কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্ট মার্টিনে উপকূলে অভিযান চালিয়ে ২১৪ জন রোহিঙ্গা বোঝাই একটি ট্রলার জব্দ করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ থেকে ৪৪ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে সাগরে নৌবাহিনীর জাহাজ ‘দুর্জয়’ অভিযান চালিয়ে এফবি কুলসুমা নামের ট্রলারটি জব্দ করে।

বিকেলে ২১৪ রোহিঙ্গাসহ ট্রলারটি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মাছ ধরার ট্রলারে করে রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে পাঠানো হচ্ছিল। ট্রলারের ২১৪ যাত্রীর মধ্যে ১১৮ জন পুরুষ, ৬৮ জন নারী ও ২৮টি শিশু রয়েছে। সবাই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা। ৭ এপ্রিল দিবাগত রাত দুইটার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শাপলাপুর সৈকত দিয়ে ট্রলারটি যাত্রা শুরু করে। আটক ২১৪ জন রোহিঙ্গাকে ওই সৈকত দিয়ে ট্রলারে তোলা হয়। এরপর ট্রলারটি মালয়েশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিপুল লোক বোঝাই ট্রলারটি গভীর বঙ্গোপসাগর দিয়ে যাত্রার সময় নৌবাহিনীর জাহাজ দুর্জয়ের নজরে পড়ে। এ সময় ট্রলারটির গতি রোধ করে রোহিঙ্গাসহ ট্রলারটি জব্দ করা হয়। ট্রলারটিতে জীবন রক্ষার ন্যূনতম সরঞ্জাম, পর্যাপ্ত খাদ্য, পানি ও সুরক্ষাব্যবস্থা ছিল না, যার ফলে গভীর সমুদ্রে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিত। নৌবাহিনীর তাৎক্ষণিক ও কার্যকর পদক্ষেপে এ বিপর্যয় ঠেকানো সম্ভব হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ