পোশাক খাতে করপোরেট করহার অপরিবর্তিত রাখার সুপারিশ
Published: 15th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কহার, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল ও গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে রপ্তানিমুখী শিল্প খাত ঝুঁকিতে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাক খাতে বিদ্যমান করপোরেট কর অপরিবর্তিত রাখার সুপারিশ করেছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)। আলোচনা সভায় স্থানীয়ভাবে রিসাইকেল ফাইবার (পুনঃব্যবহারযোগ্য সুতা) উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি চেয়েছে বিজিএমইএ। বিনিয়োগবান্ধব করনীতি প্রণয়ন করার প্রস্তাব দিয়েছে বিকেএমইএ। বর্তমানে পোশাক খাতে ১২ শতাংশ করপোরেট কর দিতে হয়। তবে সবুজ কারখানা হলে দিতে হয় ১০ শতাংশ। আইএমএফের শর্তে রাজস্ব আদায় বাড়াতে আগামী বাজেটে এ করহার বাড়াতে চায় এনবিআর। তবে উদ্যোক্তাদের দাবি, বর্তমান ক্রান্তিকালে করপোরেট কর বাড়ানো হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের
মধ্যে আস্থার ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
বিজিএমইএর সহায়ক কমিটির সদস্য এনামুল হক বলেন, সম্প্রতি গ্যাসের দাম বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ নিয়ে ব্যবসায়ীরা বিপদে আছেন। এর মধ্যে পোশাকশিল্পে করপোরেট করহার বাড়লে স্থানীয় ও বিদেশি উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আস্থা হারাবেন।
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, সোলার সিস্টেমের ওপর কর মওকুফ প্রয়োজন। সরকার শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই সোলার প্যানেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চান উদ্যোক্তারা। সোলারে কোনো কিছু না রেখে সম্পূর্ণ ফ্রি করা উচিত। তা হলে ব্যবসায়ীরা উৎসাহিত হবেন। এতে খরচ কমে আসবে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা বিশ্বাস করেন, বর্তমান করনীতি কোনোভাবেই বিনিয়োগ বা ব্যবসার সহায়ক নয়। পোশাক কারখানার জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবায় ভ্যাট অব্যাহতি ও বিভিন্ন অগ্নিনিরাপত্তা সরঞ্জামা পুনঃস্থাপনের ক্ষেত্রে আমদানির ওপর কর রেয়াত করার প্রস্তাব করেন তিনি।
সভায় বস্ত্রকল খাতের সংগঠন বিটিএমএ স্থানীয় উৎপাদন খরচ ও বিশ্ব বাজার মূল্য বিবেচনায় নিয়ে ফেব্রিকের ট্যারিফ ভ্যালু নির্ধারণ এবং আগের মতো বিটিএমএ থেকে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে বন্ড ছাড়া পণ্য খালাসের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দেয়। এ ছাড়া রিসাইকেল ফাইবার উৎপাদনের কাঁচামাল হিসেবে পোশাকশিল্পের ঝুট স্থানীয়ভাবে সংগ্রহের জন্য উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে এবং উৎপাদিত পণ্য স্থানীয়ভাবে সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি চেয়েছে সংগঠনটি।
এসএমই ফাউন্ডেশনের প্রস্তাবে রয়েছে– নতুন এসএমইদের জন্য ১০ বছর পর্যন্ত টার্নওভারের ওপর ন্যূনতম করারোপ না করা, উৎপাদনকারীদের শতভাগ রপ্তানিমুখী শিল্পে স্থানীয় মুদ্রায় সরাসরি উপকরণ সরবরাহের ক্ষেত্রে মূসক অব্যাহতি, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং গার্মেন্ট অ্যাকসেসরিজ শিল্পে ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র প রস ত ব ব যবস য় র র জন য কর র প করহ র উৎপ দ
এছাড়াও পড়ুন:
নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলার সরবরাহ বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে আজ (সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনার কারণে বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
ডিজিটাল ব্যাংকের আবেদনের সময় বাড়ল
রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারে নামল
তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে বাজারে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। এ কারণেই রিজার্ভ থেকে বিক্রি না করে বাজার থেকেই ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভবিষ্যতেও এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়েছে। নিলামে বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা পর্যন্ত। নিলামের কাট অফ প্রাইস ধরা হয়েছে ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা। এই কাট অফ প্রাইসেই ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে ডলার কেনার ফলে রিজার্ভ বাড়ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে মোট ১ হাজার ৭৪৭ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার ক্রয় করেছে। এসব ডলার দেশের ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৭ দফায় ডলার কিনেছিল। এর মধ্যে গত ৪ সেপ্টেম্বর ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে ১৩৪ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। ২ সেপ্টেম্বর একই দরে বাংলাদেশ ব্যাংক ৮ ব্যাংক থেকে ৪৭.৫০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। ১৩ জুলাই ১৮টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে এবং গত ১৫ জুলাই একই দরে ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ২৩ জুলাই ডলার কিনেছে ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে। গত ৭ আগস্ট ১২১ টাকা ৩৫ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় এবং গত ১০ আগস্ট ১১টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ বাড়ায় ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে, চাহিদা কমেছে। এ কারণে ডলারের দাম কিছুটা কমে গেছে। ডলারের দাম আরো কমে গেলে রপ্তানিকারকরা একদিকে সমস্যায় পড়বেন, অপরদিকে রেমিট্যান্স আয় বৈধ পথে আসা কমে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়, যা খুবই যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। তাতে ডলারের বাজার স্থিতিশীল থাকবে ও চাহিদার ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।
গত ১৫ মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনার পর ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন থেকে ব্যাংক ও গ্রাহক নিজেরাই ডলারের দর নির্ধারণ করছেন।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক