Samakal:
2025-08-01@09:15:45 GMT

বৎসরের আবর্জনা দূরীভূত হউক

Published: 13th, April 2025 GMT

বৎসরের আবর্জনা দূরীভূত হউক

আজি হইতে নূতন বঙ্গাব্দ ১৪৩২-এর শুভ সূচনা হইল। একই সময়ে চলিতেছে রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়িসহ দেশের পার্বত্য জেলাগুলিতে বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বৈসাবি তথা বৈসু, সাংগ্রাই ও বিজু উৎসব। বাংলা বর্ষকে বিদায় জ্ঞাপনের এই উৎসবটি পার্বত্য চট্টগ্রামে শুরু হইয়াছে শনিবার। আজিকে উহা সমাপ্ত হইবে। বাঙালিদের বর্ষবরণ এবং পাহাড়িদের বৈসাবি উৎসব উপলক্ষে আমরা সমকালের সকল গ্রাহক, পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা জানাই।

বাংলা বর্ষবরণ উৎসবে আদিতে হালখাতারূপী ফসলের খাজনা আদায় প্রাধান্যে থাকিলেও সময়ের পরিক্রমায় তাহা হইয়া উঠে ব্যবসায়ীদের বকেয়া আদায়ের হালখাতা উৎসব, যাহা গ্রাম-গঞ্জ-শহর সর্বত্র এখনও দৃশ্যমান। পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চলে বৈশাখী মেলা বসিবার রীতিও চালু আছে সমানতালে। সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিবিধ অনুষ্ঠানও বাঙালির প্রাণের এই উৎসবের অন্যতম অংশ। আমাদের বিশ্বাস, এই সকল অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়া বৈশাখ বরণে নূতন প্রাণের উচ্ছ্বাস আজিকেও দৃশ্যমান। বৈসাবিতেও আবালবৃদ্ধবনিতা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করিয়া নদীতে ফুল ভাসাইয়া বিগত বৎসরের গ্লানি দূর করিয়া নূতন বৎসরকে আবাহন করেন। নূতন পোশাক পরিধান দুই উৎসবেরই রীতি। প্রতিবেশীগৃহে পদার্পণ, তৎসহিত ঐতিহ্যবাহী খাদ্যদ্রব্য দিয়া অতিথি আপ্যায়নও সাধারণ বৈশিষ্ট্য। ফলে পহেলা বৈশাখ ও বৈসাবি কেবল সামাজিক-সাংস্কৃতিক উৎসব নহে; ইহাদের সহিত অর্থনীতিরও নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। যদি বলা হয়, বর্ষবরণকে কেন্দ্র করিয়া শহর তো বটেই, পল্লী অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও বিচিত্র-বহুমুখী ধারায় প্রবাহিত, তাহা হইলে অতিকথন হইবে না। নূতন পোশাকের সহিত বসতঘর ও কর্মক্ষেত্রের নববিন্যাসের আয়োজন এই সময়ে সমতল এবং পাহাড়েও পরিলক্ষিত হয়। এইবার পহেলা বৈশাখ আসিয়াছে মুসলমানদের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের পর। তজ্জন্য এইবার হয়তো পহেলা বৈশাখের বিকিকিনি পৃথকভাবে দৃশ্যমান নহে। তবে বর্ষবরণে বাহারি পোশাকের প্রদর্শনী কম হইবে না– এই কথা হলফ করিয়া বলা যায়।

বরাবরের ন্যায় বাংলা বর্ষবরণের ঐতিহ্যবাহী আয়োজন রমনার বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠান এইবারও হইতেছে। বৈশাখের প্রথম সূর্যোদয়কালের এই আয়োজন সূচিত হইয়াছিল ১৯৬৭ সালে, যাহা অদ্যাবধি চলমান। ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদারকবলিত বিরূপ পরিস্থিতির কারণে তাহা অনুষ্ঠিত না হইবার ঘটনা বাদ দিলে বলা যায়, এই অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতায় কস্মিনকালেও ছেদ পড়ে নাই। তৎসহিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শোভাযাত্রাও চলিতেছে; যদিও দুঃখজনক বিতর্ক তুলিয়া একেবারে ঠুনকো কারণে উহার নাম বদলাইয়া মঙ্গল শোভাযাত্রার পরিবর্তে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ বলিয়া অভিহিত করা হইয়াছে। রমনা বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠান এবং মঙ্গল শোভাযাত্রা বাংলা বর্ষবরণের সনাতন রীতির অংশ নহে, সত্য। তবে যেই প্রেক্ষাপটে এই দুই অনুষ্ঠান বিশেষত শহুরে বর্ষবরণ উৎসবের সহিত যুক্ত হইয়াছে, উহাও স্মরণে রাখিতে হইবে। সর্বোপরি, যে কোনো জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতিই এক প্রবহমান ধারা। কালে কালে সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীরই প্রয়োজনে উহার রূপ পাল্টায়। এই ক্ষেত্রে শাসক বা কোনো কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চলে না। সমাজে তাহা কীভাবে গৃহীত হইয়াছে, উহাই প্রধান বিবেচ্য। সেই হিসাবে রমনা বটমূলের অনুষ্ঠান ও মঙ্গল শোভাযাত্রা বর্তমানে বাংলা বর্ষবরণ উৎসবের অপরিহার্য অংশ।
প্রতিটি পহেলা বৈশাখেই আমাদের সংকল্প থাকে, সমৃদ্ধ-উন্নত-গর্বিত বাংলাদেশ গঠনের পথ নির্বিঘ্নকরণ এবং সমাজের ঐক্যসূত্র ধরিয়া রাখা। তাই আমাদের প্রত্যাশা, এইবারের পহেলা বৈশাখও আমাদের মধ্যে শান্তি-সম্প্রীতির চেতনা জাগ্রত রাখিবে; ধর্ম-বর্ণ, ধনী-দরিদ্র, জাতিগোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলের অন্তরে নূতন স্পন্দন সৃষ্টি করিবে। সকল ধর্মের মানুষের মিলনের উৎসব বাংলা নববর্ষ। এইবারও তাহা অক্ষুণ্ন থাকিবে। ধর্মীয় সংকীর্ণতা ও সাম্প্রদায়িকতার ভ্রুকুটি উপেক্ষা করিয়া সকলে উৎসবের আনন্দে মাতিবে। নূতন বৎসরের নূতন সূর্যোদয় বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও সমাজের জন্যও নূতন সম্ভাবনা লইয়া আসিবে। সকল অন্ধকার পশ্চাতে ফেলিয়া নূতন বৎসরের আলো সর্বত্র ব্যাপ্ত হইবে। স্বাগত ১৪৩২– এসো হে বৈশাখ, এসো এসো।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন বৎসর র উৎসব র আম দ র হইয় ছ এইব র

এছাড়াও পড়ুন:

দুদিনের সফরে কলকাতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু

ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু দুদিনের সফরে বুধবার কলকাতায় পৌঁছেছেন। বিকেলে তিনি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ও রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু পরে নদীয়া জেলার কল্যাণীতে অবস্থিত অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসের (এইমস) প্রথম সমাবর্তন উৎসবে যোগ দেন। সেখানে তাঁকে সংবর্ধনা জানান এইমসের পরিচালক রামজি সিং। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি কৃতী শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ তুলে দেন।

সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রাষ্ট্রপতি যান দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরে। সেখানে কালীমন্দিরে পূজা অর্চনা করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর কন্যা ইতিশ্রী মুর্মু।

দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও রামকৃষ্ণদেবের বংশধর কৌশিক চক্রবর্তী রাষ্ট্রপতির হাতে মন্দিরে নিবেদিত পদ্মফুল ও প্রসাদ তুলে দেন। পরে রাষ্ট্রপতি রামকৃষ্ণদেবের বসতঘর পরিদর্শন করে রাজভবনের উদ্দেশে রওনা হন।

বৃহস্পতিবার সকালে রাষ্ট্রপতি ঝাড়খন্ড রাজ্যের দেওঘরে যাবেন। সেখানে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এইমস), দেওঘরের প্রথম সমাবর্তন উৎসবে যোগ দেবেন। এ প্রতিষ্ঠানেও এই প্রথমবার সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাইয়ের ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় উৎসব
  • ১৬ কোটি টাকায় সারা দেশে ফুটবলের তিন টুর্নামেন্ট
  • দুদিনের সফরে কলকাতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
  • ভৌতিক গল্প নিয়ে কানাডায় নুহাশ
  • তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
  • সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা
  • ‘মুক্তির উৎসব’ করতে সহযোগিতা চেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাবেক সমন্বয়কের আবেদন
  • এবার পরিবার নিয়ে ঘরে বসেই ‘উৎসব’