২০২৫ সাতটি প্রধান আঞ্চলিক সহযোগিতা স্তম্ভের ওপর গুরুত্ব দেবে। এগুলো হলো: ১. বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উন্নয়ন ২. পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন ৩. নিরাপত্তা ৪. কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা; ৫. জনগণের মধ্যে সংযোগ ৬. বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন ৭. কানেক্টিভিটি।

খলিলুর রহমান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। অধ্যাপক ইউনূস সম্মেলনের সময় দুটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।

আগামীকাল ৪ এপ্রিল এ সম্মেলনের শেষের দিন বিমসটেকের পরবর্তী চেয়ারম্যানের পদ থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে অর্পিত হবে। প্রধান উপদেষ্টা ৪ এপ্রিল ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব মসট ক

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ