ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরতার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সোমবার রাজধানীসহ সারা দেশে সাধারণ ধর্মঘট কর্মসূচি চলছে।

গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে সোমবার ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিশ্বব্যাপী গড়ে ওঠা আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি সফল করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে সোমবার তাদের কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না।

সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। তারা ‘ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন’, ‘ট্রাম্পের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’ স্লোগান দিচ্ছেন। সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট থেকে তারা নিজ ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নেন। বিক্ষোভে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। 

সায়েন্স ল্যাবরেটরি, এলিফ্যান্ট রোডেও বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।

শাহবাগে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন। বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে মিছিল নিয়ে আসে। কয়েকটি মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করতে দেখা যায়।

বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে, রাজু ভাস্কর্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন।

এদিকে এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জাদুঘর ও শাহবাগ এলাকায় পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের জলকামানের গাড়ি ও প্রিজন ভ্যানও দেখা গেছে।

বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে গুলশানে মার্কিন দূতাবাস এলাকায় মিছিল বের করে একদল তরুণ। মার্কিন দূতাবাসের সামনে মহাসড়কে অবস্থান নেন তারা। এ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

এদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বৈশ্বিক সংহতি জানিয়ে কালীগঞ্জে সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এই বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। 

স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে ও গণহত্যার প্রতিবাদে ধর্মঘট পালন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। উপাচার্য দীলিপ কুমার বড়ুয়ার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীগণ ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে মিছিলে অংশ নেন। সোমবার বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে মিছিলটি বের হয়। এতে ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন, ফ্রি ফ্রি গাজা, নো মোর ইসরায়েল’ ইত্যাদি শ্লোগান দেওয়া হয়।

এদিকে কাঁঠালিয়ায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি) 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল গ জ য় ইসর য় ল এল ক য় স মব র

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে

সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।

শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।

এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।

পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।

শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাহরুখ খান: গণহত্যার সময় বিলিয়নিয়ার হওয়ার অর্থ কী
  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল