নববর্ষের ২দিন পর শোভাযাত্রা, অংশ না নেওয়ায় খাবার বন্ধ করলেন প্রাধ্যক্ষ
Published: 16th, April 2025 GMT
'এবারের বৈশাখের স্বপ্ন-শপথ, আগামীর বৈষম্যের বাংলাদেশ' প্রতিপাদ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে দুইদিন পর আনন্দ শোভাযাত্রা করা হয়েছে।
এদিকে, এ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ না করায় খালেদা জিয়া হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দীন ডাইনিংয়ে খাবার বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। এতে দুপুরের খাবার নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি করেন তারা।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বর থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাংলা মঞ্চে এসে শেষ হয়।
আরো পড়ুন:
কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি ইবি শিক্ষার্থীদের
কুয়েটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি ইবি ছাত্র ইউনিয়নের
এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মনজুরুল হক, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী, আবাসিক হল ও বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা- কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রায় শিক্ষার্থীরা বর-কনে, কৃষক, জমিদার, কুলি, চাষী, জেলে, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ, জাতীয় কবি নজরুল, আবু সাইস-মুগ্ধসহ ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতি, ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের দৃষ্টান্ত, ঐতিহ্যবাহী পালকি, ঢেঁকি, গরু ও মহিষের গাড়ি, সম্প্রীতির প্রতিচ্ছবিসহ নানা চরিত্র উপস্থাপন করেন।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজনে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও বিভিন্ন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
নববর্ষের দুইদিন পর শোভাযাত্রার বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এম এয়াকুব আলী বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শহর থেকে অনেক দূরে হওয়ায় ক্যাম্পাস বন্ধের দিন শিক্ষার্থীরা উপস্থিত খুব একটা হয় না। যেহেতু আমাদের মূল আয়োজন শিক্ষার্থীদের নিয়েই, সেহেতু তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ক্যাম্পাস খোলার দিন আয়োজন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আশা করি, প্রোগ্রামটি প্রাণবন্ত হয়েছে।”
নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রাণের উৎসব। আজকের শোভাযাত্রা আমাদের জন্য আনন্দের মেলা। এটি বাঙালি ও বাংলাদেশি সংস্কৃতির ধারাবাহিকতার অংশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে ঐক্য আমরা গড়েছি, সেই ঐক্য হবে আগামীর বাংলাদেশ গড়ার ভিত্তি। আমরা এই ঐক্য নিয়ে এগিয়ে যাব শিক্ষা ও গবেষণার পথে।”
এদিকে খালেদা জিয়া হল ডাইনিংয়ের খাবার বন্ধের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, নববর্ষ উপলক্ষে হলটিতে দুপুরে পান্তাভাত, ভর্তা ও রুই মাছ ভাজির বিশেষ আয়োজন করা হয়। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি র্যালিরও পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আশানুরূপ সংখ্যক শিক্ষার্থী উপস্থিত না হওয়ায় প্রাধ্যক্ষ হতাশ হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে দুপুরের খাবার পরিবেশন বন্ধ ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে রাত ৯টায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি মিটিং ডাকার নির্দেশ দেন। এটা খুবই দুঃখজনক।
শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রাধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছেন। এজন্য অনতিবিলম্বে তাকে পদত্যাগ করতে হবে।
না প্রকাশে অনিচ্ছুক হল ডাইনিংয়ের এক কর্মকর্তা জানান, রাত ২টা থেকে রান্নার প্রস্তুতি শুরু হয়। দুপুরের আগে সবকিছু প্রায় প্রস্তুত থাকলেও শেষ মুহূর্তে প্রাধ্যক্ষ স্যার রান্না বন্ধ করতে বলেন।”
অভিযোগের বিষয়ে খালেদা জিয়া হল প্রাধ্যক্ষ জালাল উদ্দীন বলেন, “প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি বছরের ন্যায় হল থেকেও আমরা অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। একটা হলে ৪০০ মেয়ে আছে, অথচ সেখানে ৬/৭ জন উপস্থিত হয়। আমাদের ব্যান্ড পার্টি ছিলো, এই সাতজন নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করা সম্ভব না হওয়ায় পরিকল্পনা বাদ দেই। আর অল্প সময়ের মধ্যে ডাইনিংয়ের খাবারের ব্যবস্থা করা খুবই কষ্টসাধ্য ছিল। তাই সাড়ে ১১টার দিকে নোটিশে জানিয়ে দেওয়া হয়.
শিক্ষার্থীদের পদত্যাগ দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে ইবি প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য পদত য গ নববর ষ আম দ র উপস থ
এছাড়াও পড়ুন:
২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচি পালনকালে ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)।
গতকাল সোমবার এসবির এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি পুলিশের সব বিভাগকে পাঠিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে এসবি। এসবির একটি সূত্র প্রথম আলোকে এই প্রতিবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো ১ জুলাই থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালনের সময়কাল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির কর্মসূচিতে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষায় পুলিশের বিভিন্ন বিভাগকে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে এসবি।
নির্দেশনাগুলো হলো ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা। ৮ আগস্ট পর্যন্ত নিয়মিত সন্দেহজনক ব্যক্তিসহ মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করা। বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল অভিযান পরিচালনা করা। মোবাইল প্যাট্রোল জোরদার করা। গুজব রোধে সাইবার পেট্রোলিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা।
এ ছাড়া কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকলে তা তাৎক্ষণিকভাবে এসবিকে অবহিত করার কথাও বলা হয়েছে।