খুলনার ডুমুরিয়ায় সরকারি জমিতে নির্মাণাধীন স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার থেকে ডুমুরিয়া বড়বাজারের ওই জমিতে অভিযান শুরু করে প্রশাসন। অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে শনিবার সমকালে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল। এ ছাড়াও একটি খাল অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

উপজেলার বড়বাজার ও ডুমুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সড়কের চালপট্টিসংলগ্ন প্রায় ২০ শতক জমিতে একাধিক ভবন নির্মাণের কাজও শুরু হয়। বড়বাজারে পুরোনো সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ঘেঁষে সরকারি জমিতে ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করেন গোলনা গ্রামের বাসিন্দা জিল্লুর রহমান খান ও ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খান আসলাম হোসেন। তারা সম্পর্কে শ্যালক-দুলাভাই। এ ছাড়া ডুমুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সড়কের চালপট্টিতে সরকারি জমিতে ভবন নির্মাণ শুরু করেন উপজেলার পশ্চিম গুটুদিয়া গ্রামের বাসিন্দা চাল ব্যবসায়ী আবু হানিফ শেখ ও গোলনা গ্রামের বাসিন্দা প্রাক্তন কলেজ শিক্ষক খান আতাউর রহমান।

মঙ্গলবার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.

আসাদুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান শুরুর পর খান আতাউর রহমান, জিল্লুর রহমান খান ও হাবিবুর রহমান নামে আরেক ব্যক্তির স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। দখলদাররা তাদের মালিকানার বিষয়ে কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি বলে নিশ্চিত করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসাদুর রহমান।

এদিকে উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নে চকমথুরাবাদ এলাকায় কাদেরের খালে বালু দিয়ে ভরাট করে মোহাম্মদী হাউজিংয়ের নামে দখলের কাজ চলছিল। একই দিন সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।

গুটুদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ তুহিনুল ইসলাম বলেন, এ খালটি এলাকাবাসীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। চকমথুরাবাদ ও বিলপাবলা নামের দুটি মৌজার পানি স্থানীয় ময়ূর নদী হয়ে এ খাল দিয়ে সাগরে যায়। খালটি সচল করতে ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র রহম ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

এটি ভাগাড় নয়, একটি খাল

প্রথম দৃষ্টিতে এটিকে ভাগাড়ই মনে হবে। অথচ এটি একটি খাল। দখল-দূষণে খালটির এই পরিণতি। দখলের ফলে এর পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। যতটুকু অংশ রক্ষা পেয়েছে, সেখানে আবর্জনার স্তূপ।
খালটি লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার রামগতি বাজারসংলগ্ন। ময়লা-আবর্জনার স্তূপে প্রায় মজে গেছে খালটি। এতে সামান্য বৃষ্টিতেই বাজারে জমে হাঁটুপানি। সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে পড়েন ব্যবসায়ীরা। বছরের পর বছর এভাবে চলতে থাকায় খালের অস্তিত্বই হুমকির মুখে।
সম্প্রতি এ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, রামগতি বাজারসংলগ্ন খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে দুই শতাধিক দোকান। দখলদারদের কবলে পড়ে খালে পানির প্রবাহ নেই। খালে ফেলা হচ্ছে বাজারের আবর্জনা। সেগুলো পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাজারের পানি নিষ্কাশনের জন্য নালা নেই। কিছু অংশে নালা থাকলেও তা মজে গিয়েও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি উপচে পড়ে। বর্ষাজুড়েই জলাবদ্ধ থাকে এলাকাটি। এ সময় মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ে। 
ব্যবসায়ীরা জানান, খালের ওপর দোকানপাট হওয়ায় পানি নিষ্কাশনের জায়গা নেই। যে যার মতো দখল নিচ্ছে। ফলে বাড়ছে জলাবদ্ধতা ও ভোগান্তি। এতে ব্যবসার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। 
বড়খেরী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সাবিদ জানান, বর্ষা মৌসুমে রামগতি বাজারে আসতে ইচ্ছে করে না। কাদামাটির সঙ্গে বাজারের ময়লা-আবর্জনা মিশে চলাচল করাটা কঠিন হয়ে পড়ে।
বাজারের ব্যবসায়ী মতিলাল দাস জানান, বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায় বাজার। দখলদারদের কারণে খাল উপচে পানি ঢুকে বাজারসহ আশপাশের দোকানগুলোতে। খালটি দ্রুত দখলমুক্ত করে সংস্কার করার দাবি তাঁর।
ওষুধ ব্যবসায়ী বিপ্লব মজুমদার জানান, খালটি মজে যাওয়ায় বাজারের পানি নামতে পারে না। বৃষ্টি হলেই তাঁর দোকানে পানি ঢোকে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির সময় তাদের দোকানের ভেতর দিয়ে পানি গড়িয়ে খালে প্রবেশ করে। 
খাল দখল করে দোকানঘর করা রুহুল আমিন জানান, তাঁর দোকানের কিছু অংশ খালের ওপর পড়েছে। সরকার চাইলে তিনি জায়গা ছেড়ে দেবেন।
রামগতি বাজার উন্নয়ন কমিটির সদস্য গরীব হোসেন রাসেল জানান, কলেজের সামনে থেকে রামগতি দক্ষিণ বাজার পর্যন্ত দুই শতাধিক দোকান প্রায় ১৮ বছর ধরে অবৈধভাবে খাল দখল করে আছে। নজরদারি না থাকায় এতগুলো দোকানের মালিক নিজেদের ইচ্ছেমতো সীমানা বাড়িয়ে নিয়েছেন। 
বড়খেরী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও বাজার উন্নয়ন কমিটির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মিজানুর রহমান বলেন, অবৈধ দখলদারদের বারবার সতর্ক করা হয়েছে। উচ্ছেদের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানও হচ্ছে না, খাল সংস্কারও হচ্ছে না। ফলে বাজারে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঝান্টু বিকাশ চাকমা বলেন, খালের ওপর দোকান নির্মাণের অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি। খালের দখল করা ভূমি ইতোমধ্যে সরেজমিন দেখেছেন। দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউএনও সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, খাল দখলদারদের চিহ্নিত করা হয়েছে। শিগগির উচ্ছেদ অভিযান হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসরায়েলের ৯ ভবন ধ্বংস করল ইরান
  • এটি ভাগাড় নয়, একটি খাল