মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের পর অর্ধশতাধিক দেশ বাণিজ্য আলোচনা শুরু করার জন্য হোয়াইট হাউসের সাথে যোগাযোগ করেছে।  মার্কিন জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের পরিচালক কেভিন হ্যাসেট এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন।

বুধবার ট্রাম্প তার ঘোষিত ‘মুক্তি দিবসে’ শুল্ক নীতি প্রকাশ করেন। তার এই নীতির ফলে প্রায় প্রতিটি দেশের পণ্যের ওপর ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি কর আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিতে বড় ধরনের নড়াচড়া শুরু করেছে। চীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করেছে। এসব ঘটনা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধ ও মন্দার আশঙ্কা তৈরি করেছে।

কেভিন হ্যাসেটের জানতে চাওয়া হয়েছিল, শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের আর্থিক বাজারকে বিপর্যস্ত করার কৌশলের অংশ কিনা যাতে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভকে সুদের হার কমাতে চাপ দেওয়া যায়।

হ্যাসেট বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর কোনো ‘রাজনৈতিক বলপ্রয়োগ’ থাকবে না। 

অবশ্য শুক্রবার ট্রুথ সোশ্যালের একটি পোস্টে ট্রাম্প একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, তার শুল্ক আরোপের লক্ষ্য ছিল ইচ্ছাকৃতভাবে শেয়ার বাজারকে আঘাত করা, যাতে সুদের হার কমাতে বাধ্য করা যায়।

তিনি জানিয়েছেন, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে এখনো পর্যন্ত ‘৫০টিরও বেশি’ দেশ বাণিজ্য আলোচনা শুরু করার জন্য হোয়াইট হাউসের সাথে যোগাযোগ করতে বাধ্য হয়েছে।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে রবিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনার ভিত্তি হিসাবে শূন্য শুল্কের প্রস্তাব দিয়েছেন, পারস্পরিক ব্যবস্থা আরোপের পরিবর্তে বাণিজ্য বাধা অপসারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং বলেছেন যে তাইওয়ানের কোম্পানিগুলো তাদের মার্কিন বিনিয়োগ বাড়াবে। এছাড়া ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামসহ অনেক দেশই মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক হ্রাসের ঘোষণা দিয়েছে।
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ল ক আর প আর প র

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ