ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ মামলা দেখিয়ে গ্রেপ্তার করে টাকা আদায়, সংঘর্ষে আহতদের মামলা না নেওয়া, ফসলি জমি কাটায় জব্দকৃত ট্রাক্টর টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। তার এহেন কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, ৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় বিজয়নগরের চান্দুরা থেকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন ও তার ভগ্নিপতি মো.

সালমানসহ চারজনকে আটক করেন ওসি। এক লাখ ৫ হাজার টাকা নিয়ে তাদের মারধর করে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ১৫ রমজানের দিন উপজেলার ভিটিদাউদপুর গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় রত্না আক্তারের ভাই সোহরাব মিয়া আহত হলে ওসি মামলা নেননি, বরং প্রতিপক্ষের মামলা নিয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে মধ্যরাতে হরষপুর থেকে দুটি ট্রাক্টর জব্দ করার পর এক লাখ টাকা নিয়ে ওসি এসব ছেড়ে দেন। দ্বিতীয় দফায়, আরো তিনটি ট্রাক্টর জব্দের পর ৬৭ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন।

ভুক্তভোগী সাজ্জাদ হোসেন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, ‘‘চাচাতো ভগ্নিপতি মো. সালমানকে সৌদিআরবে পাঠানোর জন্য বিজয়নগরের কাঠমিস্ত্রি ও ফার্নিচার ব্যবসায়ী সালাম মিয়ার কাছে যাওয়ার সময় ওসি গাড়ি থামান। তল্লাশির সময় এক লাখ ১০ হাজার টাকা পাওয়া গেলে, ভগ্নিপতিকে মারধর করে থানায় নিয়ে যান। পরদিন ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার করে জামিন নেন। যদিও টাকা ফেরত দিতে ভিডিও করা হয়, তবু মাত্র ৫ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়।’’ 

বিজয়নগরের সাতগাঁও উত্তরপাড়া গ্রামের শাহীন মিয়া জানান, ঈদের দিন সকালে পূর্ববিরোধের কারণে সাতজন তাকে মারধর করেন। এই ঘটনায় ওসি মামলা নথিভুক্ত করেননি। 

ভিটিদাউদপুর গ্রামের রত্না আক্তার অভিযোগ করেন, বিদ্যুতের সংযোগ নিয়ে পূর্ববিরোধে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। তার ভাই সোহরাব মিয়াকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তবে, ওসি প্রতিপক্ষের মামলা নেন এবং তাদের মামলা নথিভুক্ত করেননি। 

সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের নোয়াবাদী গ্রামের সালমা সুলতানার মাথায় ও হাতে দা দিয়ে কোপ দেয় প্রতিবেশী মাচ্চু মিয়া, তবে ওসি প্রথমে মামলা নথিভুক্ত করেননি। পরে, ভাতিজার মাধ্যমে তিনদিন পর মামলাটি নথিভুক্ত করেন।

এক গ্রামবাসী জানান, ফেব্রুয়ারিতে ওসি রওশন আলী দুটি ট্রাক্টর জব্দ করেন এবং এক লাখ টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন। পরবর্তী সময়ে, আরো তিনটি ট্রাক্টর জব্দ করা হলে ৬৭ হাজার টাকা নিয়ে ছাড় দেয়। 

বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তী ইউনিয়নের খাবিবুর রহমান মনির এবং চান্দুরা ইউনিয়নের সাতগাঁ গ্রামের মিলন মৃধা ফেসবুকে ওসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন এবং দ্রুত ওসির প্রত্যাহারের দাবি জানান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতের আইনজীবী নাসির মিয়া বলেন, ‘‘ওসি যদি মামলা নথিভুক্ত না করেন, তাহলে তাকে নোট দেওয়া উচিত।’’ 

তবে, বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রওশন আলী অভিযোগগুলোর সত্যতা অস্বীকার করেন। পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘‘যদি পুলিশের কেউ কোনো অপরাধ বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

চট্টগ্রাম পুলিশ রেঞ্জের ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ বলেন, ‘‘ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’’

ঢাকা/মাইনুদ্দীন/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব জয়নগর এক ল খ ব দ কর ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

কনকনে শীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাফ ম্যারাথনে ৩৫০ জন

কনকনে শীত নিয়ে এসেছে হিমেল হাওয়া। ঘরের বাইরে বেরোলেই সেই হাওয়া শরীরে কাঁপন ধরায়। এমন আবহাওয়ার মধ্যে আজ শনিবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের তিতাস নদীর প্রথম সেতু এলাকায় জড়ো হন বিভিন্ন জেলার ৩৫০ দৌড়বিদ। সেখানে তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে ছিলেন বয়োজ্যেষ্ঠ ও শিশুরাও। তবে উচ্ছ্বাস প্রকাশে যেন কেউ কারও থেকে কম নয়। হাফ ম্যারাথনে অংশ নিতেই তাঁদের এই জমায়েত।

আজ সকালে এই হাফ ম্যারাথনের আয়োজন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটি (বিআরসি)। আয়োজকেরা জানান, চার পর্যায়ের দূরত্বে এই হাফ ম্যারাথন দৌড় হয়। এর মধ্যে ছিল ২ কিলোমিটার, ৫ কিলোমিটার, ১০ কিলোমিটার ও ২১ কিলোমিটার।

আয়োজক, অংশগ্রহণকারী ও স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, সূর্য ওঠার আগেই ভোর পাঁচটা থেকে সাড়ে পাঁচটার মধ্যে দৌড়বিদেরা জেলা শহরের তিতাস নদীর প্রথম সেতুর ওপর জড়ো হতে শুরু করেন। সকাল ৬টায় প্রথমে ২১ কিলোমিটার ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণকারীরা সেখান থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে ৫ ও ১০ কিলোমিটারের দৌড়বিদেরা রওনা দেন। সর্বশেষ সকাল ৭টায় শিশুদের দুই কিলোমিটারের দৌড় শুরু হয়।

২১ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নেন ৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৪ জন ও নারী একজন। ১০ কিলোমিটারে অংশগ্রহণ করেন ১৬৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৬৬ জন ও নারী দুজন। ৫ কিলোমিটারে অংশ নেন ৭৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৪ জন ও নারী ১০ জন। ২ কিলোমিটার দৌড়ে ৪৩ জন শিশু অংশ নেয়।

দৌড় প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বয়সী দৌড়বিদের পাশাপাশি ভারত, জাপান, নেপাল ও ডেনমার্কের চারজন অংশ নেন। জেলা শহরের তিতাস নদীর ওপর নির্মিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলার সংযোগ সড়ক কালীবাড়ি মোড় থেকে বিজয়নগরের নূরপুর জিসি সড়ক (সিমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া) পথে দৌড়বিদেরা ছড়িয়ে পড়েন। নির্দেশিত পথ ধরে প্রত্যেকে নিজের নির্ধারিত দূরত্ব অনুযায়ী দৌড় সম্পন্ন করেন।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মুহাম্মদ আবদুল মতিন বলেন, ‘১০ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নিয়েছি। ভালো লাগছে। হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত হাঁটা ও দৌড়ের বিকল্প নেই।’

দৌড় শেষের ফিনিশিং লাইনে পৌঁছান এক দৌড়বিদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাদির ওপর গুলিবর্ষণে জড়িত ব্যক্তিদের পালানো ঠেকাতে সীমান্তে টহল জোরদার
  • ওসমান হাদিকে গুলি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে বিজিবির সতর্কতা জারি
  • কনকনে শীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাফ ম্যারাথনে ৩৫০ জন
  • গুলি হাদির মাথার ডান দিক দিয়ে ঢুকে বাঁ দিকে বেরিয়ে গেছে: ডিজি
  • ঢাকা মেডিকেল থেকে এভারকেয়ারে নেওয়া হচ্ছে হাদিকে
  • ওসমান হাদিকে গুলির বিষয়ে তদন্ত করবে ইসি 
  • ওসমান হাদি ‘লাইফ সাপোর্টে’: ঢাকা মেডিকেলের পরিচালকের দপ্তর
  • ওসমান হাদির হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
  • ‘বিজয়নগর আসতেই মোটরসাইকেলে দুজন এসে হাদি ভাইকে গুলি করে’
  • ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ