সমঝোতার জন্য অর্ধশতাধিক দেশ যোগাযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে
Published: 6th, April 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের পর অর্ধশতাধিক দেশ বাণিজ্য আলোচনা শুরু করার জন্য হোয়াইট হাউসের সাথে যোগাযোগ করেছে। মার্কিন জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের পরিচালক কেভিন হ্যাসেট এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন।
বুধবার ট্রাম্প তার ঘোষিত ‘মুক্তি দিবসে’ শুল্ক নীতি প্রকাশ করেন। তার এই নীতির ফলে প্রায় প্রতিটি দেশের পণ্যের ওপর ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি কর আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিতে বড় ধরনের নড়াচড়া শুরু করেছে। চীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করেছে। এসব ঘটনা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধ ও মন্দার আশঙ্কা তৈরি করেছে।
কেভিন হ্যাসেটের জানতে চাওয়া হয়েছিল, শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের আর্থিক বাজারকে বিপর্যস্ত করার কৌশলের অংশ কিনা যাতে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভকে সুদের হার কমাতে চাপ দেওয়া যায়।
হ্যাসেট বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর কোনো ‘রাজনৈতিক বলপ্রয়োগ’ থাকবে না।
অবশ্য শুক্রবার ট্রুথ সোশ্যালের একটি পোস্টে ট্রাম্প একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, তার শুল্ক আরোপের লক্ষ্য ছিল ইচ্ছাকৃতভাবে শেয়ার বাজারকে আঘাত করা, যাতে সুদের হার কমাতে বাধ্য করা যায়।
তিনি জানিয়েছেন, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে এখনো পর্যন্ত ‘৫০টিরও বেশি’ দেশ বাণিজ্য আলোচনা শুরু করার জন্য হোয়াইট হাউসের সাথে যোগাযোগ করতে বাধ্য হয়েছে।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে রবিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনার ভিত্তি হিসাবে শূন্য শুল্কের প্রস্তাব দিয়েছেন, পারস্পরিক ব্যবস্থা আরোপের পরিবর্তে বাণিজ্য বাধা অপসারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং বলেছেন যে তাইওয়ানের কোম্পানিগুলো তাদের মার্কিন বিনিয়োগ বাড়াবে। এছাড়া ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামসহ অনেক দেশই মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক হ্রাসের ঘোষণা দিয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ল ক আর প আর প র
এছাড়াও পড়ুন:
সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাণিজ্য-বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে: ঢাকা চেম্বার
বাংলাদেশ ব্যাংকের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা তৈরি করতে পারে বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। সংস্থাটি বলছে, কড়াকড়ি মুদ্রানীতির প্রভাবে ঋণপ্রবাহ কমে যাওয়ায় দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে ডিসিসিআই জানায়, ২০২৫ সালের জুনের শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে ৬.৪ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ ধারা অর্থনীতির জন্য উদ্বেগজনক। চেম্বার মনে করে, ব্যবসায়িক পরিবেশে অনিশ্চয়তা, আইন-শৃঙ্খলার চ্যালেঞ্জ, জ্বালানি সরবরাহে ঘাটতি এবং কঠোর মুদ্রানীতির কারণে ঋণ প্রবৃদ্ধির নিম্নমুখী ধারা আরো তীব্র হচ্ছে।
ডিসিসিআই আরো জানায়, ঋণ প্রবাহ সংকুচিত হওয়ার ফলে খেলাপি ঋণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকায়, যা ব্যাংকিং খাতে মোট বকেয়া ঋণের প্রায় ২৭.০৯ শতাংশ। এ পরিস্থিতি আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ব্যবসায়িক আস্থা হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিসূদ হার ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত রেখেছে-যা ক্ষুদ্র, কুটির, ছোট ও মাঝারি শিল্পসহ উৎপাদনমুখী খাতগুলোর জন্য বড় চাপ তৈরি করছে বলে মনে করে ডিসিসিআই। সংস্থাটির ভাষ্য, দীর্ঘমেয়াদি উচ্চ সুদের হার উৎপাদন ও বিনিয়োগ খাতে ঋণের ভার বাড়াচ্ছে, ফলে সামগ্রিক অর্থনীতির গতিশীলতা ব্যাহত হচ্ছে।
চলতি মুদ্রানীতিতে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২৫) বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আরো কমিয়ে ৭.২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে আগের ছয় মাসে তা ছিল ৯.৮ শতাংশ। বিপরীতে সরকার খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ২০.৪ শতাংশ করা হয়েছে। ঢাকা চেম্বারের মতে, এ ব্যবস্থায় সরকারি খাতের চাহিদা মেটাতে গিয়ে বেসরকারি খাতের জন্য আর্থিক খরচ ও প্রতিযোগিতা উভয়ই বেড়ে যাবে।
এ অবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে নীতিসূদ হার হ্রাস এবং ঋণ গ্রহণের শর্তাবলি সহজ করার আহ্বান জানিয়েছে ডিসিসিআই। তারা সৎ ঋণগ্রহীতাদের রক্ষায় সহায়তা এবং তাৎক্ষণিক খেলাপি শ্রেণিতে পড়া এড়াতে ঋণ শ্রেণিবিন্যাসে সময়সীমা ছয় মাস বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
সংস্থাটি মনে করে, টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে হলে আর্থিক খাতে কাঠামোগত সংস্কার, ঋণ বরাদ্দে স্বচ্ছতা এবং বাজারে তারল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কঠোর নজরদারি অব্যাহত রাখতে হবে।
চূড়ান্তভাবে ডিসিসিআই বলছে, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষা, বেসরকারি খাতে আস্থা পুনরুদ্ধার ও বিনিয়োগ বাড়াতে আরো নমনীয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও খাতভিত্তিক প্রতিক্রিয়াশীল মুদ্রানীতির বিকল্প নেই।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ