কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য অগ্রাধিকার দিতে হবে বাজেট বরাদ্দে
Published: 17th, April 2025 GMT
বাজেটে বরাদ্দের ক্ষেত্রে দারিদ্র্য নিরসন, কর্মসংস্থান তৈরি, নারী ও শিশু উন্নয়ন, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় সহায়ক কার্যক্রমে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছর বাজেট প্রণয়ন নিয়ে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উদ্দেশ্যে গতকাল বুধবার এক পরিপত্র জারি করে এসব পরামর্শ দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, বাজেটে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে সরকারের কৌশলগত উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়ক হয় এমন সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয়ের প্রাক্কলন এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যেন তা মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত ব্যয়সীমার মধ্যে হয়। এ ছাড়া সাধারণভাবে বাজেটে কোনো প্রকার থোক বরাদ্দ প্রস্তাব করা যাবে না।
এতে মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো পদ্ধতির আওতাভুক্ত সব মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে বাজেট প্রণয়নের দ্বিতীয় পর্যায়ে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বিস্তারিত বাজেট প্রাক্কলন এবং একইসঙ্গে পরবর্তী ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ অর্থবছরের প্রক্ষেপণ প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বাজেট প্রস্তাব আগামী ২৪ এপ্রিলের মধ্যে অর্থ বিভাগের বাজেট অনুবিভাগ, পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠাতে বলা হয়েছে।
পরিপত্রে বাজেট প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে চারটি নীতি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে– মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোতে বর্ণিত কৌশলগত উদ্দেশ্য, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, ‘রি-স্ট্রাটেজিসিং দ্য ইকোনমি অ্যান্ড মবিলাইজিং রিসোর্সেস ফর ইক্যুয়িটেবল অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’-বিষয়ক টাস্কফোর্স রিপোর্ট এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের নিজস্ব নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত সরকারের নীতি ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা।
এ ছাড়া সরকারের মৌলিক নীতি নির্ধারণী দলিলগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দারিদ্র্য নিরসন, কর্মসংস্থান তৈরি, নারী ও শিশু উন্নয়ন, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় সহায়ক কার্যক্রমে অগ্রাধিকারভিত্তিক বরাদ্দ দিতে হবে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় বাড়ার সামঞ্জস্য রাখা, যাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বর্তমান কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়।
পরিপত্রে আরও বলা হয়, উন্নয়ন ব্যয়ের বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের বৈদেশিক ঋণ বা অনুদানের যে প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ তৈরি করা হয়েছে,
প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন নিশ্চিত করতে হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনে রাশিয়া-বেলারুশ সামরিক মহড়ায় কেন অংশ নিল ভারত
রাশিয়া-বেলারুশের যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে ভারত। গতকাল মঙ্গলবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস এ খবর জানিয়েছে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও এ খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
রাশিয়ার নেতৃত্বে গত শুক্রবার ‘জাপাদ-২০২৫’ নামে পাঁচ দিনের এ সামরিক মহড়া শুরু হয়। দুই দেশের সীমান্তে চলা মহড়ায় ভারতীয় সেনাদের অংশগ্রহণ মস্কো ও নয়াদিল্লির সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচ্চ শুল্ক আরোপের জেরে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কে চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও জাপাদ-২০২৫ সামরিক মহড়ায় ৬৫ সশস্ত্র সেনা পাঠানোর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
যেকোনো ধরনের আগ্রাসন প্রতিহত করতে সেনাদের প্রস্তুতি প্রদর্শনের জন্য রাশিয়া ও বেলারুশ নাটকীয় এ সামরিক মহড়া পরিচালনা করেছে।
এক লাখ সেনা এ মহড়ায় অংশ নিয়েছেন। মহড়ায় পারমাণবিক সক্ষমতার বোমারু যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজের প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। এমন একটি সময়ে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে, যখন ন্যাটোর সদস্যদেশগুলোর সঙ্গে উত্তেজনা চরমে। মাত্র এক সপ্তাহ আগে পোল্যান্ডে রাশিয়ার ড্রোন ভূপাতিত করা হয়।
এক লাখ সেনা এ মহড়ায় অংশ নিয়েছেন। মহড়ায় পারমাণবিক সক্ষমতার বোমারু উড়োজাহাজ ও যুদ্ধজাহাজের প্রদর্শন করা হয়েছে। এমন একটি সময়ে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে, যখন ন্যাটো দেশের সঙ্গে উত্তেজনা চরমে। মাত্র এক সপ্তাহ আগে পোল্যান্ডে রাশিয়ার ড্রোন ভূপাতিত করা হয়।গতকাল ছিল সামরিক মহড়ার শেষ দিন। এদিন সামরিক পোশাক পরে আসা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘আজ আমরা জাপাদ-২০২৫ কৌশলগত মহড়ার চূড়ান্ত ধাপ পরিচালনা করছি।’
এ মহড়ায় অংশ নেওয়া ভারত একমাত্র বিদেশি শক্তি নয়। ক্রেমলিনের বরাত দিয়ে তাস বলেছে, ইরান, বাংলাদেশ, বুরকিনা ফাসো, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো ও মালির ‘টাস্কফোর্স এবং সামরিক দল’ এ মহড়ায় অংশ নিয়েছে।
কিন্তু ভারতীয় সেনাদের অংশগ্রহণ অবশ্যই বিশেষ। ভারতের সেনাবাহিনীর অভিজাত পদাতিক বাহিনী কুমায়ুন রেজিমেন্ট মহড়ায় অংশ নেওয়া ভারতীয় দলটির নেতৃত্ব দিয়েছে। ভারতীয় সেনাদের মহড়ায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্য রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির ‘সহযোগিতা ও পারস্পরিক বিশ্বাসের মনোভাব জোরদার করা’।
রাশিয়ার এ মহড়ায় অংশগ্রহণ অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হবে। কারণ, এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদের একজন ভারত, বিশেষ করে চীনের সঙ্গে ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। কিন্তু ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং স্বাভাবিক অংশীদার। আমার বিশ্বাস, আমাদের বাণিজ্য আলোচনাগুলো ভারত-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারত্বের সীমাহীন সম্ভাবনা উন্মোচনের পথ তৈরি করবে।নরেন্দ্র মোদি, ভারতের প্রধানমন্ত্রীগত মাস থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, এ শুল্কের মধ্যে ২৫ শতাংশ ভারতের ওপর ‘জরিমানা’ হিসেবে আরোপ করা হয়েছে। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে ভারতকে এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ভারত–চীনের কাছে বিক্রি করা তেলের অর্থ ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে নিতে রাশিয়াকে সহায়তা করছে।
আরও পড়ুনরাশিয়া-বেলারুশের সামরিক মহড়া চলছিল, ‘অবাক করে দিয়ে’ হাজির মার্কিন কর্মকর্তারা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫গত শুক্রবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘মনে হচ্ছে, অন্ধকারতম-গভীরতম চীনের ভেতরে আমরা ভারত ও রাশিয়াকে হারিয়ে ফেলেছি। একসঙ্গে তাদের ভবিষ্যৎ দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ হোক।’
পোস্টে তিয়ানজিনে এসসিও সম্মেলনে একসঙ্গে থাকা চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, পুতিন ও মোদির একটি ছবিও যুক্ত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বরিসোভের কাছে রাশিয়া-বেলারুশ যৌথ সামরিক মহড়ায় বেলারুশের এমআই-৩৫ হেলিকপ্টারও অংশ নেয়। শত্রুর ওপর আক্রমণ চালাতে এই হেলিকপ্টার ব্যবহৃত হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫