মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সিডিখান ইউনিয়নের ডিমচর গ্রামের ইউনুস সরদার (৫০) নামে এক কৃষকের কবজি বিচ্ছিন্ন করেছে দুর্বৃত্তরা। নিজ বাড়িতে লুটপাট চালানোর সময় বাধা দেওয়ায় হামলাকারীরা তাঁর হাত কেটে নেয়। শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।

ইউনুস ওই গ্রামের মফিজ সরদারের ছেলে। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে দুর্বৃত্তরা অতর্কিত ইউনুস সরদারের ঘরে ঢুকে লুটপাট শুরু করে। বাধা দিতে গেলে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তারা ইউনুসকে গুরুতর জখম করে। একপর্যায়ে তাঁর হাত বিচ্ছিন্ন করে ফেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ সময় বাধা দিতে এলে ইউনুসের স্ত্রী শাবনুর বেগমকেও পিটিয়ে জখম করে তারা। স্বামী-স্ত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

এ বিষয়ে ইউনুসের স্ত্রী শাবনুর বেগম বলেন, ‘হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করব। আমার স্বামীর হাত যারা কেটে ফেলেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার চাই। স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে না গেলে হয়তো প্রাণে মেরে ফেলত তারা।’

ভুক্তভোগী ইউনুস সরদার বলেন, ‘কিছুদিন আগে শাহীন রাঢ়ি ও তাঁর লোকজন তাঁকে এলাকায় ঢুকতে নিষেধ করেন। তাদের কথা না মেনে এলাকায় যান তিনি। পরে হুমকিদাতারা তাঁর ওপর হামলা চালান। এমনকি চিকিৎসা নিতে যাওয়ার সময়ও তাদের ওপর আক্রমণের চেষ্টা হয়। হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন তিনি।’ 

কালকিনি থানার ওসি সোহেল রানা বলেন, কারা কেন হামলা চালিয়েছে, বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হামলাকারীদের শনাক্তে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। ঘটনা তদন্ত করা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরদ র ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ