ঢাকায় পাকিস্তানি গায়ক মুস্তাফা জাহিদের কনসার্ট হয়নি, আয়োজক লাপাত্তা
Published: 11th, April 2025 GMT
‘মেলোডি আনলিশড’ শিরোনামের কনসার্টে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছেন পাকিস্তানি শিল্পী মুস্তাফা জাহিদ। কিন্তু কনসার্টের ঘণ্টাখানেক আগে এক ফেসবুক পোস্টে কনসার্ট স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান মেলোডি অ্যান্ড মাইন্ড কমিউনিকেশন। এমনকি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে কনসার্টের শিল্পীরাও যোগাযোগ করতে পারছেন না।
এতে ঢাকার সংগীতশিল্পী এ কে রাহুল, ব্যান্ড লেভেল ফাইভ ও এনকোরের অংশ নেওয়ার কথা ছিল। ঢাকার শিল্পীরাও জানেন না, কনসার্টটির ভবিষ্যৎ কী! অনেকে অভিযোগ করেছেন, ভেন্যু নিশ্চিত না করেই টিকিট বিক্রি করেছে আয়োজক প্রতিষ্ঠানটি।
কনসার্ট স্থগিতের বিষয়ে জানতে আয়োজক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। ঢাকার একাধিক শিল্পী জানান, বিষয়টি শুধু বিব্রতকর নয়, লজ্জারও।
এ কে রাহুল আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা দেশের শিল্পীসমাজের জন্য লজ্জার। একজন বিদেশি অতিথি এসেছেন, গতকাল প্র্যাকটিসও করেছেন। কনসার্টের পূর্বমুহূর্তে যদি কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ না করে এমন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তবে তা খুবই হতাশাজনক।’
ব্যান্ড লেভেল ফাইভের ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফিস আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘এর আগে যখন কনসার্ট স্থগিত করা হয়, আমাদের অনেক আগেই জানানো হয়েছিল। কিন্তু এবার আমাদের কিছুই জানায়নি আয়োজক প্রতিষ্ঠান। কয়েক দিন ধরে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেয় প্রতিষ্ঠানটি, এমনকি গতকাল আমাদের কিছু পেমেন্ট করার কথা থাকলেও তা করেনি তারা। তখন থেকেই কিছুটা আঁচ পেয়েছিলাম আমরা। এটা ভালো উদাহরণ হয়ে রইল না।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘বন্দে মাতরম’ নিয়ে সরব মোদি কেন শেষ পর্যন্ত চুপসে গেলেন
ভারতের নির্বাচন কমিশন ও তার কাজ–সম্পর্কিত পাঁচটি প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে মুখোমুখি বিতর্কে বসার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী। কিন্তু অমিত শাহ তা গ্রহণ করলেন না। নির্বাচন ঘিরে কমিশনের (ইসি) এখতিয়ার এবং ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন পদ্ধতি (এসআইআর) নিয়ে বিরোধীদের তোলা প্রশ্নের উত্তরগুলো তাই অনুচ্চারিতই রয়ে গেল।
এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর আজ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন দেয়নি। লোকসভার দুই দিনের বিতর্ক শেষেও তা পাওয়া গেল না। বিতর্ক ঘিরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জবাব কার্যত রাজনৈতিক হয়ে রইল।
লোকসভার শীতকালীন অধিবেশনের শুরু থেকেই বিরোধীরা এসআইআর নিয়ে আলোচনার দাবি তুলেছিলেন। অন্যদিকে সরকার চাইছিল জাতীয় গান ‘বন্দে মাতরম’–এর সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে আলোচনা করতে। বিরোধীরা সরকারের দাবি মেনে নেওয়ায় সরকারও বাধ্য হয় বিরোধীদের দাবি মানতে।
তবে আলোচনা শুধু ‘এসআইআর’–এর মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সরকার ঠিক করে, বিতর্কের বিষয়বস্তু হবে ‘নির্বাচনী সংস্কার’। সরকার জানায়, প্রথমে আলোচিত হবে ‘বন্দে মাতরম’, পরে নির্বাচনী সংস্কার।
বিরোধীরা বলেন, আরএসএসের সদর দপ্তর ও শাখাগুলোতেও ‘বন্দে মাতরম’ গান গাওয়া হয়নি। এমনকি বহু বছর আরএসএস শাখা ও সদর দপ্তরে স্বাধীন দেশের জাতীয় পতাকাও তোলা হয়নি।বিজেপি ও সরকার ‘বন্দে মাতরম’ বিতর্কে কোণঠাসা করতে চেয়েছিল প্রধানত কংগ্রেসকে। তাদের অভিযোগ ছিল, কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রধানত জওহরলাল নেহরু ‘বন্দে মাতরম’ গানের অঙ্গচ্ছেদের জন্য দায়ী এবং সেটি তিনি করেছিলেন মুসলিম লিগ ও মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর চাপে। তাদের মতে, ওটা ছিল কংগ্রেসের ‘মুসলিম তোষণের’ বড় প্রমাণ।
কিন্তু লোকসভা ও রাজ্যসভার বিতর্কে দেখা গেল, সব বিরোধী দল ‘বন্দে মাতরম’ প্রশ্নে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়াল, এমনকি বিজেপির শরিক জেডিইউ পর্যন্ত। প্রত্যেকেই তথ্য দিয়ে জানাল, ‘বন্দে মাতরম’–এর প্রথম দুই স্তবক রেখে বাকিগুলো না গাওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল খোদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। তাঁর সঙ্গে পূর্ণ সহমত হয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী, সরদার বল্লভভাই প্যাটেল, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, বাবাসাহেব আম্বেদকরেরা।
দ্বিতীয়ত, প্রত্যেক বিরোধী বক্তা এই বিতর্কে বিজেপিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করান, স্বাধীনতা সংগ্রামে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) বিন্দুমাত্র ‘ইতিবাচক ভূমিকা’ না থাকার অপরাধে। এই অভিযোগেও বিজেপিকে বিদ্ধ হতে হলো যে তারাও বহু বছর পর্যন্ত ‘বন্দে মাতরম’ উচ্চারণ করেনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাষণ, যিনি ‘বন্দে মাতরম’-এর স্রষ্টা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ‘বঙ্কিমদা’, বিপ্লবী পুলিনবিহারী দাসকে ‘পুলিন বিকাশ’ ও সূর্য সেনকে ‘মাস্টার’ বলে অভিহিত করে ক্ষীণ ‘ইতিহাসজ্ঞানের’ পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি নিজেকে হাস্যাস্পদও করে তুলেছেন।বিরোধীরা বলেন, আরএসএসের সদর দপ্তর ও শাখাগুলোতেও ‘বন্দে মাতরম’ ওই গান গাওয়া হয়নি। এমনকি বহু বছর আরএসএস শাখা ও সদর দপ্তরে স্বাধীন দেশের জাতীয় পতাকাও তোলা হয়নি। একের পর এক বিরোধী নেতা বরং বলেছেন, কংগ্রেস নেতা–কর্মীরা যখন ‘বন্দে মাতরম’ গাইতে গাইতে ফাঁসির মঞ্চে এগিয়ে গেছেন, আরএসএস তখন ব্রিটিশ শাসকদের ‘পক্ষে’ কাজ করেছে।
অমিত শাহ ভোট চুরির অভিযোগ তুললেন জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরার বিরুদ্ধে