ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডে শুয়ে আছে শিশু আবিদা সুলতানা। তার পেটে বুলেটের গভীর ক্ষত, শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্ট হচ্ছে। গুলি লাগার ১৫ ঘণ্টা পর শুধু একবার চোখ খুলেছিল শিশুটি। তখন আমার দিকে তাকিয়ে একবার শুধু বলেছিল, ‘মা, আমি কিছু খাব।’ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বসে কান্না ভরা কণ্ঠে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন শিশুটির মা।

তিনি বলেন, ১ তারিখ সন্ধায় মেয়ের পেটে গুলি লাগে আর হাসপাতালের বিছানায় পরদিন সকাল ১০টার দিকে একবারে জন্য চোখ খুলে মেয়েটা খেতে চায়।

ছয় বছর বয়সী আবিদার বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকার বশিকপুর গ্রামে। গত মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবেশী অহিদ উদ্দিন গুলি চালায় আবিদাকে লক্ষ্য করে। গুলি তার পেটে ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়। অহিদের বাড়ির উঠানে তার মেয়ের সঙ্গেই খেলা করছিল আবিদা। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এলাকায় বিরোধের জেরে ঘটেছে নির্মম এ ঘটনা। 

শিশুটির বাবা ইব্রাহিম খলিল তখন বাড়িতে ছিলেন না। খবর পেয়ে ছুটে আসেন। মেয়েকে কোলে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতে কেবল বলছিলেন, ‘চোখ বন্ধ করিস না, তুই কিছু বল, বাবা।’ আবিদার মা আমেনা বেগম কাঁদতে কাঁদতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার মেয়ে তো কারও ক্ষতি করেনি। সে তো খেলছিল জেরিনের (অহিদের মেয়ে) সঙ্গে। হঠাৎ অহিদ এসে গুলি করল। আমি জানালা দিয়ে ডাকছিলাম মেয়েকে–সে তো জানত না ওর জন্য মৃত্যু অপেক্ষা করছে।’

তিনি জানান, ঘটনার দিন বিকেলে কয়েকজন মোটরসাইকেলে এসে অহিদের বাড়িতে ঢোকে। কিছুক্ষণ পরে ভয়াবহ সেই মুহূর্ত। অহিদ ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে আমগাছের নিচে খেলা করতে থাকা আবিদাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পরে সে মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করে চিকিৎসার জন্য দিতে চেয়েছিল। 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা.

ফকির আমিরুল ইসলাম সোহেল জানিয়েছেন, আবিদার ফুসফুস, কিডনি ও লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তাকে বাঁচাতে চেষ্টা চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে অহিদ উদ্দিন এবং ইব্রাহিম খলিলের ভাই ছোট ইউসুফের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। একে কেন্দ্র করে গুলি চালানো হয়েছে। শিশুটি হাসপাতালে নেওয়ার সময় বলছিল– ‘আমাকে অহিদ গুলি করেছে।’ এক পর্যায়ে তার চোখ বন্ধ হয়ে আসে। মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় দেখা দেয় উত্তেজনা।

এ ঘটনায় চন্দ্রগঞ্জ থানায় দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে অহিদ উদ্দিন, তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বেগম আঙ্কুরী ও ছেলে মো. ফাহিমকে। পুলিশ আঙ্কুরীকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্য দু’জন পলাতক।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: লক ষ ম প র

এছাড়াও পড়ুন:

সেরা তিন প্রফেশনাল কোর্স

বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে নিজেদের যোগ্য করে তুলতে প্রফেশনাল কোর্সের গুরুত্ব অপরিসীম। সঠিক কোর্স নির্বাচন আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখতে সাহায্য করবে। এখানে তিনটি  গুরুত্বপূর্ণ প্রফেশনাল কোর্স সম্পর্কে আলোচনা করা হলো যা আপনার ক্যারিয়ারকে নতুন মাত্রা দিতে পারে:
ডেটা সায়েন্স এবং মেশিন লার্নিং 

প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ডেটার ব্যবহার বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ডেটা সায়েন্স এবং মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে বিশাল পরিমাণ ডেটা বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই কোর্সে আপনি শিখবেন:
প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ: 
পাইথন (Python) বা আর (R)-এর মতো প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করে ডেটা বিশ্লেষণ।
পরিসংখ্যান: ডেটা বিশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যানিক ধারণা।
মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম: ডেটা থেকে প্যাটার্ন শেখা এবং ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য বিভিন্ন অ্যালগরিদম।
ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন: ডেটাকে সহজে বোঝার জন্য গ্রাফ বা চার্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করা।
ডেটা সায়েন্টিস্ট, মেশিন লার্নিং ইঞ্জিনিয়ার, ডেটা অ্যানালিস্ট-এর মতো পদগুলোতে এই কোর্সের চাহিদা অনেক বেশি।

প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট 
যে কোনো প্রতিষ্ঠানে সফলভাবে কোনো প্রজেক্ট সম্পন্ন করার জন্য দক্ষ প্রজেক্ট ম্যানেজারের প্রয়োজন হয়। এই কোর্সটি আপনাকে প্রজেক্ট পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন এবং পর্যবেক্ষণ করার কৌশল শেখাবে। এখানে আপনি যা শিখবেন:
প্রজেক্ট লাইফসাইকেল: 
একটি প্রজেক্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ।
রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট: প্রজেক্টের জন্য প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ, অর্থ ও উপকরণের সঠিক ব্যবহার।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা (Risk Management): প্রজেক্টে সম্ভাব্য ঝুঁকি চিহ্নিত করা ও তা মোকাবিলা করার কৌশল।
যোগাযোগ দক্ষতা: প্রজেক্ট টিমের সদস্য ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন।
প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট টুলস: বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে প্রজেক্ট ট্র্যাক করা।
এই কোর্স শেষ করে আপনি প্রজেক্ট ম্যানেজার, প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর, বা প্রজেক্ট লিডার হিসেবে কাজ করতে পারবেন। পিএমপি (PMP) সার্টিফিকেশন এই ক্ষেত্রে অত্যন্ত মূল্যবান।

সাইবার সিকিউরিটি 
ডিজিটাল বিশ্বে সাইবার হামলার ঝুঁকি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তাই বিভিন্ন সংস্থা তাদের ডেটা ও সিস্টেম সুরক্ষিত রাখতে সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ দিচ্ছে। এই কোর্সে আপনি শিখবেন:
নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি: 
কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে সুরক্ষিত রাখার কৌশল।
ইনফরমেশন সিকিউরিটি: গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
এথিক্যাল হ্যাকিং: সিস্টেমের দুর্বলতা খুঁজে বের করে তা সমাধানের উপায়।
ক্রিপ্টোগ্রাফি: ডেটাকে এনক্রিপ্ট করে সুরক্ষিত রাখা।
ইনসিডেন্ট রেসপন্স: সাইবার হামলা হলে তা মোকাবিলা করার কৌশল। v
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ