জয়পুরহাটে ছাত্রদল নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি, পিস্তল-গুলিসহ আটক ১
Published: 15th, April 2025 GMT
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেনকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় বিদেশি পিস্তল ও ৬ রাউন্ড গুলিসহ একজনকে আটক করেছে জনতা। তবে তার সঙ্গে থাকা বাকি ৫ জন পালিয়ে গেছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে পাঁচবিবি শহরের পৌর সুপার মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার পর শহরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
শামীমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া আটক ব্যক্তির নাম কোয়েল মোল্লা (২৮)। তিনি ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার কুষ্টপুর গ্রামের শাহাদত মোল্লার ছেলে। জনতার মারধরে আহত হয়ে আটক কোয়েল বর্তমানে পুলিশি পাহারায় জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সোমবার ছিল পহেলা বৈশাখ। সারাদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাত ১০টার দিকে পাঁচবিবি পৌরশহরের সুপার মার্কেটের একটি দোকানের সামনে সাবেক জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেন, পৌর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি হারুনুর রশিদ সজল ও বায়োজীদসহ বেশ কয়েকজন মিলে গল্প করছিলেন। এসময় দুটি মোটরসাইকেলে ছয়জন অপরিচিত লোক এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই শামীমকে উদ্দেশ্যে করে কয়েক রাউন্ড গুলি করে সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যান। স্থানীয় জনগণ ও শামীমের সঙ্গে থাকা অন্যরা তাদের ধাওয়া করে কোয়েল নামে একজনকে আটক করে। অন্যরা তখন পালিয়ে যায়।
উত্তেজিত জনতা কোয়েলকে গণধোলাই দিলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাকে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়।
প্রত্যক্ষদর্শী পৌর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি হারুনুর রশিদ সজল বলেন, সারাদিন কাজ শেষে রাত ১০টার দিকে শামীম, বায়োজীদ ও আমিসহ বেশ কয়েকজন পৌর সুপার মার্কেটের সামনে বসে গল্প করছিলাম। হঠাৎ করে দুটি মোটরসাইকেলে ছয়জন অপরিচিত লোক এসে আমাদের সামনে দাঁড়ায়। ওদের মধ্যে একজনের মাথায় হেলমেট ছিল। সে তাদের বলে ওই ব্যক্তি শামীম। এটা বলার সঙ্গে সঙ্গেই কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই ওরা শামীমসহ আমাদের লক্ষ্য করে ২/৩ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তখন আমরা বাঁচার জন্য চেষ্টা করি এবং শামীম শুয়ে পড়ে। তাদের ছোড়া গুলি আমাদের শরীরে লাগেনি।
তিনি আরও বলেন, এরমধ্যে আমরা তাদের ধাওয়া করলে ওরা একটি মোটরসাইকেল স্থানীয় রাখী হোটেলের সামনে ফেলে পালিয়ে যায়। গুলি করার সময় আমি একজনকে দেখে চিনতে পারি এবং সে রাস্তা দিয়ে জনসাধারণের মতো হেঁটে যাচ্ছিল। আমাকে দেখে তার কোমরে থাকা একটি রিভলভার ফেলে দিলে তখন আমরা তাকে ধরে ফেলি। রিভলভার উদ্ধার করে পুলিশের হাতে দেই। এটা আমাদের পরিকল্পিত হত্যার একটা মাস্টারপ্ল্যান।
তবে এঘটনায় জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেন এই মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে জনতার হাতে আটক একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। আটক ওই ব্যক্তির নিকট থেকে একটি রিভলভার, ম্যাগজিন ও গুলি জব্দ করা হয়েছে। এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং অন্যদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র স মন আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।
তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল