জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেনকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় বিদেশি পিস্তল ও ৬ রাউন্ড গুলিসহ একজনকে আটক করেছে জনতা। তবে তার সঙ্গে থাকা বাকি ৫ জন পালিয়ে গেছে।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে পাঁচবিবি শহরের পৌর সুপার মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।

ঘটনার পর শহরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।   

শামীমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া আটক ব্যক্তির নাম কোয়েল মোল্লা (২৮)। তিনি ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার কুষ্টপুর গ্রামের শাহাদত মোল্লার ছেলে। জনতার মারধরে আহত হয়ে আটক কোয়েল বর্তমানে পুলিশি পাহারায় জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। 

এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সোমবার ছিল পহেলা বৈশাখ। সারাদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাত ১০টার দিকে পাঁচবিবি পৌরশহরের সুপার মার্কেটের একটি দোকানের সামনে সাবেক জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেন, পৌর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি হারুনুর রশিদ সজল ও বায়োজীদসহ বেশ কয়েকজন মিলে গল্প করছিলেন। এসময় দুটি মোটরসাইকেলে ছয়জন অপরিচিত লোক এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই শামীমকে উদ্দেশ্যে করে কয়েক রাউন্ড গুলি করে সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যান। স্থানীয় জনগণ ও শামীমের সঙ্গে থাকা অন্যরা তাদের ধাওয়া করে কোয়েল নামে একজনকে আটক করে। অন্যরা তখন পালিয়ে যায়।

উত্তেজিত জনতা কোয়েলকে গণধোলাই দিলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাকে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়।

প্রত্যক্ষদর্শী পৌর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি হারুনুর রশিদ সজল বলেন, সারাদিন কাজ শেষে রাত ১০টার দিকে শামীম, বায়োজীদ ও আমিসহ বেশ কয়েকজন পৌর সুপার মার্কেটের সামনে বসে গল্প করছিলাম। হঠাৎ করে দুটি মোটরসাইকেলে ছয়জন অপরিচিত লোক এসে আমাদের সামনে দাঁড়ায়। ওদের মধ্যে একজনের মাথায় হেলমেট ছিল। সে তাদের বলে ওই ব্যক্তি শামীম। এটা বলার সঙ্গে সঙ্গেই কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই ওরা শামীমসহ আমাদের লক্ষ্য করে ২/৩ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তখন আমরা বাঁচার জন্য চেষ্টা করি এবং শামীম শুয়ে পড়ে। তাদের ছোড়া গুলি আমাদের শরীরে লাগেনি।

তিনি আরও বলেন, এরমধ্যে আমরা তাদের ধাওয়া করলে ওরা একটি মোটরসাইকেল স্থানীয় রাখী হোটেলের সামনে ফেলে পালিয়ে যায়। গুলি করার সময় আমি একজনকে দেখে চিনতে পারি এবং সে রাস্তা দিয়ে জনসাধারণের মতো হেঁটে যাচ্ছিল। আমাকে দেখে তার কোমরে থাকা একটি রিভলভার ফেলে দিলে তখন আমরা তাকে ধরে ফেলি। রিভলভার উদ্ধার করে পুলিশের হাতে দেই। এটা আমাদের পরিকল্পিত হত্যার একটা মাস্টারপ্ল্যান।

তবে এঘটনায় জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেন এই মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। 

পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে জনতার হাতে আটক একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। আটক ওই ব্যক্তির নিকট থেকে একটি রিভলভার, ম্যাগজিন ও গুলি জব্দ করা হয়েছে। এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং অন্যদের গ্রেপ্তা‌র করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র স মন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরায় চোর সন্দেহে একজনকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় চুরির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বেলা পৌনে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত ব্যক্তির নাম মো. ইসরাফিল (৪০)। তাঁর বাড়ি উপজেলা সদরের জাঙ্গালিয়া গ্রামে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজ ভোরে জাঙ্গালিয়া গ্রামে তিনটি মুঠোফোন ও নগদ ১ হাজার ৬০০ টাকা চুরি হয়। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে এলাকাবাসী ইসরাফিলকে নিজ বাড়ি থেকে ধরে এনে মারধর করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

ইসরাফিলের পরিবারের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কয়েক দিন আগে পূর্ব নারায়ণপুর গ্রামের ইমরুল নামের এক ব্যক্তির মুঠোফোন চুরি হয়। সে সময় থেকেই ইসরাফিলকে সন্দেহ করা হচ্ছিল। আজ এলাকায় আরও একটি চুরির ঘটনা ঘটলে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে তাঁকে বাড়ি থেকে ধরে এনে পিটিয়ে হত্যা করেন।

মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রহমান বলেন, একরামুল নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে তিনটি মুঠোফোন ও টাকা চুরি হয়। ওই ঘটনায় ইসরাফিলকে অভিযুক্ত করে স্থানীয় লোকজন পিটুনি দেন। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আগে কয়েকটি চুরির অভিযোগ থাকলেও বর্তমানে কোনো মামলা নেই। এ ঘটনায় তাঁর পরিবার থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লক্ষ্মীপুরে মামলায় জড়ানোর প্রতিবাদ ভুক্তভোগী পরিবারের
  • মাগুরায় চোর সন্দেহে একজনকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা