স্টারলিংকের ইন্টারনেট সিস্টেমের ত্রুটি শনাক্ত করলে মিলবে কোটি টাকার বেশি পুরস্কার
Published: 16th, April 2025 GMT
কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ইন্টারনেট-সেবা দিয়ে থাকে ইলন মাস্কের স্টারলিংক। দ্রুতগতির এই ইন্টারনেট-সেবার পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হয়েছে বাংলাদেশেও। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চালু থাকা স্টারলিংকের ইন্টারনেট সিস্টেমের ত্রুটি শনাক্তে নিরাপত্তা–গবেষকদের সহায়তা চেয়েছে স্টারলিংকের মূল প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। নতুন এক ‘বাগ বাউন্টি’ কর্মসূচির আওতায় স্টারলিংকের ইন্টারনেট সিস্টেমের ত্রুটি শনাক্ত করলে সর্বোচ্চ এক লাখ মার্কিন ডলার বা ১ কোটি ২২ লাখ টাকা (প্রতি ডলারের বিনিময় হার ১২২ টাকা ধরে) পুরস্কার দেবে প্রতিষ্ঠানটি।
সম্প্রতি এক ব্লগ পোস্টে স্পেসএক্স জানিয়েছে, ‘আমরা নিরাপত্তা–গবেষকদের উৎসাহিত করছি, যেন তাঁরা স্টারলিংকের নিরাপত্তাব্যবস্থায় সম্ভাব্য ত্রুটি শনাক্ত করেন। তবে তা যেন কোনোভাবেই ব্যবহারকারীদের জন্য বিঘ্ন সৃষ্টি না করে, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। এ ধরনের ত্রুটি শনাক্ত হলে তা আমাদের নির্ধারিত বাগ বাউন্টি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জানানোর অনুরোধ করছি।’
স্পেসএক্সের তথ্যমতে, স্টারলিংক গ্রাহকদের তথ্য সুরক্ষা এবং সিস্টেমের সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত স্টারলিংকে মোট ৪৩টি নিরাপত্তাজনিত ত্রুটি শনাক্ত করেছেন গবেষকেরা। গত তিন মাসে গড় পুরস্কারের পরিমাণ ছিল ৯১৩ দশমিক ৭৫ ডলার।
আরও পড়ুনপৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কীভাবে পরিচালিত হয় ইলন মাস্কের স্টারলিংক২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫প্রসঙ্গত, স্টারলিংকে থাকা ত্রুটির ঝুঁকি ও গুরুত্ব মূল্যায়নে কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় করা হয়। শনাক্ত করা ত্রুটি শুধু ব্যবহারকারীর টার্মিনাল ও রাউটারকে প্রভাবিত করছে কি না, তা জানার পাশাপাশি স্যাটেলাইট বা কেন্দ্রীয় অবকাঠামোর মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবায় সেটির প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়। এ ছাড়া ত্রুটিটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরাসরি ব্যবহার করার সম্ভাব্যতাও যাচাই করা হয়। এরপর ত্রুটির ধরন ও ক্ষতির মাত্রা বিবেচনা করে পুরস্কারের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
আরও পড়ুনক্রোম ব্রাউজারের ত্রুটি শনাক্ত করলে পাওয়া যাবে সর্বোচ্চ তিন কোটি টাকা ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।