শরীয়তপুরের জাজিরার জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপারা এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ওই সংঘর্ষের সময় খইয়ের মতো শতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এতে এক তরুণের হাতের কবজিতে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে এবং আরেকজন আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় দুই পক্ষ ওই সংঘর্ষে জড়ান।

জাজিরার বিলাসপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় খইয়ের মতো ককটেল বিস্ফোরণ এখন দেশব্যাপী আলোচনায়। ৫ এপ্রিল সেখানে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আবার ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল।

জাজিরা থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ছাব্বিশপারা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ আছে। এর একটি পক্ষের নেতৃত্বে আছেন ঢাকার তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিঠুন ঢালী এবং আরেক পক্ষে আছেন জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হালিম তালুকদার। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ওই দুই নেতা আত্মগোপনে আছেন। তাঁদের অনুপস্থিতিতে এখন স্থানীয় পর্যায়ে পক্ষ দুটি নেতৃত্ব দিচ্ছেন জসিম তালুকদার ও নুর আলম সরদার।

শনিবার রাতে জসিম তালুকদারের পক্ষের লোকজন সজল চোকদারকে মারধর করলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রোববার দুপুরে দুই পক্ষের লোকজন ককটেল বোমা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। তখন নুর আলম সরদারের লোকজন অপর পক্ষের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করে। একটি ককটেল জসিম তালুকদারের পক্ষের সাব্বির খালাসির (১৯) হাতের ওপর বিস্ফোরিত হয়। এতে তাঁর হাতের কবজিতে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। এরপর দুই পক্ষের সমর্থকেরা ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ওই সংঘর্ষের কিছু চিত্র স্থানীয় একজনের স্থাপিত সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ৪ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি পক্ষের সমর্থকেরা বালতিতে ককটেল নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর নিক্ষেপ করছেন। প্রতিপক্ষের ওপর হামলা করার জন্য টেঁটা, রামদা, ছেনদা, বল্লম, ঢাল-সড়কি ও বালতিকে করে ককটেল নিয়ে ধাওয়া করছে আরেক পক্ষ।

ককটেল বিস্ফোরণে আহত সাব্বির খালাসির চাচি ফাতেমা বেগম বলেন, মারামারির সময় নুর আলমের লোকেরা বোমা মারলে সাব্বিরের হাতের ওপরে পড়ে তা ফেটে যায়।

ওই সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার পর এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযান ও পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়। এ কারণে এলাকার পুরুষ সদস্যরা আত্মগোপনে চলে যান। তাই কোনো পক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁদের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দুলাল আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, জাজিরার জয়নগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। তাতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর যৌথ বাহিনীর অভিযান চালানো হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে কাজ করছে পুলিশ। এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ র এল ক য় র ওপর র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে বকেয়া বেতন ও কারখানা চালুর দাবিতে ঢাকায় শ্রমিকদের ‘ভুখা মিছিল’

গাজীপুরে বন্ধ হয়ে যাওয়া উইনটেক্স গ্লোভস কারখানা পুনরায় চালু ও শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে আন্দোলনের ১৭তম দিনে রাজধানীতে ভুখা মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শ্রমিকেরা।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিজয়নগরের শ্রম ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি পল্টন, প্রেসক্লাব, বিজয়নগর হয়ে পুনরায় শ্রম ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন আন্দোলনরত শ্রমিকেরা।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. রুহুল আমিন বলেন, ১৫ জুন বেআইনিভাবে কারখানা বন্ধ করা হয়। পরদিন ১৬ জুন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ডিআইজি, জেলা প্রশাসক এবং পরে শ্রম উপদেষ্টা ও শ্রমসচিবকে দুইবার লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়ে প্রতিকার চাওয়া হয়। আজ (বুধবার) ১৭তম দিন যাবৎ শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান আন্দোলনের পর অদ্যাবধি তাঁরা কোনো উদ্যোগ নেননি, এমনকি শ্রমিকদের সাথে কথাও বলেননি, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

কাজী মো. রুহুল আমিন আরও বলেন, শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে শ্রমিকদের সুসম্পর্কের পরিবর্তে মুখোমুখি দাঁড়ানো কারও জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না।

সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, অতীতের সরকারগুলোর মতো বর্তমান সরকার যদি মালিক পুষে শ্রমিক মারার পথ অনুসরণ করে, তাহলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উইনটেক্স গ্লোভস শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক মো. তুহিন এবং সঞ্চালনা করেন শ্রমিকনেতা জালাল হাওলাদার। আরও বক্তব্য দেন শ্রমিকনেতা মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল, সেকেন্দার হায়াত, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসন খসড়া বাতিলের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মহাসড়কে বিক্ষোভ
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে এবার জামায়াতের বিক্ষোভ
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
  • দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ 
  • গাজীপুরে বকেয়া বেতন ও কারখানা চালুর দাবিতে ঢাকায় শ্রমিকদের ‘ভুখা মিছিল’