ফতুল্লার নয়ামাটি এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় ৪ জন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন- মো. কালা চাঁন, আব্দুস সালাম, মনির হোসেন (মনু) ও আলী হোসেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. কালা চাঁন শনিবার (১২ এপ্রিল) বাদি হয়ে দুই জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১২জনের নাম উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। 

অভিযুক্তরা হলো- ফতুল্লার নয়ামাটি কুতুবপুর এলাকার মৃত জিন্নত আলির ছেলে গোলাজার হোসেন ও পূর্ব লামাপাড়া রুপসী গার্মেন্টস এলাকার মো.

কালু মিয়া। অভিযোগে বাদি উল্লেখ করেন অভিযুক্তরা আওয়ামী লীগ পরিপন্থী, ভূমিদস্যু ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। 

অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, ভুক্তভোগী আহত মো. কালাচানের সাথে অভিযুক্তদের পূর্ব বিরোধ রয়েছে। এর জের ধরে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১০টার দিকে অভিযুক্তরা নয়ামাটি ব্রিজের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তারা মো. কালা চাঁন ও তার সাথে থাকা আব্দুস সালাম, মনির হোসেন (মনু) ও আলী হোসেনকে পিটিয়ে মারধর করে গুরুতর আহত করে। 

এসময় অভিযুক্তরা রাজনৈতিক ভয় ভীতি প্রদর্শণসহ হুমকি প্রদান করে আইনশৃংখলাবাহিনীর লোকজনকে দিয়ে তাদের হয়রানী করবে, বাড়িতে ঘুমাতে দিবেনা, জেলের ভাত খাইয়ে ছাড়ব । 

একপর্যায়ে তাদের ডাক চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসতে থাকলে সন্ত্রাসীরা এ ঘটনায় থানা পুলিশ করলে খুন করে লাশ গুম করে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়।  

অভিযোগে ভুক্তভোগী আহত মো. কালাচান আরও উল্লেখ করেন এ ঘটনার পর থেকে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এছাড়াও অভিযুক্ত সন্ত্রাসীরা ভবিষ্যতের বড় ধরনের ক্ষতি সাধান করতে পারেন বলেও তিনি আশংকা করছেন। 
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ উল ল খ

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ