2025-06-16@15:49:04 GMT
إجمالي نتائج البحث: 30

«বৎসর র»:

    দেশে পানিতে ডুবিয়া শিশুর প্রাণহানির যেই চিত্র শনিবার সমকালের এক প্রতিবেদনে উঠিয়া আসিয়াছে, উহা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। ঈদুল আজহার ছুটি আরম্ভ হইবার পূর্বের ১০ দিবসেই বিভিন্ন স্থানে ১৫ জন পানিতে ডুবিয়া প্রাণ হারাইয়াছে, যাহাদের মধ্যে ১৩ জন ছিল শিশু। উপরন্তু, ঈদুল ফিতরের পূর্বাপর ১২ ছুটিতে মোট ৪৯ জন অনুরূপভাবে প্রাণ হারাইয়াছে, যথায় শিশুর সংখ্যা ৪৭। এদিকে ফাউন্ডেশন ফর ডিজাস্টার ফোরামের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ঈদুল ফিতরে ৫৮ জন ও ঈদুল আজহায় ৬৫ শিশু পানিতে ডুবিয়া প্রাণ হারাইয়াছিল। এই ধারণা অমূলক নহে যে ঈদের ছুটিতে শহরবাসী অনেকে ছুটিয়া যায় গ্রামাঞ্চলে, যেইখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ শিশুদের আকৃষ্ট করিয়া থাকে। তাহারা পানির আশপাশে খেলার বিপদ সম্পর্কে সচেতন থাকে না, জানে না খাল-বিল, ডোবা-পুকুর কতটা বিপজ্জনক পরিণতি ডাকিয়া আনিতে পারে। গ্রামের বিস্তৃত ও অপেক্ষাকৃত নির্জন পরিবেশে শিশুদের...
    কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সিলেটসহ উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জনজীবন যখন চরম দুর্ভোগে পতিত, তখন সিলেট হইতে আসিল গভীরতর বেদনাদায়ক দুঃসংবাদ। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমসূত্রে জানা যাইতেছে, শনিবার গভীর রাত্রিতে গোলাপগঞ্জ উপজেলার বখতিয়ারঘাট এলাকায় টিলা ধসিয়া এক পরিবারের চারজন ঘুমন্ত অবস্থাতেই প্রাণ হারাইয়াছেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জানাইয়াছেন, কয়েকদিন ধরিয়া টিলাধসের আশঙ্কায় উক্ত এলাকায় মাইকিংযোগে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক করা হইতেছিল। স্পষ্টত, সেই সতর্কবার্তা কাহারও কর্ণকুহরে প্রবেশ করে নাই। আমরা মনে করি, স্থানীয় প্রশাসনও দায়িত্ব উপেক্ষা করিতে পারে না। ভঙ্গুর পাহাড়ের পাদদেশ যে বসবাসের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ– তাহা কাহারও অজানা নহে। কিন্তু ইহাও সত্য, এহেন ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাসকারীরা প্রায় ব্যতিক্রমহীনভাবে দরিদ্র ও অসহায়। প্রাণ হারানো গৃহকর্তারও বিকল্প বাসস্থান ছিল না। নিতান্ত নিয়তির উপর ভরসা করিয়াই যে তিনি সপরিবার প্রশাসনের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও পাহাড়ের পাদদেশে থাকিয়া গিয়াছিলেন,...
    বর্ষা মৌসুম যতই নিকটবর্তী হইতেছে ততই প্রাণঘাতী ডেঙ্গু বিস্তারের শঙ্কা বৃদ্ধি পাইতেছে। রবিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, মে মাসে এই বৎসরের সর্বোচ্চ আক্রান্ত দেড় সহস্রাধিক মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হইয়াছেন। ঋতুচক্রের নিয়ম অনুসারে বর্ষা আসিবার পূর্বে গ্রীষ্মেও বৃষ্টিপাত বিরল নহে। এইবার নিম্নচাপের কারণে ঢাকাসহ সমগ্র দেশেই বর্ষণ চলিতেছে। রহিয়াছে ভ্যাপসা গরমও। বিশেষজ্ঞগণের অভিমত, এইরূপ আবহাওয়া এডিস মশার বংশবৃদ্ধির জন্য খুবই অনুকূল। উপরন্তু ঈদুল আজহার দীর্ঘ বন্ধে বাসাবাড়ি তালাবদ্ধ করিয়া অনেকেই অন্যত্র অবস্থানকারী প্রিয়জনের সান্নিধ্যে যাইবেন বলিয়া নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের অভাবে সেইগুলিও ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার বংশবিস্তারের নিরাপদ ক্ষেত্র হইয়া উঠিতে পারে। ফলে ঈদের পর ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করিবার আশঙ্কা প্রবল। কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কবিরুল বাশারের নেতৃত্বাধীন গবেষক দল ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা জরিপ করিয়া দেখিয়াছে, গত বৎসরের...
    আজ ১ জুন দৈনিক ডান্ডিবার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি, ইত্তেফাকের স্টাফ রিপোর্টার ও নারায়ণগঞ্জ নিউজ পেপার ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি হাবিবুর রহমান বাদলের জন্মদিন। শুভ জন্মদিন।   হাবিবুর রহমান বাদল ১৯৫৭ সালের পহেলা জুন নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ পাক্কা রোডের মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মরহুম মো. ফকির চাঁন মিয়া ও মরহুমা সাহারা খাতুনের ৪ পুত্র, ৪ কন্যার মধ্যে হাবিবুর রহমান বাদল জৈষ্ঠপুত্র। তিনি গলাচিপা প্রাইমারী স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু করেন। নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করার পর ১৯৭৬সালে ঢাকা কলেজে পড়ার সময় খন্ডকালীন সাংবাদিকতা শুরু করেন। এসময় তিনি রাজনীতির সাথে জড়িত থাকাকালে তৎকালিন শিক্ষা উপদেষ্টাকে ঢাকা কলেজের একটি অনুষ্ঠানে প্রবেশে বাধা দিলে গ্রেফতার হন।  ৮২ সাল পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিক কাজ করার পর ১৯৮৩ সালে হাবিবুর...
    পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ খননে বিপুল অর্থ ব্যয় হইলেও উহা অনর্থের কারণ হইয়াছে; নাব্য সংকটে ধুঁকিতে থাকা নদটিকে উদ্ধার করা যায় নাই, উপরন্তু উহার গতিপথ পরিবর্তন হইয়াছে। ইহার জের ধরিয়া নদীভাঙনে বাড়িঘর ও ফসলি জমি হারাইয়া বিপদে পড়িয়াছে অনেক পরিবার। শনিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ তথা বিআইডব্লিউটিএ পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ খননে যেই প্রকল্পের সূচনা করিয়াছে, তাহা চলতি বৎসর শেষ হইবার কথা থাকিলেও প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বৎসর বাড়ানো হইয়াছে। ইতোমধ্যে সহস্রাধিক কোটি টাকা ব্যয় হইলেও নদটির পরিস্থিতির উন্নতি হয় নাই, বরং নূতন সংকট তৈয়ার করিয়াছে। বিষম পরিস্থিতিতে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বহুল উদ্ধৃত উক্তি– ‘এই জীবন লইয়া কী করিব?’ পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের অবস্থাদৃষ্টে আমাদেরও বলিতে হয়– এই খনন লইয়া কী করিব? আমরা জানি, দেশের নদীগুলি সুস্থ নাই এবং...
    দেশে বেকারত্ব বৃদ্ধির যেই চিত্র বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপে উঠিয়া আসিয়াছে, উহা উদ্বেগজনক। সোমবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলমান অর্থবৎসরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাইয়া ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশে উপনীত, যাহা গত বৎসর একই সময়ে ছিল ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। সংখ্যার হিসাবে উক্ত সময়ে দেশে বেকারের সংখ্যা ২৪ লক্ষ হইতে বৃদ্ধি পাইয়া ২৭ লক্ষ ৩০ সহস্রে থিতু হইয়াছে। বিষয়টা উদ্বেগজনক এই কারণে, বেকারত্বের রাজনৈতিক ও সামাজিক অভিঘাত কাহারও জন্য সুখকর নহে। বৈধ আয়ের পন্থা না পাইলে অনেকে জীবিকা নির্বাহে ক্ষেত্রবিশেষে নীতি-নৈতিকতাও বিসর্জন দিতে দ্বিধা করে না। সমাজবিজ্ঞানীরা উহাকেই চৌর্যবৃত্তি, ডাকাতি, রাহাজানির ন্যায় নানাবিধ অপরাধ বিস্তারের মোক্ষম কারণ বলিয়া মনে করেন। এহেন পরিস্থিতি দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতারও জ্বালানিরূপে সাব্যস্ত হইয়া থাকে।  দেশে বেকারত্ব বৃদ্ধির এই চিত্র এমন সময়ে...
    অগ্নিদুর্ঘটনা হইতে চট্টগ্রাম নগরীর সুরক্ষায় পৌনে দুইশত ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ তথা সড়কের ধারে কৃত্রিম জলস্তম্ভ স্থাপন করা হইলেও একটিতেও পানি মিলে নাই। কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় হাইড্রেন্ট খুলিয়া কুষ্ঠ রোগীর শরীর ধুইবার সৌভাগ্য হইয়াছিল বটে, কিন্তু চট্টগ্রাম নগরবাসীর এক দিনের জন্যও সেই সৌভাগ্য হয় নাই। অথচ ছয় বৎসর যাবৎ এই সকল যন্ত্র স্থাপিত হইয়াছিল নগরীর অগ্নিনিরাপত্তায়, যথায় চট্টগ্রাম ওয়াসার গচ্চা গিয়াছে চার কোটি টাকা। বুধবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সহজে অগ্নিনির্বাপণে এই সকল ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ স্থাপন করা হইলেও ব্যবহারের পূর্বেই অচল হইয়া পড়িয়াছে। এমনকি ফায়ার সার্ভিস অগ্নিনির্বাপণে গিয়া ঐ সকল যন্ত্র ব্যবহারের চেষ্টা করিয়াও ব্যর্থ হইয়াছে। ইহাতে স্পষ্ট, কারিগরি ত্রুটি-সংবলিত প্রকল্পটির গোড়াতেই গলদ রহিয়াছে।  প্রশ্ন হইল, চট্টগ্রামে এই সকল যন্ত্র স্থাপনকালে কেন উহার যথার্থতা নিরূপণ করা হয় নাই? বিভিন্ন দেশের নমুনা...
    ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য উদ্ধৃত করিয়া সোমবার সমকাল জানাইয়াছে, ২০১৯-২০ অর্থবৎসরে উপজেলায় আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ছিল ২৬ সহস্রাধিক হেক্টর, যাহা ২০২৫ সালে দাঁড়াইয়াছে ২৩ সহস্র হেক্টর অপেক্ষা কিছু বেশি। অর্থাৎ মাত্র পাঁচ বৎসরে নাসিরনগর উপজেলায় আবাদযোগ্য জমি হ্রাস পাইয়াছে প্রায় তিন সহস্র হেক্টর। বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। কারণ ইহার সরাসরি ফল হইবে কৃষি উৎপাদন হ্রাস এবং প্রধান খাদ্যশস্য চাউলসহ প্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের জন্য বিদেশমুখাপেক্ষিতা বৃদ্ধি। এক কথায় জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ইহা এক প্রকার অশনিসংকেত বলিলে অত্যুক্তি হইবে না। প্রসঙ্গত, কৃষিজমি হ্রাসের সমস্যা নাসিরনগরেই সীমাবদ্ধ নহে। সমগ্র দেশেই বিবিধ কারণে আবাদি জমির পরিমাণ হ্রাস পাইতেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের কৃষি শুমারি-২০১৯ এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, প্রতিবৎসর দেশে আবাদি জমির পরিমাণ হ্রাস পাইতেছে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ হারে। উক্ত শুমারিমতে, ২০০৮...
    বিয়ের আশ্বাসে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন সংক্রান্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশের বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে বিয়ের আশ্বাসে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করার বিধান কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত, অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তাজরুল হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ  রোববার এ রুল জারি করেন। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব এবং নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তানজিলা রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন খান জিয়াউর রহমান। এ প্রসঙ্গে আইনজীবী ইশরাত হাসান সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিশ্রুতি না রাখার কারণে শুধু...
    এই বৎসরও ডেঙ্গু চক্ষু রাঙাইতে শুরু করিয়াছে। অধিকতর উদ্বেগের বিষয় হইল, এইবার মৌসুমের পূর্বেই ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়িতেছে। মার্চ অপেক্ষা এপ্রিলে আক্রান্ত ও মৃত্যু উভয়ই দুই গুণ হইয়াছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য উদ্ধৃত করিয়া শনিবার প্রকাশিত সমকাল জানাইয়াছে, মার্চে ডেঙ্গু লইয়া হাসপাতালে ভর্তি হইয়াছিলেন ৩৩৬ জন, এপ্রিল পর্যন্ত এই সংখ্যা বাড়িয়া হয় ৭০১। পাশাপাশি মার্চে ডেঙ্গুতে মৃত্যুবরণ করেন তিনজন, এপ্রিলে যাহা ছিল সাতজন। উপরন্তু, গত বৎসরের এপ্রিল অপেক্ষাও এই এপ্রিলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। গত বৎসরের এপ্রিলে ডেঙ্গু রোগী ছিলেন ৫০৪ জন, মৃত্যুবরণ করেন দুইজন। এই বৎসর ডেঙ্গু রোগের ক্ষেত্রে আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হইল, মোট রোগীর প্রায় ৫৭ শতাংশ ঢাকার বাহিরের। বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয় ২০০০ সালে। ওই বৎসর এবং তৎপরবর্তী আরও কয়েক বৎসর প্রাণঘাতী রোগটি মূলত রাজধানীতেই সীমাবদ্ধ...
    ম্যালেরিয়া লইয়া উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা অদ্যাবধি দূরীভূত হইল না। শুক্রবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে ১৩ জেলায় প্রাণঘাতী এই রোগটির আধিক্য বর্তমান। তন্মধ্যে বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলায় আক্রান্ত ৮৮ শতাংশের অধিবাস। দেশে গত বৎসর ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয় ১৩ সহস্রাধিক জনের। তন্মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের উক্ত দুই জেলায় শনাক্ত হয় সাড়ে ১১ সহস্র রোগী। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুসারে, ২০২৩ সালে ম্যালেরিয়ায় ছয়জনের মৃত্যু হয়। শনাক্ত হয় ১৬ সহস্র ৬৭৭ রোগী। এই হিসাবে গত বৎসর রোগীর সংখ্যা হ্রাস পাইয়াছে ২০ শতাংশের কিঞ্চিদধিক। তবে ইহাতে আশ্বস্ত হইবার কিছু নাই। কারণ, অধিদপ্তরের হিসাবমতে, ২০২১ সালে ম্যালেরিয়ায় শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৭ সহস্রাধিক এবং এ রোগে মৃত্যুবরণ করে ৯ জন। ২০২২ সালে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা রীতিমতো লম্ফ দিয়া ১৮ সহস্রাধিকে উপনীত; মৃত্যুবরণ করে ১৪ জন। সান্ত্বনার বিষয়, ৮৮ শতাংশ...
    বৃহস্পতিবার হইতে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ অভিযানের সূচনা হইলেও মূল্যের কারণে লক্ষ্যমাত্রা কতখানি পূরণ হইবে, উহা লইয়া শঙ্কার উদ্ভব হইয়াছে। একই দিবসে সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধানের সরকারি মূল্যে কৃষকের শঙ্কা কাটিতেছে না। প্রায় প্রতি বৎসর এই প্রকার সংকট আমরা প্রত্যক্ষ করিতেছি। যাহার ফলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়া এবং বাজারেও সরকার হস্তক্ষেপ করিবার সক্ষমতা অর্জন করিতে পারে না। ইহাতে দীর্ঘ কালব্যাপী চাউলের বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা স্পষ্ট। সমকালের অপর প্রতিবেদন অনুযায়ী, চাউলের মূল্য যতটুকু হ্রাস পায়, বৃদ্ধি পায় তাহার অধিক। তজ্জন্যই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান-চাউল সংগ্রহ করা গুরুত্বপূর্ণ। সরকার এই বৎসর ধান-চাউলের মূল্য গত বৎসর অপেক্ষা কেজিপ্রতি চার টাকা বৃদ্ধি করিয়াছে বটে, বাস্তবতার আলোকে উহা যথার্থ কিনা– সেই প্রশ্ন সমুপস্থিত। সরকার যদিও বলিতেছে, অতিরিক্ত মূল্যে কৃষক লাভবান হইবেন। অবশ্য সরকারি গুদামে ধান প্রদানের...
    রাজধানী ঢাকা যথা বিশ্বের শহরগুলির তালিকায় প্রায়শ বায়ুদূষণের শীর্ষ পর্যায়ে অবস্থান করিয়া থাকে, তথায় নির্মল বায়ুপ্রাপ্তি সহজলভ্য নহে। ঢাকাবাসীর জন্য এই নির্মল বায়ু কতটা বিরল, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানই উহার প্রমাণ। ঢাকায় গত ৯ বৎসরে মানুষ মাত্র ৩১ দিবস নির্মল বায়ুতে নিঃশ্বাস গ্রহণ করিয়াছে। বায়ুর এহেন অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতিতে নগরবাসীর জীবনযাপন কতটা নাজুক, বলিবার অপেক্ষা রাখে না। বস্তুত ঢাকার বায়ুদূষণ এমন ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে উপনীত, উহা প্রায় প্রতিদিন সংবাদমাধ্যমের ‘খবর’রূপে উপস্থাপিত হয়। বিশ্বের অপরাপর শহরের তুলনায় বায়ুদূষণ অধিক হইবার কারণে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের সূচকে কদাচ সর্বাপেক্ষা দূষিত নগরীর মধ্যে শীর্ষস্থানও দখল করিয়া থাকে ঢাকা। কলকারখানার ধোঁয়া, মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি, নির্মাণকার্য, সড়ক খনন, বর্জ্য দহন ইত্যাদি কারণে বায়ু দূষিত হয়। এতদ্ব্যতীত মানবসৃষ্ট বিবিধ কারণও স্পষ্ট। এমনকি খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উদযাপনে যে ব্যাপকভাবে বায়ু দূষিত...
    এবারের বৈশাখ এক নতুন তাৎপর্য নিয়ে উপস্থিত হয়েছে আমাদের জাতীয় জীবনে। দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত জঞ্জাল থেকে মুক্তির আনন্দে উদ্ভাসিত এবারের নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রুটি, বঞ্চনা, গ্লানির অবসানে এক নতুন আশার স্বপ্ন নিয়ে পয়লা বৈশাখের নতুন সূর্য উদিত হচ্ছে। ‘বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক...এসো হে বৈশাখ।’অতীতে ব্যবসায়িক বা অর্থনৈতিক কারণেই পয়লা বৈশাখের গুরুত্ব ছিল। খাজনা পরিশোধ, ব্যবসায়ীদের হালখাতা নবায়ন ইত্যাদি ছিল মূল বিষয়। এই সেদিনও পয়লা বৈশাখে বিভিন্ন দোকান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে পুরোনো খদ্দেরদের নিমন্ত্রণ করা হতো, মিষ্টিমুখ করানো হতো। এখন এ রেওয়াজ আছে কি না, জানি না। যদিও সম্রাট আকবর খাজনা প্রদানের সুবিধার্থে পয়লা বৈশাখের সূচনা করেন, কালক্রমে তা পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের সঙ্গে মিশে গিয়ে আনন্দ ও উৎসবে পরিণত হয়। বাঙালি উৎসবপ্রিয়, যে জন্য কথায় বলে, ‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’—যেকোনো উপলক্ষকে উৎসবে...
    আজি হইতে নূতন বঙ্গাব্দ ১৪৩২-এর শুভ সূচনা হইল। একই সময়ে চলিতেছে রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়িসহ দেশের পার্বত্য জেলাগুলিতে বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বৈসাবি তথা বৈসু, সাংগ্রাই ও বিজু উৎসব। বাংলা বর্ষকে বিদায় জ্ঞাপনের এই উৎসবটি পার্বত্য চট্টগ্রামে শুরু হইয়াছে শনিবার। আজিকে উহা সমাপ্ত হইবে। বাঙালিদের বর্ষবরণ এবং পাহাড়িদের বৈসাবি উৎসব উপলক্ষে আমরা সমকালের সকল গ্রাহক, পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা জানাই। বাংলা বর্ষবরণ উৎসবে আদিতে হালখাতারূপী ফসলের খাজনা আদায় প্রাধান্যে থাকিলেও সময়ের পরিক্রমায় তাহা হইয়া উঠে ব্যবসায়ীদের বকেয়া আদায়ের হালখাতা উৎসব, যাহা গ্রাম-গঞ্জ-শহর সর্বত্র এখনও দৃশ্যমান। পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চলে বৈশাখী মেলা বসিবার রীতিও চালু আছে সমানতালে। সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিবিধ অনুষ্ঠানও বাঙালির প্রাণের এই উৎসবের অন্যতম অংশ। আমাদের বিশ্বাস, এই সকল অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়া বৈশাখ বরণে নূতন প্রাণের উচ্ছ্বাস আজিকেও দৃশ্যমান। বৈসাবিতেও আবালবৃদ্ধবনিতা...
    দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণ কিছুতেই বন্ধ হইতেছে না। শুক্রবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মঙ্গল ও বুধবার দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত পাঁচটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়াছে। যাহার মধ্যে তিনটিই ঘটিয়াছে এক দিনে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নরসিংদীর রায়পুরায় দুই স্কুলছাত্রী ঘুরিতে গিয়া আটজন দ্বারা দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হইয়াছে। একই দিন মধ্যাহ্নে নরসিংদীরই শিবপুর উপজেলার বাঘাব ইউনিয়নের কুন্দারপাড়া গ্রামে এবং রাত্রিকালে নেত্রকোনার আটপাড়ায় ১২ বৎসর বয়সী দুই মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়। বুধবার সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের ভৈরবে চকলেটের প্রলোভন দেখাইয়া ৫ বৎসরের এক শিশুকে ধর্ষণ করা হইয়াছে বলিয়া অভিযোগ। একই দিনে পিরোজপুরের নাজিরপুরে পুত্রবধূকে ঘুমের ঔষধ খাওয়াইয়া ধর্ষণের অভিযোগে শ্বশুরের বিরুদ্ধে মামলা হইয়াছে। শুধু ধর্ষণ নহে; পাবনার ঈশ্বরদী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পাতিলাখালী এলাকায় বুধবার ১১ বৎসরের শিশুকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে...
    শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ বৈশ্বিকভাবে যেই উদাহরণ তৈয়ার করিয়াছিল, উহা এখন ঝুঁকিতে পড়িয়াছে। সোমবার প্রকাশিত সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থ সংকটে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রের সেবা কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়াছে। ১০ মাস ধরিয়া অনেক কেন্দ্রে বিনামূল্যের ঔষধ মিলিতেছে না। এমনকি সন্তান প্রসব-পূর্বকালে জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রমও বন্ধ। মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার হ্রাসের লক্ষ্যেই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠা করা হইয়াছিল। নিম্ন আয়ের অধিকাংশ নাগরিক এই সকল কেন্দ্র হইতে সেবা গ্রহণ করিয়া আসিতেছিল। বর্তমানে যেইভাবে কেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হইতেছে, উহাতে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার বৃদ্ধির স্পষ্ট ঝুঁকি তৈয়ার হইয়াছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের প্রতিবেদনে ২০২৩ সালে যেইখানে দেখা যাইতেছে দেশে শিশু ও মাতৃমৃত্যুহার বৃদ্ধি পাইয়াছে, গত ১০ মাসের চিকিৎসাসেবার অপ্রতুলতায় পরিস্থিতির অবনতি হইবে বলিয়াই আমাদিগের আশঙ্কা। বস্তুত ইউনিয়ন পর্যায়ে...
    বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন সংক্রান্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশের সংশ্লিষ্ট ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে। রিটে ‘বিয়ের প্রলোভনের মাধ্যমে যৌন করিবার দণ্ড’ সম্পর্কিত ওই ধারা কেন বাতিল ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে, সংশোধিত এই ধারাটি সংবিধানের ২৭, ২৮, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।  সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. রাশিদুল হাসান এবং মানবাধিকার সংগঠন ‘এইড ফর ম্যান ফাউন্ডেশন’ পক্ষে হাইকোর্টে এ রিটটি দায়ের করা হয়। পরে রিটকারীদের আইনজীবী ইশরাত হাসান সাংবাদিকদের বলেন, বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালেদী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ সপ্তাহে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে। কার্যতালিকা অনুসারে...
    প্রতি বৎসর ঈদের ছুটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর যেই ‘রেকর্ড’ সৃষ্টি হয়, উহা উদ্বেগজনক। ঈদুল ফিতরের ছুটির কয়েক দিনে অন্তত অর্ধশত প্রাণহানির খবর সংবাদমাধ্যমে আসিয়াছে। সর্বাপেক্ষা ভয়ানক দুর্ঘটনা ঘটিয়াছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে; লোহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় পরপর তিন দিন দুর্ঘটনায় ১৫ প্রাণ ঝরিয়া গিয়াছে। স্থানটি ছয় কারণে মৃত্যুকূপ হইয়া উঠিয়াছে বলিয়া সমকালের প্রতিবেদনে উঠিয়া আসিয়াছে। আমরা বিস্মিত, উক্ত এলাকায় বারংবার দুর্ঘটনা ঘটার পরও সতর্কতা কিংবা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নাই!  দেশে স্বাভাবিক সময়েই সড়কে অনেক প্রাণ ঝরিয়া থাকে। ঈদের সময় যাতায়াত বৃদ্ধির কারণে দুর্ঘটনাও সমগতিতে বৃদ্ধি পায়। তবে প্রতি বৎসর রাজধানী কিংবা অন্যান্য শহর হইতে ঈদযাত্রায় যেই ভোগান্তি আমরা দেখিয়া আসিয়াছি, সেইদিক হইতে এইবার ঈদযাত্রা ছিল বহুলাংশে স্বস্তিদায়ক। তজ্জন্য সড়ক দুর্ঘটনাও নিয়ন্ত্রণে আসিবে বলিয়া আমাদের প্রত্যাশা থাকিলেও পূর্বের ন্যায় দুর্ঘটনা ও...
    আজ আমাদের ৫৫তম স্বাধীনতা দিবস। পাকিস্তানি প্রায়-ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণবিরোধী ২৩ বৎসরের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায়, বিশেষত ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ নিরীহ বাঙালির উপর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পরিচালিত বর্বর হত্যাযজ্ঞের প্রেক্ষাপটে, একই বৎসরের এই দিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়। ইহার ধারাবাহিকতায় প্রায় ৯ মাসব্যাপী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লক্ষ মানুষের শহীদি আত্মদান এবং দুই লক্ষাধিক নারীর অপরিসীম নির্যাতন ভোগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্ররূপে বাংলাদেশ উচ্চ শিরে আপন অস্তিত্ব ঘোষণা করে বিশ্ব-মানচিত্রে। এই দিনে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সহিত স্মরণ করি মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, সম্ভ্রমহারা মাতা-ভগিনি এবং স্বজন হারানো পরিবারসমূহকে। মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতৃবৃন্দ, সকল সেক্টর কমান্ডারসহ রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের। তাহাদের ঋণ আমরা কোনোদিন ভুলিতে পারিব না।  ইহা অনস্বীকার্য, বিশেষ কিছু মহল ব্যতীত জাতি-ধর্ম-বর্ণ...
    আজিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও জাতিসংঘ স্বীকৃত দিবসটি উদযাপিত হইতেছে। রমজানের কারণে অন্যান্য বৎসরের ন্যায় আড়ম্বর না থাকিলেও এই বৎসর দিবসটি উদযাপনের গুরুত্ব কিছুমাত্র কম নহে। বিশেষ করিয়া একদিকে যখন সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এই বার নারী দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করিয়াছে–‘অধিকার, সমতা ও ক্ষমতায়ন/ নারী ও কন্যার উন্নয়ন’ এবং অন্যদিকে অনেকাংশে সরকারেরই জোরদার ভূমিকার অনুপস্থিতে শহরে-গ্রামে নারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার সহিংসতা চলিতেছে, তখন নারী দিবস চিরাচরিত আনুষ্ঠানিকতার ঊর্ধ্বে উঠিয়া আমাদের নিকট বিশেষ তাৎপর্য লইয়া হাজির হয়। আমাদের জানাইয়া দেয় সংবিধানস্বীকৃত নারীর অধিকার, সমতা ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করিবার জন্য এখনও বহু পথ পাড়ি দিতে হইবে। সন্দেহ নাই, এই দেশে বিশেষত গত তিন দশকে রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অগ্রগতি বিশ্বের সমপর্যায়ের তো বটেই, আর্থিক বা অন্যান্য...
    রবিবার এনবিআর-জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রাক-বাজেট বৈঠকে সংবাদপত্রের স্বত্বাধিকারীগণের সংগঠন ‘নোয়াব’ যেই সকল দাবি জানাইয়াছে, সেইগুলির যৌক্তিক সমাধান জরুরি বলিয়া আমরা মনে করি। সোমবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, নোয়াব নিউজপ্রিন্টের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশের পরিবর্তে ২ শতাংশ এবং ভ্যাট ১৫ শতাংশ হইতে কমাইয়া ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়াছে। ইহার সহিত সংবাদপত্র শিল্পকে সেবামূলক শিল্পরূপে বিবেচনাপূর্বক করপোরেট কর সর্বনিম্ন নির্ধারণ অথবা অবলোপনেরও অনুরোধ করিয়াছে নোয়াব। সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ তাহাদের দাবির সপক্ষে যেই সকল যুক্তি উপস্থাপনা করিয়াছেন, সেইগুলিও প্রণিধানযোগ্য। তাহারা যথার্থই বলিয়াছেন, বর্তমানে সংবাদপত্রের মূল কাঁচামাল নিউজপ্রিন্টের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ হইলেও এই বাবদ ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। এইগুলির সহিত অগ্রিম আয়কর ও পরিবহন বীমা যুক্ত করিলে নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে শুধু কর-শুল্ক বাবদ প্রকৃত ব্যয় প্রায় ৩০ শতাংশে পৌঁছে। তদুপরি যুক্ত হইয়াছে নিউজপ্রিন্ট ও...
    রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হইতে নিষ্কৃতি চাহিয়া বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকগণ প্রধান উপদেষ্টার নিকট যেই আবেদন জানাইয়াছেন, উহাকে স্বাগত জানানোই সংগত ছিল। রবিবার হইতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তিন দিনের সম্মেলনের প্রথম দিনেই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সহিত মুক্ত আলোচনায় জেলা প্রশাসকগণের উক্ত আবেদন সমর্থন না করিবার কী কারণ থাকিতে পারে? এই জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন ও সংস্কার তাহারা চাহিয়াছেন। কিন্তু প্রশ্ন হইতেছে, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কি যাচিয়া আসিয়াছিল? নাকি জেলা প্রশাসকগণই ক্রমান্বয়ে এইরূপ হস্তক্ষেপ অনিবার্য করিয়া তুলিয়াছিলেন? বাংলা প্রবাদ মানিয়া এক্ষণে কম্বল ছাড়িতে চাহিলেই কি কম্বল সহজে ছাড়িয়া যাইতে পারে?  বস্তুত জনপ্রশাসনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নূতন নহে। স্বাধীনতার পর গত ৫৩ বৎসরে যেই দলই ক্ষমতাসীন হইয়াছে, সেই দলই প্রশাসনের সর্বস্তরে পদায়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দলীয় আনুগত্যকে প্রাধান্য দিয়াছে। বিষয়টি বিপরীত দিক...
    রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাধার খবর আমাদের উদ্বিগ্ন না করিয়া পারে না। সমকাল অনলাইনের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগত ৩১ বৎসর যাবৎ বসন্ত উৎসবের আয়োজন করিয়া আসিতেছে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ। এই বৎসর তাহাদের উদ্যোগে উক্ত অনুষ্ঠান চারুকলা অনুষদের বকুলতলা, পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক ও উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে হইবার কথা ছিল। তবে বকুলতলা ও বাহাদুর শাহ পার্কে এই উৎসব হইলেও উত্তরায় হয় নাই। বকুলতলায় উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জানাইয়াছেন, পুলিশের অনুমোদন গ্রহণ, সিটি করপোরেশনের ফি পরিশোধসহ নিয়ম অনুযায়ী সকল কিছু সম্পন্ন করিবার পরও উত্তরার কতিপয় ব্যক্তির ‘বাধার মুখে’ অনুষ্ঠানটি তাহারা আয়োজন করিতে পারেন নাই।  কেবল বসন্ত উৎসব নহে; আমরা দেখিয়াছি সম্প্রতি দিনাজপুর ও জয়পুরহাটে নারীদের ফুটবল খেলায়ও বাধা প্রদান করা হইয়াছিল। গত...
    বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের প্রাণপ্রবাহ বলিয়া পরিচিত তিস্তা নদী ঘিরিয়া বহুল আলোচিত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে যেইভাবে উজ্জ্বল হইয়া উঠিয়াছে, উহা নিঃসন্দেহে উৎসাহব্যঞ্জক। তিস্তাতীরবর্তী জনসাধারণের উৎসাহ স্বাভাবিকভাবেই দ্বিগুণ হইতে বাধ্য। রবিবার রংপুরে তিস্তা রেলসেতু এলাকায় জেলা প্রশাসন আয়োজিত গণশুনানি অনুষ্ঠানে জনসমাগমেই উহা স্পষ্ট। কেবল সশরীতে উপস্থিতির ক্ষেত্রে নহে, গত কয়েক বৎসর ধরিয়া ঐ অঞ্চলের মানুষ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পক্ষে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে উহার পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করিয়া আসিতেছে। মহাপরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধনও কম অনুষ্ঠিত হয় নাই। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারও উহার পক্ষে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ লইয়াছিল। প্রকল্পের প্রস্তাবনা ও বাস্তবায়নের সহিত চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলি সম্পৃক্ত থাকিবার কারণে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারই শেষ মুহূর্তে কীভাবে পিছাইয়া আসিয়াছিল, আমরা জানি। এমনকি ঐ সরকারের পক্ষে যেইভাবে চীনের পরিবর্তে ভারতকে...
    আলু লইয়া কৃষক এইবারও দুর্দশায় নিপতিত হইল। রবিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন বলিতেছে, এক কেজি আলুর উৎপাদন ব্যয় ১৪ হইতে ১৬ টাকা হইলেও কৃষককে উহা বিক্রয় করিতে হইতেছে মাত্র ১০-১২ টাকায়। ফলে প্রতি কেজি আলুতে কৃষককে লোকসান গুনিতে হইতেছে ৫ টাকা অবধি। শুধু উহাই নহে, লোকসান হইতে বাঁচিতে বর্তমানে বিভিন্ন এলাকার কৃষকের হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও নূতন সংকট সৃষ্টি হইয়াছে। প্রথমত, দেশে চলতি বৎসর আলু উৎপাদন ১ কোটি ২০ লক্ষ টন হইবে বলিয়া ধারণা করা হইতেছে। কিন্তু বিদ্যমান হিমাগারসমূহের মোট ধারণক্ষমতা মাত্র ৪৫ লক্ষ টন। সেই হিসাবে বিপুল পরিমাণ আলু হিমাগারের বাহিরে থাকিবে। দ্বিতীয়ত, গত বৎসর অপেক্ষা এইবার কেজিতে ১ টাকা বৃদ্ধি করিয়া হিমাগার ভাড়া ৮ টাকা করা হইয়াছে, যাহা বহন করা বিশেষত ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকের পক্ষে কঠিন। উপরন্তু, পূর্বে...
    বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক বাজারে বিক্রয় হইবার বিষয়টি উদ্বেগজনক। সমস্যা এতই ব্যাপক যে, বুধবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান সত্ত্বেও বাজারে পুস্তক মিলিতেছে। বস্তুত প্রায় প্রতি বৎসরই কালোবাজারে বিনামূল্যের পুস্তক বিক্রয় হইয়া থাকে। কিন্তু চলতি বৎসর অধিক হারে বিক্রয়ের কারণ হইল, শিক্ষার্থীদের বিপুলাংশের এখনও পাঠ্যপুস্তক হস্তগত হয় নাই। এই সুযোগে এক শ্রেণির কালোবাজারি স্বল্প বিনিযোগে অতি মুনাফার আশায় বেআইনিভাবে স্বীয় উদ্যোগে মুদ্রণ করিয়া পাঠ্যপুস্তক বিক্রয় করিতেছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড- এনসিটিবির কার্যাদেশপ্রাপ্ত অনেক মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানও এহেন অপকর্মে লিপ্ত। উপরন্তু, অনেক অসাধু উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাও অতিরিক্ত চাহিদা প্রদর্শনপূর্বক সংগৃহীত পাঠ্যপুস্তক কালোবাজারিদের নিকট বিক্রয় করিয়া দিতেছেন বলিয়া অভিযোগ উত্থাপিত হইয়াছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা প্রতি বৎসর বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক সরকারের তরফ হইতে পাইবার বিষয়টি একদিকে যদ্রূপ স্বস্তিদায়ক, তদ্রূপ শিক্ষার্থীদের জন্যও উদ্দীপকরূপে...
    সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান সংবাদ সম্মেলন করিয়া জানাইয়া দিলেন– রাজধানীর সাতটি কলেজ আর তাহাদের অধীনে থাকিতেছে না। বস্তুত দীর্ঘদিন ধরিয়াই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি হইতে বাহির হইবার অভিপ্রায়ে কলেজগুলির শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করিতেছিল, ঢাবি উপাচার্যের উক্ত ঘোষণা উহারই ফল। তবে সম্প্রতি শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দাবি উত্থাপন করিয়াছে, উপাচার্য সেই সম্পর্কে কিছু বলেন নাই। তিনি বলিয়াছেন, সাত কলেজের এই মুহূর্তের অগ্রাধিকার স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা, তাহাদের ‘স্বতন্ত্র পরিচয়’ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ কমিটি দেখভাল করিবে। উহার পরও উক্ত বিষয়ে ধোঁয়াশা রহিয়া গেল বলা যায়। ঢাকার সাতটি কলেজকে ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির সিদ্ধান্ত ছিল অপরিকল্পিত– উহা বলিবার অপেক্ষা রাখে না। আমরা দেখিয়াছি, কলেজগুলি ইতোপূর্বে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকিয়া সেশনজটসহ যেই সকল সমস্যার সম্মুখীন হইয়াছিল, ঢাকা...
    শীতকালীন বিভিন্ন সবজির দাম কৃষক পর্যায়ে প্রান্তদেশ স্পর্শ করিয়াছে বলিয়া মঙ্গলবার সমকাল যেই সংবাদ দিয়াছে, উহা প্রধানত দুইটি কারণে উদ্বেগজনক বলিয়া আমরা মনে করি। ইহাতে শুধু উৎপাদকগণই চরম ক্ষতির শিকার হইতেছেন না; জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখোমুখি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে নাটোরে উৎপাদক পর্যায়ে প্রতি কেজি মুলার দর ২ বা ৩ টাকা, প্রতিটি লাউ ৫-৭ টাকা, শসার কেজি ৮-১০ টাকা, লালশাকের আঁটি ১ টাকা, ধনিয়া পাতার কেজি ৫-১০ টাকা, যেইগুলির অধিকাংশের উৎপাদন ব্যয় উক্ত বিক্রয় দর অপেক্ষা অধিক। উদাহরণস্বরূপ, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, প্রতিটি লাউ উৎপাদনে ব্যয় হয় অন্তত ১৩ টাকা ২০ পয়সা। ফলে অধিক মুনাফার আশায় শীতের সবজি চাষ করিয়া উৎপাদকদের এখন পুঁজিই বিপন্ন হইবার পরিস্থিতি মোকাবিলা করিতে হইতেছে। উৎপাদকগণের এহেন দুর্দশা শুধু নাটোরেই নহে; বগুড়া, ঠাকুরগাঁওসহ সবজি উৎপাদনের...
    চাহিদা অপেক্ষা বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা অত্যধিক হইবার কারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবিকে অলস বিদ্যুৎকেন্দ্র নামক এক প্রকার শ্বেতহস্তী পালন করিতে হইতেছে বলিলে ভুল হয় না। কারণ চুক্তি অনুযায়ী এই সকল কেন্দ্র হইতে বিদ্যুৎ ক্রয় না করিয়াও পিডিবিকে বিপুল পরিমাণ ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়। ফলে একদিকে গড় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পায় অনাকাঙ্ক্ষিতরূপে, অন্যদিকে জনগণের উপর ইহার চাপ হ্রাসকল্পে ফি বৎসর ভর্তুকির পরিমাণ বর্ধমান। উদাহরণস্বরূপ, শনিবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, বর্তমানে চাহিদা অপেক্ষা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৫৪ শতাংশের অধিক; যদিও এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ২০ শতাংশ। ইহার ফলে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বৎসরে ১ লক্ষ ৩৩ সহস্র কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের পকেটস্থ হইয়াছে। সমস্যার এইখানেই ইতি ঘটে নাই। এই ক্রমবর্ধমান ব্যয় সামলাইতে সরকারকে উক্ত সময়ে...
۱