ফেব্রুয়ারির আগে নির্বাচন চায় জামায়াত
Published: 16th, April 2025 GMT
আগামী বছরের রমজান আগে অর্থ্যাৎ ২০২৬ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারির আগেই ভোট নির্বাচন চায় জামায়াতে ইসলামী। ঢাকা সফরে আসা যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিক এবং অ্যানড্রু হেরাপের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান।
আজ বুধবার ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসে এ বৈঠক হয়। নির্বাচনের কখন কীভাবে হবে- তা মার্কিন উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জানতে চেয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান জামায়াত আমির। তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তিনি প্রতিশ্রুতিতে ঠিক আছেন কি না জামায়াত দেখতে চায়। তবে জামায়াতের অবস্থান হলো, আগামী বছরের রমজানের আগেই নির্বাচন হয়ে যাওয়া উচিত। জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করলে, ঝড়-বর্ষা আসবে। বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসবে। তখন আবার নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। তাই রমজানের আগেই নির্বাচন হয়ে যাক। এটা জামায়াতের মতামত। রমজান মানে আগামী বছরের প্রথম রোজ।’
আগামী বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি রমজান শুরু হতে পারে। এর আগে নির্বাচন চান বলে জানিয়েছেন জামায়াত আমির।
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গেও বৈঠকে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, জাতি এখনও ট্রমার মধ্যে রয়েছে। বহু আহত এখনও হাসপাতালে। জুলাইয়ের শহীদ পরিবার এখনও শোকে রয়েছে। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের বিচার অবশ্যই হতে হবে। তবে জামায়াত চায় সুষ্ঠু বিচার।
জামায়াত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় বলে বৈঠকে জানিয়েছে জামায়াত। রাজনীতি এবং নির্বাচন নিয়ে খোলামেলা কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা জানতে চেয়েছেন। তারা জানতে চেয়েছেন কখন কীভাবে নির্বাচন হবে। সব দলের প্রত্যাশিত সংস্কার নিয়ে জামায়াতের অবস্থান জানতে চেয়েছেন। তারা জানতে চেয়েছে, ক্ষমতায় গেলে জামায়াতের অর্থনৈতিক এবং কূটনীতিক নীতি কী হবে। আঞ্চলিক বিষয়ে জামায়াতের অভিমত জানতে চেয়েছেন। সংখ্যালঘু, নারী অধিকার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। শ্রমিক অধিকার নিয়েও কথা হয়েছে। এসব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।’
সম্প্রতি মার্কিন রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। যদিও তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন। শফিকুর বলেন, শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেছি। ইতিমধ্যে সরকারও শুল্ক প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছে। বাংলাদেশ একটি নাজুক সময় পার করছে। আশা করি, তা উপলব্ধি করে যুক্তরাষ্ট্র সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।
শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াত গণতান্ত্রিক রীতি-নীতিতে বিশ্বাসী। তা দলে চর্চা করে। একই চর্চা দেশের জন্য করবে। এর জন্য যা প্রয়োজন জামায়াত করবে। এই অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম ছ ন জ ম য় ত আম র রমজ ন বছর র অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ